আশ্রয়ণের ঘর আছে মানুষ নেই, অসহায়রা খোলা আকাশের নিচে

উপজেলা প্রতিনিধি, গঙ্গাচড়া (রংপুর)
প্রকাশ : ০৪ মে ২০২৫, ২১: ৩৮

রংপুরের গঙ্গাচড়ার চর মটুকপুরে গড়ে তোলা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর ৯১টি। সরকারি কাগজে হয়তো সফলতার গল্প লেখা থাকলেও ৭০টির বেশি ঘরে এখন তালা ঝুলছে। কিছু ঘর কখনোই কোনো মানুষের বসবাস দেখেনি কেউ। অনেকগুলোতেই আশ্রয় নিয়েছে গরু-ছাগল কিংবা বনজ প্রাণী।

পতিত শেখ হাসিনা সরকার গৃহহীনদের নিরাপদ ঘর দেওয়ার জন্য ২০১৪-১৫ এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ঘরগুলো নির্মাণ করেছিল। কিন্তু বছর ঘুরতেই দেখা গেল ঘর আছে, মানুষ নেই। কারণ যাদের ঘর পাওয়ার কথা, তাদের অধিকাংশই আজো ঝুপড়িতে অথবা খোলা আকাশের নিচে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় সব ঘরের মেঝে ফেটে গেছে, ছাউনিতে ফুটো, বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, শৌচাগার অকার্যকর। এমন একটি ঘরে কেউ কীভাবে থাকবে? যারা এসেছিল, তারাও চলে গেছে। এ ছাড়া গঙ্গাচড়া ইউনিয়ন ও বড়বিল ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকগুলোতেও প্রায় একই চিত্র।

সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনোমতে দিন পার করছেন তারা। একজন বলেন, ঘর আছে ঠিকই, কিন্তু এখানে কোনো কাজ নেই। কর্মসংস্থান না থাকায় সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। রাশেদা খাতুন, তিন সন্তানের মা। কাঁপা গলায় বললেন, ঘর তো দূরের কথা, এখন তো ভাতও পাই না।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম বলেন, খাদ্যাভাবের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ছে ব্যারাকের শিশুদের ওপর। ক্লাসে আসছে না, কারণ পেটে কিছু নেই।

ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, এই প্রকল্প আমার সময়ের না, তাই এ বিষয়ে কিছু জানিনা।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল ফেরদৌস উর্মি বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চেষ্টা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, ফাঁকা ঘরগুলো চিহ্নিত করে সঠিকভাবে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। আমরা চাই এই ঘরগুলো প্রকৃত গৃহহীনদের আশ্রয় হয়ে উঠুক।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত