আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

টানা শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত খেটে খাওয়া মানুষ, জনজীবন স্থবির

উপজেলা প্রতিনিধি, তারাগঞ্জ (রংপুর)

টানা শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত খেটে খাওয়া মানুষ,  জনজীবন স্থবির
ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় টানা পাঁচ দিন ধরে চলমান শৈত্যপ্রবাহ, হিম বাতাস ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। হাড়কাঁপানো ঠান্ডা, সূর্যের অনুপস্থিতি আর কুয়াশার সাদা চাদরে ঢাকা প্রকৃতি সব মিলিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এই শীতের তীব্রতায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, অটোরিকশাচালকসহ শ্রমজীবী মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ।

বিজ্ঞাপন

প্রতিদিন ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার কারণে চারপাশ ঝাপসা হয়ে থাকছে। কুয়াশার কারণে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল হয়ে উঠেছে ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে কর্মজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না।

শৈত্যপ্রবাহের সবচেয়ে বড় আঘাত এসে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষের ওপর। কনকনে ঠান্ডায় ভোরবেলায় কাজে বের হওয়া তাদের জন্য হয়ে উঠেছে কষ্টসাধ্য। অনেকেই শীতের তীব্রতার কারণে কাজে যেতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ বাধ্য হয়ে কাজে বের হলেও পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে কাঁপতে কাঁপতে দিন পার করছেন। এতে দৈনিক আয় কমে যাওয়ায় পরিবার পরিচালনা নিয়ে নতুন করে দুশ্চিন্তা বেড়েছে।

শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারাগঞ্জ বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে। পুরোনো সোয়েটার, চাদর ও কম্বল কিনতে ছুটছেন সাধারণ মানুষ তারাগঞ্জ বাজারের একাধিক দোকানদার জানান, গত কয়েক দিনে গরম কাপড়ের চাহিদা অনেক বেড়েছে। তবে দাম শুনেই অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন। টাকার অভাবে প্রয়োজন অনুযায়ী গরম কাপড় কিনতে পারছেন না অসংখ্য দরিদ্র মানুষ।

তারাগঞ্জ বাজারে গরম কাপড় কিনতে আসা দিনমজুর মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী পারভীনা বেগম বলেন, ছেলে-মেয়ে আর বাড়ির বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জন্য গরম কাপড় কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু দামের কারণে শুধু একটা বাচ্চার কাপড় কিনেই ফিরে যাচ্ছি। সবগুলোর জন্য কেনা সম্ভব হচ্ছে না। শীতের বিরূপ প্রভাব পড়েছে শিশু ও বয়স্কদের স্বাস্থ্যের ওপরও।

সন্ধ্যার পর থেকে শীত আরও তীব্র হয়ে ওঠে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কনকনে ঠান্ডায় অনেক অসহায় মানুষ খোলা আকাশের নিচে বা রাস্তার পাশে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করছেন। কোথাও কোথাও দলবেঁধে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে শ্রমজীবী মানুষদের।

উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রহিমাপুরের কৃষ্ণপুর গ্রামের রিকশাভ্যানচালক আলমগীর হোসেন জানান, গত তিন দিন ধরে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে রিকশাভ্যান চালাতে পারছি না। সংসার চালানো খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...