রংপুর অঞ্চলে আওয়ামী লীগের নাশকতার পরিকল্পনা

কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের এবং তাদের দোসররা ১৩ নভেম্বরকে ঘিরে রংপুর অঞ্চলে নাশকতার পরিকল্পনা করেছে। গত সোমবার দিনব্যাপী ও গতকাল মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ করে সংগঠিত হওয়ার নির্দেশনা দেয় তারা। এছাড়া রোববার রাতে মশাল মিছিল করার তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, গত রোববার রাতে রংপুর সিটি করপোরেশনের হাজির হাট এলাকায় যুবলীগের সভাপতি লক্ষ্মীচন্দ্রের নেতৃত্বে একটি মশাল মিছিল বের করে। এ সময় নেতাকর্মীদের ১৩ নভেম্বর ঢাকা অচলের ঘোষণা দিয়ে এনসিপি, বিএনপি ও জামায়াতসহ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

এছাড়া রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাব্বির, ত্রাণবিষয়ক কমিটির রেজাউল করিম পান্না, যুবলীগ সভাপতি দক্ষিণ চন্দ্র রায়, রাশেক রহমান সমর্থক গোষ্ঠী, দিনাজপুর জেলা যুবলীগ, ইকবালুর রহিম সমর্থক গোষ্ঠী, গাইবান্ধা স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলা এবং ইউনিয়ন ছাত্রলীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ কমিটির সদস্যরা সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে ওই দিন ঢাকা অচল এবং রংপুর অঞ্চলে নাশকতার পরিকল্পনায় বিভিন্ন কমেন্ট করে তাদের নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি জনগণের মনে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছেন।

নিষিদ্ধ সংগঠন রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাব্বির তার ফেসবুকে লেখেন—অবৈধ ঘুসখোর এই মাফিয়া ইউনূস সরকারকে বিদায় করে জনগণের কাছে দেশকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

যুবলীগের সভাপতি লক্ষ্মীচন্দ্র লেখেন—শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সবাইকে একত্রিত হয়ে ঢাকাকে অচল করতে হবে। উইকিলিকস নামে টিকটকে এক ছাত্রলীগ কর্মী বলেন, লগি বৈঠা হাতে ধরো, ঢাকাকে অচল করো।

এছাড়া রংপুরের চার উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ছাত্রলীগ যুবলীগ ও তাদের দোসররা প্রতি রাতে একত্রিত হয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে কৃষক লীগ সভাপতি ভাটিয়া মান্নান, ছাত্রলীগ নেতা রেজাউল করিম, ফুয়াদ আল হাসান, মোদাব্বির হাসান, তুষার মিয়াসহ আওয়ামী লীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ অসংখ্য নেতাকর্মী রয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, আওয়ামী লীগ এখন চোরাগুপ্তাভাবে তাদের অঙ্গ সংগঠন দিয়ে এবং দোসরদের কাজে লাগিয়ে নানা ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত হতে পারে। কিন্তু প্রকাশ্যে তারা আসতে পারবে না। আসলেই আমাদের নেতাকর্মীরা প্রশাসনের সহায়তায় তাদের ধরিয়ে দেবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা কমিটির সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বলেন, বিএনপি প্রার্থীদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট প্রার্থনা করায় নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘুরে বেড়ানোর সাহস পাচ্ছে। এখানে যদি প্রশাসনকে বিএনপি নেতাকর্মীরা সহযোগিতা করত তাহলে আজকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো ধরনের উসকানিমূলক কথাবার্তা পোস্ট করার সাহস পেত না।

এ বিষয়ে রংপুর জেলা পুলিশ সুপার আবু সাইম, মেট্রো পুলিশ কমিশনার আব্দুল মজিদ বলেন, যেকোনো ধরনের নাশকতা বানচাল করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এছাড়া যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্তের বিষয়ে পোস্ট করেছেন সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলায় আওয়ামী লীগের পদধারী কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।