দরজা বন্ধ করে চিকিৎসকের নাস্তা, বাইরে কাঁদছে অসুস্থ শিশু

উপজেলা প্রতিনিধি, ওসমানীনগর (সিলেট)
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৪০

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্বে অবহেলা ও রোগীসেবায় চরম উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে ডা. মাহমুদা আক্তারের বিরুদ্ধে। তিনি নাস্তা শেষ না করা পর্যন্ত রোগী না দেখার ঘোষণা দেন, ফলে এক অসুস্থ শিশুকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হয়।

বিজ্ঞাপন

শিশুর অভিভাবক জানায়, উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের দয়ামীর গ্রামের অস্থায়ী বাসিন্দা রাসেল আহমদ বৃহস্পতিবার সকালে তার অসুস্থ শিশুপুত্র ইয়াছিন আহমদকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। আগের দিন ইপিআই টিকা নেওয়ার পর শিশুটি জ্বর ও সর্দিতে আক্রান্ত হয়। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তারা হাসপাতালে উপস্থিত হলেও কোনো চিকিৎসককে পাওয়া যায়নি।

দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পর ডা. মাহমুদা আক্তার কক্ষে প্রবেশ করেন। অভিভাবক শিশুর অসুস্থতার কথা জানালে তিনি কোনো কথা না বলে কক্ষের দরজা বন্ধ করে নাস্তা খেতে বসেন। অভিভাবকের অনুরোধ উপেক্ষা করে তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, নাস্তা শেষ না করা পর্যন্ত রোগী দেখব না। ফলে জ্বরে কাতর ছোট্ট ইয়াছিনকে নিয়ে বাবা-মাকে আরও এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় কক্ষের বাইরে আরও বেশ কয়েকজন রোগী চিকিৎসার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন কিন্তু চিকিৎসক তাদের সঙ্গেও কোনো কথা বলেননি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি গোপন সূত্র জানায়, এখানকার চিকিৎসকদের উপস্থিতি ও দায়িত্ব পালনে চরম অনিয়ম চলে আসছে। নিয়ম অনুযায়ী সপ্তাহে ছয় দিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও কর্মরত চিকিৎসকগণ পালাক্রমে আসেন। আজ একজন আসেন কাল অন্যজন অনুপস্থিত থাকেন, হাজিরা খাতা যাচাই করলে অনিয়মের প্রমাণ মেলে।

অভিযোগ রয়েছে, ডা. মাহমুদা আক্তার গত ২৪ অক্টোবর ওসমানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দিলেও এখন পর্যন্ত অফিস করেছেন মাত্র একদিন। নির্ধারিত সময়ে অফিসে না আসা ও রোগীর সঙ্গে অশোভন আচরণের কারণে তিনি প্রথম দিনেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. মাহমুদা আক্তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চিকিৎসায় কোনো গাফিলতি করিনি।

অন্যদিকে, সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মো. নাসির উদ্দিন জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ দিকে উপজেলার সচেতন মহলের মনে করেন যেখানে একজন চিকিৎসক মানুষের জীবন বাঁচানোর শপথ নেন, সেখানে নাস্তা শেষ না করে রোগী না দেখা এমন আচরণ শুধু মানবতার প্রতি অবমাননাই নয়, পেশাগত নৈতিকতার নগ্ন উপহাস।

তারা বলেন, যে হাতে ওষুধ থাকার কথা, সে হাতে যদি থাকে চায়ের কাপ তবে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা আর কোথায় থাকে? এ ঘটনায় উপস্থিত রোগী ও স্বজনদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

পানির ট্যাঙ্কিতে লুকিয়েও গ্রে'প্তা’র স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া বিএনপির বহিস্কৃত নেতা

স্ত্রীসহ সাবেক সেনা কর্মকর্তা সেলিম মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

নির্বাচনকে সামনে রেখে হানাহানি বন্ধ করুন: খেলাফত আন্দোলন

সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে বাঁকা করব, ঘি আমাদের লাগবেই: স্মারকলিপি প্রদানের আগে তাহের

আমতলী থানা থেকে জব্দকৃত জাটকা ইলিশ লুট

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত