আয়কর অডিটে নতুন নির্দেশনা এনবিআরের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ২০: ৩৬

আয়করদাতার দাখিলকৃত রির্টানে কোনো ধরনের অসঙ্গতি বা ঝুঁকি চিহ্নিত হলে অডিট বা নিরীক্ষার আওতায় আনবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। নিরীক্ষার আওতায় আসা করদাতার বেতনভিত্তিক আয়, ব্যাংক হিসাবের জমা, ভাড়া আয়, কৃষি আয়, রেমিট্যান্স, বিনিয়োগ আয় ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের খুঁটিনাটি যাচাই করা হবে। আয়ের সঙ্গে সম্পদ ও ব্যয়ের সংগতি আছে কিনা, তা বিশেষভাবে দেখা হবে।

আয়কর রিটার্ন অডিটে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে এনবিআর। ‘আয়কর রিটার্ন অডিট নির্দেশনা, ২০২৫’ শিরোনামে জারি করা এই গাইডলাইনে করদাতাদের রিটার্ন যাচাই-বাছাই থেকে শুরু করে অডিট পরিচালনা, প্রতিবেদন প্রস্তুত ও নিষ্পত্তির প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার এনবিআরের ওয়েবসাইটে অডিট নির্দেশনাটি প্রকাশ করা হয়েছে।

অডিটেরে উদ্দেশ্য হিসাবে বলা হয়েছে, কর ফাঁকি প্রতিরোধ, কর সংস্কৃতি উন্নয়ন এবং কর আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ।

প্রসঙ্গত, আয়করদাতা স্বনির্ধারিত পদ্ধতিতে আয়কর রিটার্ন দাখিল করে থাকেন। দাখিলকৃত রিটার্নের তথ্যের সঠিকতা যাচাই করতে অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে এনবিআর।

অডিটের জন্য নির্বাচন

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অডিটের জন্য রিটার্ন বাছাই হবে ঝুঁকিভিত্তিক পদ্ধতিতে। এ জন্য একটি অটোমেটেড সিস্টেম ব্যবহার করা হবে—যাতে মানবীয় হস্তক্ষেপ কম থাকে। তবে কাগজে দাখিল করা রিটার্নের ক্ষেত্রে আপাতত র‌্যান্ডম বাছাই চালু থাকবে। কোম্পানি ও অন্যান্য করদাতার রিটার্ন আলাদাভাবে যাচাই করে বোর্ডের অনুমোদনের ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে প্রসেসকৃত রিটার্ন বা নতুন করদাতার প্রথম রিটার্ন অডিটে আনা হবে না—যদি না তাতে স্পষ্ট রাজস্ব ক্ষতি দেখা যায়। একই করদাতাকে টানা তিন বছর অডিটে না আনার বিধান রাখা হয়েছে। তবে লোকসান, শূন্য আয় বা অস্বাভাবিকভাবে কম আয় দেখালে রিটার্ন অডিটে নেওয়া যাবে। এ ছাড়া আগে যাদের কখনও অডিট হয়নি— সেই রিটার্ন থেকে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ বাছাই করার কথা বলা হয়েছে।

অডিটের ধাপ

রিটার্ন নির্বাচনের পর করদাতাকে ৩০ দিনের মধ্যে নোটিশ দেওয়া হবে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক হলে অডিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে। অন্যথায়, কর পরিদর্শক মাঠ পর্যায়ে তদন্ত করে প্রমাণ সংগ্রহ করবেন এবং সংশ্লিষ্ট কর অঞ্চলকে প্রতিবেদন দেবেন। করদাতা প্রয়োজনে সংশোধিত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। তিনি তা করলে অডিট নিষ্পত্তি হবে, আর না করলে আইন অনুযায়ী কর নির্ধারণ করা হবে। অগ্রগতির মাসিক প্রতিবেদন বোর্ডে পাঠানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

কোম্পানি করদাতাদের ক্ষেত্রে

কোম্পানির ক্ষেত্রে নিরীক্ষিত হিসাব জমা বাধ্যতামূলক। টার্নওভার ও ব্যাংক জমার সঙ্গে ব্যয় মিলে কিনা, অপ্রাসঙ্গিক খরচ দেখানো হয়েছে কিনা, উৎসে কর যথাযথভাবে কাটা হয়েছে কিনা—এসব বিষয় খুঁটিয়ে দেখা হবে। এ ছাড়া নতুন ঋণ বা দেনা যথাযথভাবে প্রদর্শিত হয়েছে কিনা এবং আয়কর আইনের প্রাসঙ্গিক ধারা অনুসরণ করা হয়েছে কিনা, সেটিও অডিটের আওতায় আসবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত