আসলাম আলী, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ)
বাংলার আধ্যাত্মিক ইতিহাস ও সাহিত্যিক ঐতিহ্যের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা। মহান সুফি সাধক হজরত মখদুম শাহদেলা ইয়ামেনী (র.) ও হজরত শাহ হাবিবুল্লাহর (র.) পুণ্যস্পর্শে ধন্য এই জনপদ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমলিন স্মৃতির কারণে আরো অনন্য হয়ে উঠেছে। এই গৌরবময় জনপদের প্রাণকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলো ছড়াচ্ছে শাহজাদপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
আধুনিক শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্যে এই বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৮৮২ সালে। কলকাতার জোড়াসাঁকোর জমিদার ঠাকুর পরিবার এবং এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ নূরউদ্দিনের দান করা ৩ একর ৬৫ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। তবে এর শিকড় আরো গভীরে। ঊনবিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকে এটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৮৮১ সালে উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি লাভ করে। প্রথমে এই বিদ্যালয়ের নাম ছিল শাহজাদপুর হাই ইংলিশ স্কুল। পরে নাম বদলে করা হয় শাহজাদপুর বহুপার্শ্বিক উচ্চ বিদ্যালয় এবং সর্বশেষ শাহজাদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
দীর্ঘ ১৪৩ বছরের গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে এটি সরকারি সিদ্ধান্তে মডেল বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। এ সময় থেকে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়, যা এ অঞ্চলে নারীশিক্ষার বিস্তারে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়, ফলে এর অবকাঠামো ও শিক্ষা কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়।
শুধু সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রেই নয়, কারিগরি শিক্ষাতেও বিদ্যালয়টি সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার পাশাপাশি ভোকেশনাল কোর্সও চলছে। ১৯৯৭ সালে চালু হওয়া কারিগরি বা ভোকেশনাল শাখায় বর্তমানে ৫টি ট্রেড চালু আছে, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে। এছাড়া ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১ হাজার ১৫১ শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছে। স্থাপত্যের দিক থেকেও বিদ্যালয়টির রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। শুরুতে একটি ‘ই’ আকৃতির দ্বিতল মূল ভবন নির্মাণ করা হয়, যার পেছনে ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ নির্মিত তিন কক্ষবিশিষ্ট দুটি ভবন ছিল। সেসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বর্তমানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে রয়েছে ছয়টি অফিস কক্ষ, ১৩টি শ্রেণিকক্ষ, ছয়টি গবেষণাগার। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৪ জন শিক্ষক ও ছয়জন কর্মচারী কর্মরত আছেন। পাশাপাশি কারিগরি শাখায় রয়েছেন আরো ১৪ শিক্ষক ।
এ প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জুলহাস উদ্দিন বলেন, আমি দেশ-বিদেশের বহু প্রতিষ্ঠানে পড়েছি। এর মধ্যে শাহজাদপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এখনো আমার মনের স্মৃতিকোঠায় একটা বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ১৯৮০ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় আমি এখান থেকে মানবিক শাখা থেকে প্রথম বিভাগে পাস করি। পরে দেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের ইস্টার্ন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিলেও এ বিদ্যালয়েই আমার শিক্ষাজীবনের ভিত্তি গড়ে উঠেছিল।
প্রকৌশলী মো. আব্দুল খালেক বলেন, ১৯৮৪ সালে এ প্রতিষ্ঠান থেকে আমি এসএসসি পরীক্ষায় স্টার মার্কস নিয়ে পাস করি। পরে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (রুয়েট) থেকে ইইই-তে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করি। টেলিযোগাযোগ খাতে বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মাধ্যমে এ দেশকে সেবা দিতে পেরেছি। আমি আমার স্কুল নিয়ে গর্ববোধ করি।
এই বিদ্যালয়ের গৌরবময় অধ্যায়ের অন্যতম উজ্জ্বল মুহূর্ত ১৮৯০ সালের ২০ জানুয়ারি। সেদিন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছিলেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শামিমা নাহার বলেন, দয়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শিক্ষার মানোন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক পাঠদান, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার ল্যাব উন্নয়ন, সহপাঠ কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সক্রিয় অংশগ্রহণে কাজ করছি। ভবিষ্যতে আমরা বিদ্যালয়কে একটি আধুনিক মডেল ইনস্টিটিউট হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যেখানে একাডেমিক উৎকর্ষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, নৈতিকতা, দেশপ্রেম ও কর্মদক্ষতা সমানভাবে বিকশিত হবে। আমার দায়িত্ব শুধু পাঠদান নয়, শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ ও মনোবলও গড়ে তোলা। প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারে—এটাই আমাদের লক্ষ্য।
বাংলার আধ্যাত্মিক ইতিহাস ও সাহিত্যিক ঐতিহ্যের এক অপূর্ব সংমিশ্রণ সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা। মহান সুফি সাধক হজরত মখদুম শাহদেলা ইয়ামেনী (র.) ও হজরত শাহ হাবিবুল্লাহর (র.) পুণ্যস্পর্শে ধন্য এই জনপদ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমলিন স্মৃতির কারণে আরো অনন্য হয়ে উঠেছে। এই গৌরবময় জনপদের প্রাণকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার আলো ছড়াচ্ছে শাহজাদপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
আধুনিক শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার মহৎ উদ্দেশ্যে এই বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় ১৮৮২ সালে। কলকাতার জোড়াসাঁকোর জমিদার ঠাকুর পরিবার এবং এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ নূরউদ্দিনের দান করা ৩ একর ৬৫ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। তবে এর শিকড় আরো গভীরে। ঊনবিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশকে এটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৮৮১ সালে উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি লাভ করে। প্রথমে এই বিদ্যালয়ের নাম ছিল শাহজাদপুর হাই ইংলিশ স্কুল। পরে নাম বদলে করা হয় শাহজাদপুর বহুপার্শ্বিক উচ্চ বিদ্যালয় এবং সর্বশেষ শাহজাদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়।
দীর্ঘ ১৪৩ বছরের গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে এটি সরকারি সিদ্ধান্তে মডেল বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। এ সময় থেকে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়, যা এ অঞ্চলে নারীশিক্ষার বিস্তারে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ২০১৮ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়, ফলে এর অবকাঠামো ও শিক্ষা কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়।
শুধু সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রেই নয়, কারিগরি শিক্ষাতেও বিদ্যালয়টি সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার পাশাপাশি ভোকেশনাল কোর্সও চলছে। ১৯৯৭ সালে চালু হওয়া কারিগরি বা ভোকেশনাল শাখায় বর্তমানে ৫টি ট্রেড চালু আছে, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে। এছাড়া ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১ হাজার ১৫১ শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করছে। স্থাপত্যের দিক থেকেও বিদ্যালয়টির রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। শুরুতে একটি ‘ই’ আকৃতির দ্বিতল মূল ভবন নির্মাণ করা হয়, যার পেছনে ফ্যাসিলিটিজ বিভাগ নির্মিত তিন কক্ষবিশিষ্ট দুটি ভবন ছিল। সেসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বর্তমানে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে রয়েছে ছয়টি অফিস কক্ষ, ১৩টি শ্রেণিকক্ষ, ছয়টি গবেষণাগার। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ১৪ জন শিক্ষক ও ছয়জন কর্মচারী কর্মরত আছেন। পাশাপাশি কারিগরি শাখায় রয়েছেন আরো ১৪ শিক্ষক ।
এ প্রতিষ্ঠানের সাবেক ছাত্র এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক জুলহাস উদ্দিন বলেন, আমি দেশ-বিদেশের বহু প্রতিষ্ঠানে পড়েছি। এর মধ্যে শাহজাদপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এখনো আমার মনের স্মৃতিকোঠায় একটা বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ১৯৮০ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় আমি এখান থেকে মানবিক শাখা থেকে প্রথম বিভাগে পাস করি। পরে দেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের ইস্টার্ন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিলেও এ বিদ্যালয়েই আমার শিক্ষাজীবনের ভিত্তি গড়ে উঠেছিল।
প্রকৌশলী মো. আব্দুল খালেক বলেন, ১৯৮৪ সালে এ প্রতিষ্ঠান থেকে আমি এসএসসি পরীক্ষায় স্টার মার্কস নিয়ে পাস করি। পরে রাজশাহী ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (রুয়েট) থেকে ইইই-তে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করি। টেলিযোগাযোগ খাতে বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মাধ্যমে এ দেশকে সেবা দিতে পেরেছি। আমি আমার স্কুল নিয়ে গর্ববোধ করি।
এই বিদ্যালয়ের গৌরবময় অধ্যায়ের অন্যতম উজ্জ্বল মুহূর্ত ১৮৯০ সালের ২০ জানুয়ারি। সেদিন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছিলেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শামিমা নাহার বলেন, দয়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শিক্ষার মানোন্নয়ন, আধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক পাঠদান, বিজ্ঞান ও কম্পিউটার ল্যাব উন্নয়ন, সহপাঠ কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের সক্রিয় অংশগ্রহণে কাজ করছি। ভবিষ্যতে আমরা বিদ্যালয়কে একটি আধুনিক মডেল ইনস্টিটিউট হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, যেখানে একাডেমিক উৎকর্ষের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, নৈতিকতা, দেশপ্রেম ও কর্মদক্ষতা সমানভাবে বিকশিত হবে। আমার দায়িত্ব শুধু পাঠদান নয়, শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশ ও মনোবলও গড়ে তোলা। প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারে—এটাই আমাদের লক্ষ্য।
মঙ্গলবার রাতে ১২টার দিকে তিনটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার সময় স্থানীয় বাসিন্দারা ধাওয়া করে। এসময় চালসহ একটি অটোরিকশা জব্দ করলেও বাকি দুটি রিকশা দ্রুত গতিতে পালিয়ে যায়।
৭ মিনিট আগেবিএনপি নেতা সামছুল ইসলাম জেলার সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক। ছাড়া পাওয়া দুই আসামি হলেন, সদর উপজেলার লস্করপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান ওরফে রানা (৪০) ও একই কমিটির সদস্য মামুন আহমেদ (৩৮)।
১৮ মিনিট আগেমৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কের জানকিছড়া এলাকায় হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাত গাড়িচাপায় এক কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ (সিপিজি) সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোরে কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
২ ঘণ্টা আগেকুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে প্রবাসীর স্ত্রীকে লাঠিপেটার অভিযোগ পাওয়া গেছে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ইউপি সদস্য বজলুর রহমান শ্রীপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি । এ ঘটনার ২ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে