ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী: ডিসিসিআই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫: ৩২
আপডেট : ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫: ৪৫

সম্প্রতি শতাধিক পণ্যের ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ী মহলই নয়, দেশের অর্থনীতিবিদরাও বিস্মিত। অংশীজনদের সঙ্গে কোনো আলাপ না করে এটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী হয়েছে। দেশের মানি মার্কেটে সংকট, ব্যাংকিং খাতে অস্বস্তি চলছে, এর ওপর ডলারের মূল্য বাড়ছে-সবকিছুর পরও এরকম একটি সিদ্ধান্ত বছরের মাঝামাঝি করা হয়, কিভাবে মূল্যস্ফীতি কমবে সেটি বোধগম্য নয়।

বিজ্ঞাপন

শনিবার ঢাকা চেম্বার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংগঠনটির নতুন সভাপতি তাসকিন আহমেদ। দেশের সমসাময়িক অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি এবং ২০২৫ সালে ডিসিসিআইর বর্ষব্যাপি কর্ম-পরিকল্পনা সম্পর্কে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

ভ্যাটের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্তে দেশের অর্থনীতির গতি কমে যাবে উল্লেখ করে তাসকিন আহমেদ বলেন,এটি খুব দ্রুতই মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব ফেলবে। দেশের জনগণের ওপর এটির একটি বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। আমরা এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে মোটেও একমত নই। এটি বেসরকারি খাতের ওপর পড়লে এটি আত্মঘাতী হবে। এটি শুধু ভ্যাট-ট্যাক্সই নয়, একদিকে সুদের হার বেড়ে গেছে, মুদ্রাবাজার অস্থির, এছাড়া করের হার বাড়িয়ে দিলে শুধু বিদেশি বিনিয়োগকারীই নয়, স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এর ফলে দেশের অর্থনীতি ধীর হয়ে যাবে, এর পুরো খরচা ভোক্তাদের ওপর পড়বে।

সময় সরকারের খরচে কমানোর পরামর্শ দিয়ে চেম্বারের নতুন এ সভাপতি বলেন, সরকারি ব্যয় যদি ২০ শতাংশ কমানো হয় তাহলে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেঁচে যায়। তখন হুট করে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয় না।

ডিসিসিআই বলছে, সিএমএসএমই খাতে ৯০ শতাংশ বিনিয়োগ আসে বেসরকারি ব্যাংক থেকে। তবে এখাতের উদ্যোক্তারা উচ্চ সুদহার, বাজারের সঠিক তথ্যের অভাব ও প্রযুক্তিগত সহায়তার অভাবে বিনিয়োগ পাচ্ছে না। তাদেরকে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করতে চায় না।

তাসকিন আহমেদ বলেন, আমরা বিভিন্ন প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানতে পেরেছি দেশের অনেক টাকা লুট হয়েছে। এর মাধ্যমে এসএমই চাপে পড়েছে। আর বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে হলে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক হওয়া প্রয়োজন- এজন্য সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।

হঠাৎ গ্যাসের দাম ১৫০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ সুপারিশে আমরা উদ্বিগ্ন। আমাদের হাতে কোনো ম্যাজিক নেই যে আমরা এটি দিয়ে চলতে পারবো। এর আগে ৪০০ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়ানোয় হুমকির মুখে পড়েছে এ খাত। তাছাড়া চাহিদার ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে, এদিয়েই আমাদের চলতে কষ্ট হচ্ছে।

বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের নীতি সহায়ক নয় উল্লেখ করে ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, এ পর্যন্ত এফডিআই যা এসেছে তার চেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছেন দেশীয় বিনিয়োগকারীরা।

এফডিআই আসার ক্ষেত্রে আরও কিছু জটিলতার কথা তুলে ধরেন তাসকিন আহমেদ। তিনি বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিডা, বেজা, বেপজা, বিএসসিআইসি একেকটি প্রতিষ্ঠান একেক জটিলতা তৈরী করেছে। ২৯টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১৪১টি ভিন্ন ভিন্ন অনুমোদন লাগে। এগুলো জটিলতা আরও বাড়িয়েছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত