এবার রবি ও বাংলালিংক পাচ্ছে ডিজিটাল ওয়ালেট

রোহান রাজিব
প্রকাশ : ২৩ জুন ২০২৫, ১০: ০৬

ডিজিটাল বা ই-ওয়ালেট সেবা নিয়ে আসছে রবি ও বাংলালিংক। ইতোমধ্যে রবি ‘স্মার্ট পে’ ও বাংলালিংক ‘নিউ পিএসপি’ নামে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছে। আগামী জুলাই মাসে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠান দুটি গত ডিসেম্বর ডিজিটাল ওয়ালেট পেতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন জমা দেয়। এজন্য তারা আলাদা কোম্পানি গঠন করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও জমা দিয়েছে, বর্তমানে পর্যালোচনা চলছে। শিগগিরই তাদের প্রাথমিকভাবে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এনওসির শর্ত পূরণ করলেই পূর্ণাঙ্গ লাইসেন্স পাওয়া যাবে।

বিজ্ঞাপন

রবি ও বাংলালিংকের কর্মকর্তারা জানান, গতানুগতিক পদ্ধতির পাশাপাশি আমরা ভিন্নতা নিয়ে আসার চেষ্টা করব। যাতে মানুষের কাছে সহজে ডিজিটাল সেবা পৌঁছে যেতে পারে। এ সেবার মাধ্যমে ক্যাশলেস ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে।

এসব প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা নিয়ে আসার পর চাইলে বিকাশ ও নগদের মতো এজেন্ট বসাতে পারবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আমার দেশকে বলেন, রবি ও বাংলালিংক আবেদন করেছে। কাগজপত্র ঠিক থাকলে শিগগিরই তারা অনুমোদন পাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের শর্ত

ডিজিটাল ওয়ালেট এনওসি পাওয়ার পর চূড়ান্ত লাইসেন্স পেতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে- প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিশোধিত মূলধন ২০ কোটি টাকায় উন্নীত করে তা বজায় রাখতে হবে। প্রস্তাবিত ডিজিটাল ওয়ালেট প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশের তফসিলি ব্যাংকগুলোর জন্য আইসিটি নিরাপত্তা মানদণ্ড মেনে চলতে হবে। এ ছাড়া এটি অবশ্যই সফটওয়্যারের গুণমান ও দুর্বলতা মূল্যায়ন শেষ করতে হবে। ডেটা ব্যাকআপ ধরে রাখার নীতিগুলো প্রয়োগ করতে হবে।

আ.লীগ আমলে যোগ্যতা থাকলেও অনেকে পায়নি

সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যারা তাদের মতাদর্শের ছিল না তাদের পিএসপি লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। তার বড় উদাহরণ গ্রামীণ টেলিকম। এই প্রতিষ্ঠান ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর পিএসপি লাইসেন্সের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রথম আবেদন করে সমাধান। প্রতিষ্ঠানটি এনওসি পাওয়ার শর্ত পূরণ করলেও বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত দেরি করে। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এনওসি মঞ্জুর করে।

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের দাবি- ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিশেষ করে সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত করেছিলেন। গ্রামীণ টেলিকম ও এর প্রতিষ্ঠাতা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিলম্ব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।

গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করেন আব্দুর রউফ তালুকদার। গ্রামীণ টেলিকমের আবেদনটি প্রাথমিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ পর্যালোচনা করে দেখেছে যে প্রক্রিয়াটি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানটি প্রয়োজনীয় নথি দিয়েছে। সে হিসাবে আবেদনটি শেষ পর্যন্ত ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন গভর্নর রউফের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু সে সময় তা অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। বর্তমানে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়া আইপে সিস্টেমস, ডি মানি বাংলাদেশ ও রিকারশন ফিনটেক, সমাধানসহ ৯টি পিএসপি আছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত