সাঘাটায় দুই নেতাকে অব্যাহতি, বিএনপির আহ্বায়ক-যুগ্ম আহ্বায়ককে শোকজ

উপজেলা প্রতিনিধি, (সাঘাটা) গাইবান্ধা
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৫, ১৩: ৪৭

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার জুমারবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে ঠুনকো অজুহাতে দল থেকে অব্যাহতিপত্র প্রদানের দুদিন পরেই কারণ দর্শানোর পত্র পেলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী মোহাম্মদ আলী ও সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মঈন প্রধান লাবু। এ নিয়ে উপজেলার বিএনপির রাজনীতিতে চলছে তোলপাড়। হাট-বাজার, চায়ের দোকানসহ সর্বত্রই এখন এই আলোচনা।

বিজ্ঞাপন

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী পালনের লক্ষ্যে ২৮ মে উপজেলা বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ইউনিয়ন বিএনপির নেতৃবৃন্দ নিজ নিজ এলাকায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। উপজেলার জুমারবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনেও অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হয়।

এদিকে একই দিনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কসহ কয়েকজন নেতা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাহিদুজ্জামান নিশাদের আয়োজনে একই এলাকার জুমারবাড়িতে একটি মাদ্রাসায় দোয়া ও কাঙালিভোজের আয়োজনে যোগ দেন। জুমারবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আবু তাহের মণ্ডল ও সদস্য সচিব সাজ্জাদুর রহমান বুলবুল নিজেদের ইউনিয়ন বিএনপির কর্মসূচি ছেড়ে উক্ত অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেননি। এমন ঠুনকো অজুহাতে ১২ জুন তাদের দল থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী মোহাম্মদ আলী ও সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মঈম প্রধান লাবু স্বাক্ষরিত অব্যাহতিপত্র তাদের দেয়া হয়। এ চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা গেলে স্থানীয় নেতাকর্মী, সমর্থকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

জুমারবাড়ি ইউনিয়ন বিএনপি'র আহ্বায়ক আবু তাহের মণ্ডল জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি ইউনিয়নের পক্ষ থেকে দোয়া মাহফিল করেছি। অথচ ব্যক্তিগত একটি প্রোগ্রামে গিয়ে একজন নেতার অনুসারী না হওয়ায় আক্রোশমূলক আমাদের অব্যাহতিপত্র দেয়া হয়েছে। যা শুধু আমরা কেন, কেউই মেনে নিচ্ছে না।

মনগড়াভাবে ওই দুই নেতাকে অব্যাহতি প্রদান, জেলা বিএনপিকে এ বিষয়ে আগে অবহিত না করা ও পরামর্শ না নেয়াসহ সুনির্দিষ্ট আরও বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ জুন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী মোহাম্মদ আলী ও সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মঈন প্রধান লাবুকে কারণ দর্শানোর পত্র দেয়া হয়েছে। পত্র প্রাপ্তির ৫ দিনের মধ্যে জবাব প্রদানে ব্যর্থ হলে বিভাগীয় টিমের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মঈন প্রধান লাবু বলেন, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই তড়িঘড়ি ইউনিয়ন বিএনপির দুই নেতাকে অব্যাহতি প্রদান করা সঠিক হয়নি।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী মোহাম্মদ আলী জানান, বিষয়টি আমি ভালোভাবে বুঝে উঠতেই পারিনি। তারা দুজনেই ত্যাগী নেতা। অব্যাহতি প্রদানের বিষয়টি হুট করে হয়েছে। কাজটি ঠিক হয়নি। বিষয়টি সংশোধন করে জেলা নেতৃবৃন্দকে লিখিতভাবে জানানো হবে।

গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মইনুল হাসান সাদিক জানান, তারা উপজেলা বিএনপির দায়িত্বশীল পদে থেকে নিয়ম না মেনে দুই নেতাকে অব্যাহতি প্রদান করতে পারে না। বিএনপি একটি সুশৃঙ্খল দল। নিয়মতান্ত্রিকভাবে গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বাইরে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত