সম্প্রীতির জয়, নিরাপদ ও শান্ত গঙ্গাচড়ার জনপদ

উপজেলা প্রতিনিধি, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৪৪

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ধর্মীয় গুজবের সূত্র ধরে উদ্ভূত উত্তেজনা বর্তমানে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর ত্বরিত ও সমন্বিত পদক্ষেপে এলাকায় শান্তি ও নিরাপদ পরিবেশ বিরাজ করছে।

গুজবের আগুন থেকে একটি এলাকা কীভাবে প্রশাসনের সঠিক পদক্ষেপে রক্ষা পেতে পারে, গঙ্গাচড়ার সাম্প্রতিক ঘটনাই তার বাস্তব উদাহরণ। স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ফলেই ফের ফিরে এসেছে পারস্পরিক বিশ্বাস, সহমর্মিতা এবং সম্প্রীতির পরিবেশ।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার সূত্রপাত হয় গত শনিবার বেতগাড়ি ইউনিয়নে একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে। সেখানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ওঠে এক কিশোরের বিরুদ্ধে। পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।

প্রাথমিকভাবে একটি বাড়িকে ভুল করে ঘটনাস্থল হিসেবে চিহ্নিত করে কিছু উত্তেজিত লোকজন সামান্য ভাঙচুর চালায়। তবে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আগেই তা দমন করে। এরপর সেনাবাহিনীর একটি টহল দলও মাঠে নামে এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

আলদাতপুর ছয়আনি এলাকার বাসিন্দা কোনিকা রানী বলেন, সেই সময় ভয় পাইছিলাম, কিন্তু এখন দেখি পুলিশ-সেনাবাহিনী দুইটাই পাশে আছে। প্রতিদিন খোঁজ নিচ্ছে, এখন শান্তি লাগতেছে।

একই এলাকার আরেক বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ রায় জানান, আগে ভয় ছিল। এখন আর কোনো ভয় নাই। আমরা চাই সবাই মিলে শান্তিতে থাকি, যেমন আগে ছিল।

গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান জানান, গুজবের বিরুদ্ধে আমরা প্রথম থেকেই সতর্ক ছিলাম। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতা ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর উপস্থিতি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, সামাজিক সম্প্রীতি ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করছি। যে কোনো ধরনের গুজব বা উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড রোধে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ইতোমধ্যে যাদের বাড়িঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের আর্থিক সহায়তা এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী— টিন—প্রদান করা হয়েছে। গুজবে কান না দিতে স্থানীয়দের নিয়মিত সচেতন করা হচ্ছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত