হাওরে উগারভরা বৈশাখী ধান, শনির হাওরে আনন্দ আয়োজন

জেলা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ
প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ১৩: ৪৪

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে শেষ হয়েছে বৈশাখী ধান কাটা। চারদিকে উগারভরা সোনালি ধান। মাঠে এখন আর নেই কৃষাণ-কৃষাণীর কাস্তে চালানোর দৃশ্য— সব ধান ঘরে তুলে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। সেই আমেজকে ঘিরেই আগামী মঙ্গলবার শনির হাওরে আয়োজন করা হয়েছে ‘আনন্দ আয়োজন’।

বিজ্ঞাপন

প্রথমে ছিল পাহাড়ি ঢলের শঙ্কা। এক ঢলেই তলিয়ে যেতে পারত কৃষকের সারা বছরের স্বপ্ন। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার কৃপায় সে আশঙ্কা কাটিয়ে নিরাপদেই তারা ঘরে তুলেছেন ফলন। বৃষ্টির দেখা না মেলায় প্রচণ্ড খরার মধ্যেও পরিশ্রম থেমে থাকেনি। ধারদেনা শোধ হয়েছে, ঈদের বাজারের প্রস্তুতিও চলছে। কেউ করছেন বিয়ের আয়োজন, কেউ বা স্বপ্ন দেখছেন আরও বড় কিছুর।

শনির হাওর দেশের অন্যতম বৃহৎ জলাভূমি। যার ফসল দেশের তিন দিনের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে পারে। সেখানেই বসছে এবারের ‘আনন্দ আয়োজন’। গামছা কাঁধে, কেউ বা নতুন জামা পরে অংশ নেবেন এ আয়োজনে। থাকবে বৈশাখী গল্প, মুক্ত আলোচনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুনাব আলী বলেন, “এই হাওরের কৃষকেরা ভালো ফলন পেয়েছেন। ঘরে অভাব নেই। এক ফসলেই জুটেছে বছরের খাবার। উৎসবের প্রস্তুতি চলছে— ফসলের মাঠেই হবে আয়োজন। বাউলের সুরে মুখরিত হবে হাওর।

জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া আমার দেশকে বলেন, “১৫ থেকে ২১ এপ্রিলের ভারী বর্ষণের শঙ্কায় আমরা কৃষকদের ধান দ্রুত কাটতে বলেছিলাম। সৌভাগ্যবশত কোনো বড় ঢল আসেনি। নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে উঠেছে। এটা মহান আল্লাহর কৃপা। এই খুশি ভাগ করে নিতে আমরা আয়োজন করছি আনন্দ অনুষ্ঠান।”

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১৩৭টি হাওরে এবার ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে ৯৫টি হাওরে ৬৮৭টি পিআইসির মাধ্যমে ব্যয় হয়েছে ১২৮ কোটি টাকা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত