ভারতের পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দী তিস্তাপাড়ের ৪৫০০ পরিবার

উপজেলা প্রতিনিধি, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ০৯

ভারতের পাহাড়ি ঢলে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলায় তিস্তাপাড়ের অন্তত ৪৫০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। উপজেলার কোলকোন্দ, আলমবিদিতর, নোহালী, গঙ্গাচড়া সদর, লক্ষীটারী ও মর্নেয়া ইউনিয়নের বিশশাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

বন্যার পানিতে বাগডোগরা, মিনারবাজার, আনন্দবাজার, বিনবিনা, চর মটুকপুর, চিলাখাল, বাগেরহাট, চর শংকরদহ, কাশিয়াবাড়ী, ইচলি ও চর ছালাপাকসহ নিম্নাঞ্চলের শত শত ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাস্তা ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, রোববার (৫ অক্টোবর) বিকেল থেকে তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং রাত ১১টার দিকে তা বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। সোমবার সকাল ১১টার দিকে তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচে নেমে আসে। যদিও পানি নামতে শুরু করেছে, নদীপাড়ে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

চর শংকরদহের কৃষক আব্দুল হালিম বলেন, রাতারাতি পানি বাড়লো, ঘরবাড়ি ডুবে গেল। এখন পানি নামছে, কিন্তু ভাঙন ধরেছে। আমরা জানি না কাল সকালে বাড়ি থাকবে কি না।

গৃহবধূ রহিমা বেগম জানান, তিনদিন ধরে স্কুলে আশ্রয় আছি। বাচ্চা আর গরুগুলো নিয়ে খুব কষ্টে আছি। ত্রাণ এখনো পাইনি। কোলকোন্দের কৃষক সালাম উদ্দিন বলেন, আমনের ক্ষেত ছিল দেড় একর। সব পানিতে গেছে। গরু খাওয়ানোর ঘাস পর্যন্ত নেই।

উপজেলা ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজিবুল করীম বলেন, প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং তাদের সহায়তা প্রদানের কার্যক্রম শুরু হবে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দিতে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০ হেক্টর আমন ধান, ১ হেক্টর মাসকলাই, ২ হেক্টর বীজবাদাম ও ০.৫ হেক্টর সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রণয়ন চলছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনের তৎপরতা শুরু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্থানীয়রা দ্রুত ত্রাণ ও নদীভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা দাবি করেছেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত