নারী সাংবাদিককে হেনস্তার অভিযোগ এপিপি আরিফের বিরুদ্ধে

রংপুর অফিস
প্রকাশ : ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫৫

রংপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) আতিকুর রহমান আরিফের বিরুদ্ধে নারী নেত্রী ও সাংবাদিককে হেনস্তা ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে।

রোববার (১২ অক্টোবর) বিকাল ৪টার দিকে ১০ তলা ভবনের লিফটে তাকে এই হেনস্তা ও হুমকি প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে সোমবার (১৩ অক্টোবর) রংপুর জেলা আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী, রংপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক আন্দোলনের সমন্বয়ক শরিফা বেগম শিউলী তার অভিযোগে জানান, গত ১২ অক্টোবর ২৫ ইং তারিখে বিকাল ৪টায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কাজে যাওয়ার সময় লিফটে ১০ তলা ভবনে ওঠার জন্য লিফটের ৩ নং বাটন চাপ দিলে লিফটে থাকা মো. আতিকুর রহমান আরিফ (অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, রংপুর) আমাকে লিফট থেকে নেমে যেতে বলেন। এ সময় গোয়েন্দা সংস্থার একজনসহ আরও ৭/৮ জন সাধারণ জনগণ লিফটে উপস্থিত ছিলেন। তখন আমি কেন নেমে যাবো জানতে চাইলে তিনি হঠাৎ করে আমার ওপর রেগে যান এবং বলেন, “লিফটে উঠছেন কেন? আপনি ৪ তলায় যেতে লিফটে ওঠা লাগে?? নামেন হেঁটে হেঁটে যান।”

আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় হেঁটে যেতে পারবো না বলে তাকে জানাই। তবুও অসুস্থতার কথা বললেও তিনি আমাকে রাগান্বিতভাবে লিফট থেকে নেমে যেতে বলেন। এছাড়াও তিনি বলেন, “এটা আইনজীবীদের লিফট” এবং আমাকে লিফট থেকে জোর করে নামানোর চাপ সৃষ্টি করেন।

এ সময় আমি নামতে না চাইলে তিনি আমাকে হুমকি প্রদান করে বলেন, “আপনার কোনো মামলা-মোকদ্দমা হাতে পাইলে খেয়ে ফেলবো এবং আপনাকে শেষ করে দিবো” মর্মে হুমকি প্রদান ও উত্তেজিতভাবে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন।

এমন পরিস্থিতিতে আমি ভীত-সন্ত্রস্ত যে, তিনি (অ্যাড. মো. আতিকুর রহমান আরিফ) আমি’সহ যেকোনো সংবাদকর্মীর মামলা-মোকদ্দমায় ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি করে অপূরণীয় ক্ষতি করতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যম বিরোধী ব্যক্তি হিসাবে আইনজীবীর এমন আচরণ গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য হুমকির কারণ। তিনি এই আরিফের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি এবং এপিপি পদ থেকে তাকে অপসারণপূর্বক মুক্ত গণমাধ্যম ও নিরাপদ গণমাধ্যম কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জোর দাবি জানান।

এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আফতাব উদ্দিন জানান, “তিনি এপিপি হোক বা যেই হোক একজন মহিলার সঙ্গে তো খারাপ ব্যবহার করতে পারেন না। সবার সঙ্গে আমাদের ভালো ব্যবহার করতে হবে। আমি অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টা খতিয়ে দেখবো।”

তিনি আরও বলেন, “বিগত দিনের আইনজীবীরা যেভাবে মানুষদের সঙ্গে আচার-ব্যবহার করে গেছেন, মানুষ তাতে ক্ষিপ্ত। আমরা কাজের মাধ্যমেই আমাদের আইনজীবীদের ভালোবাসা ফিরিয়ে আনতে চাই।”

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, “এ ধরনের আচরণ কারো সাথেই কাম্য নয়। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত