দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ, জড়িত যুবদল-ছাত্রদল নেতাকর্মীরা শনাক্ত

  • যুবদল নেতা জাহিদকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার
  • ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
  • বিক্ষোভে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২৫, ২২: ৫৭

সিলেটের গোয়াইনঘাটের পর্যটনকেন্দ্র জাফলং পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভে জড়িতদের শনাক্ত করা গেছে। বিশৃঙ্খলা তৈরির নেপথ্যে ছিলেন যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। তারা মূলত অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কারবারে জড়িত। ইতোমধ্যে তাদের একজনকে বহিষ্কার করেছে যুবদল। অন্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, ওই বিশৃঙ্খলার অন্যতম হোতা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ খান। তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই তাকে সংগঠন থেকে বের করে দেয় যুবদল। রোববার যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাহিদকে বহিষ্কারের তথ্য জানানো হয়েছে।

দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট জেলা যুবদল সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন বলেন, উপদেষ্টাদের গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় জাহিদকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জাহিদের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলসহ তাকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বহিষ্কৃত জাহিদের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়ভার সংগঠন নেবে না। একইসঙ্গে যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে শনিবার দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বালু-পাথর ব্যবসায়ী-শ্রমিকদের বিক্ষোভে বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল, যুবদল ও শ্রমিক দলের স্থানীয় কয়েকজন নেতাকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়।

আমার দেশ-এর গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি জানান, বিক্ষোভের ঘটনায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে বিএনপির সহযোগী সংগঠনের কয়েকজনকে শনাক্ত করেছেন স্থানীয়রা।

ভিডিওতে দেখা যায়, সদ্য বহিষ্কৃত জাহিদের সঙ্গে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আজিজ উদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি সুমন শিকদার, জেলা ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ, উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল জলিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, সহসভাপতি রমজান মোল্লা, জাফলং ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন যুবদল নেতা ইসলাম উদ্দিন, বল্লাঘাট বালু-চিপ সমবায় সমিতির সভাপতি দেলুয়ার হোসেন দুলু, গিয়াস উদ্দিন, ফয়সল আহমেদ উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করছিলেন। এ তথ্য সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এদিকে সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের যারা উপদেষ্টাদের গাড়িবহর আটকে সরকারি কাজে বাধা দিয়েছেন, তাদের শনাক্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।

সিলেট জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার বলেন, ছাত্রদলের স্থানীয় কয়েকজন নেতা বিক্ষোভে জড়িত ছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানানো হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

অপরদিকে সরকারের দুই প্রভাবশালী উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, হামলার বিষয়ে আরো খোঁজ-খবর নিয়ে জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত