• facebook
  • fb_group
  • twitter
  • tiktok
  • whatsapp
  • pinterest
  • youtube
  • linkedin
  • instagram
  • google
বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
সর্বশেষ
জাতীয়
রাজনীতি
বাণিজ্য
সারা দেশ
বিশ্ব
খেলা
আইন-আদালত
ধর্ম ও ইসলাম
বিনোদন
ফিচার
আমার দেশ পরিবার
ইপেপার
আমার দেশযোগাযোগশর্তাবলি ও নীতিমালাগোপনীয়তা নীতিডিএমসিএ
facebookfb_grouptwittertiktokwhatsapppinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
স্বত্ব: ©️ আমার দেশ | সম্পাদক ও প্রকাশক, মাহমুদুর রহমান 
মাহমুদুর রহমান কর্তৃক ঢাকা ট্রেড সেন্টার (৮ম ফ্লোর), ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫ থেকে প্রকাশিত এবং আমার দেশ পাবলিকেশন লিমিটেড প্রেস, ৪৪৬/সি ও ৪৪৬/ডি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগ: ঢাকা ট্রেড সেন্টার, ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।ফোন: ০২-৫৫০১২২৫০। ই-মেইল: info@dailyamardesh.comবার্তা: ফোন: ০৯৬৬৬-৭৪৭৪০০। ই-মেইল: news@dailyamardesh.comবিজ্ঞাপন: ফোন: +৮৮০-১৭১৫-০২৫৪৩৪ । ই-মেইল: ad@dailyamardesh.comসার্কুলেশন: ফোন: +৮৮০-০১৮১৯-৮৭৮৬৮৭ । ই-মেইল: circulation@dailyamardesh.com
ওয়েব মেইল
কনভার্টারআর্কাইভবিজ্ঞাপনসাইটম্যাপ
> বাণিজ্য

পোশাক খাতে দুরবস্থা, রপ্তানি আয়ে ভাটা

সোহেল রহমান
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৫
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫৪
logo
পোশাক খাতে দুরবস্থা, রপ্তানি আয়ে ভাটা

সোহেল রহমান

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৫
ছবি: সংগৃহীত

দেশে সামগ্রিক অর্থনীতির ধীরগতির মধ্যে কিছুটা আশাব্যঞ্জক ছিল রপ্তানি প্রবৃদ্ধি। কিন্তু ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এসে ভাটা পড়েছে রপ্তানি আয়ে। চলতি অর্থবছরের আগস্ট থেকে টানা তিন মাস রপ্তানি আয় কমেছে। সর্বশেষ অক্টোবর মাসে রপ্তানি আয় কমেছে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানায়, সামগ্রিক আয় কমার অন্যতম কারণ দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের দুরবস্থা। এই খাতে রপ্তানি আয় কমার হার আরো বেশি। এই সময়ে আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি ক্রেতাদের অর্ডারও কমছে।

ইপিবির সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবরে ৩৮২ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমেছিল ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং আগস্টে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম মাসে ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও চার মাস শেষে (জুলাই–অক্টোবর) মোট প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে মাত্র ২ দশমিক ২২ শতাংশে।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, সামগ্রিক আয় কমার অন্যতম কারণ দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের দুরবস্থা। অক্টোবরে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলার, আগের বছরের একই মাসে ছিল ৩৩০ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম। একই সময়ে রপ্তানি আদেশ কমেছে আগের মাসের চেয়ে ২০ শতাংশ। রপ্তানি আদেশ কম এসেছে চার হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা।

ইপিবির পরিসংখ্যানে আরো উল্লেখ করা হয়, আগস্টে রপ্তানি কম হয় আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ১১ কোটি ডলার। রপ্তানির পরিমাণ নেমে আসে ৩৯২ কোটি ডলারে, যা আগের বছরের আগস্টে ছিল ৪০৩ কোটি ডলারেরও বেশি। পোশাকের রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ৩১৭ কোটি ডলারে, যা গত বছরের আগস্টে ছিল ৩৩৩ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে রপ্তানির পরিমাণ নেমে আসে ৩৬৩ কোটি ডলারে, যা গত সেপ্টেম্বরে ছিল ৩৮০ কোটি ডলারেরও বেশি। পোশাকের রপ্তানি ১৭ কোটি ডলার কমে পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮৪ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই মাসে ছিল ৩০১ কোটি ডলার।

দেড় বছরেও জানা যায়নি সেই ১১৪ লাশের পরিচয়দেড় বছরেও জানা যায়নি সেই ১১৪ লাশের পরিচয়

চামড়া ও প্রকৌশল খাতে ইতিবাচক ধারা

তৈরি পোশাক খাতের তুলনায় অন্যান্য খাতে প্রবৃদ্ধির হার তুলনামূলক বেশি। ইপিবির তথ্যমতে, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে জুলাই-অক্টোবরে আয় হয়েছে ৪১৪ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের ৩৭২ মিলিয়নের তুলনায় ১১ দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি।

প্রকৌশলজাত পণ্যেও বৃদ্ধি দেখা গেছে। চার মাসে এই খাতে আয় হয়েছে ২২০ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের ১৬৩ মিলিয়নের চেয়ে ৩৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। ইলেকট্রিক্যাল উপকরণ, স্টিল পণ্য ও মোটরযান পার্টসের রপ্তানিই মূলত এই প্রবৃদ্ধির চালক।

জুট, হোমটেক্সটাইল ও কৃষিপণ্যে মিশ্র ফল

প্রচলিত পাট ও পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। চার মাসে আয় হয়েছে ২৭৭ মিলিয়ন ডলার, আগের বছর যা ছিল ২৬৫ মিলিয়ন। গৃহস্থালি বস্ত্র খাতে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। হোমটেক্সটাইল রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৯ মিলিয়ন ডলারে, প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অন্যদিকে কৃষিপণ্য খাতে আয় কমেছে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩৭৯ মিলিয়ন ডলার, আগের বছর ছিল ৩৮৫ মিলিয়ন। রপ্তানিকারকদের মতে, ভারত ও ভিয়েতনামের প্রতিযোগিতা এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধিই এই পতনের জন্য মূল দায়ী।

বিশ্ববাজারে চাপ এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যাও বড় কারণ

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ বলছে, বৈশ্বিক বাণিজ্য ২০২৫ সালে আগের বছরের তুলনায় মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ হারে বাড়বে—যা ২০২০-এর পর সর্বনিম্ন। ইউরোপ ও আমেরিকার বড় বাজারে খুচরা বিক্রি কমে যাওয়া বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের চাহিদায় সরাসরি প্রভাব ফেলছে।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান গত সোমবার সফররত জাতিসংঘ মিশনের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, তৈরি পোশাকশিল্প একের পর এক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে গ্যাসের দাম বেড়েছে ২৮৬ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে শিল্প ও ক্যাপটিভ খাতে আবারও ৪০ ও ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ হারে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে, যা উৎপাদন সক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। তিনি জানান, খেলাপি ঋণের হার ২৭ শতাংশে পৌঁছেছে এবং ব্যাংক সুদের হার ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন বিনিয়োগে অনীহা বাড়ছে।

এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আমার দেশকে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে পোশাকের রপ্তানি কমে যাওয়ার প্রধান কারণ চীন ও ভারতের আগ্রাসী রপ্তানি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অনেক বেশি শুল্কের কারণে তারা কম দামে ইইউতে রপ্তানি করছে। এ কারণে সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি কমছে।

ইএবি সভাপতি জানান, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ট্যারিফের বর্ধিত অংশ আমাদের ব্যবসায়ীদের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছে। এতে সম্মত হতে না পারায় বাল্ক অর্ডারগুলো আমেরিকার বাজার থেকে আসছে না।

তিনি বলেন, সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এখনো স্থিতিশীলতা আসেনি। বাড়তি শুল্ক আদায়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের দর বেড়েছে। তাদের চাহিদা কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশের মতো।

তিনি আরো বলেন, ব্যাংক লুটপাট, উচ্চ সুদহারসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে বাংলাদেশের শিল্পখাত বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। এর মধ্যে কিছু কাস্টমস কর্মকর্তা আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে রপ্তানিকারকদের ভোগান্তিতে ফেলার চেষ্টা করেন।

ভারতকে খুশি করতে বারবার অস্ত্র উদ্ধার নাটক হাসিনারভারতকে খুশি করতে বারবার অস্ত্র উদ্ধার নাটক হাসিনার

অক্টোবরের ধাক্কা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা

রপ্তানি বাংলাদেশের বৈদেশিক আয়ের প্রধান উৎস। ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসের চিত্রে সামান্য ইতিবাচক প্রবণতা থাকলেও অক্টোবরের পতন ভবিষ্যতের ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়। কৃষিপণ্যে সংকোচন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে পোশাক খাতের অর্ডার কমে যাওয়ায় এই ধাক্কা আসে।

বিশ্লেষকদের মতে, চলতি অর্থবছরের বাকি আট মাসে বিশ্ববাজারে যদি পুনরুদ্ধার না ঘটে, তাহলে বার্ষিক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে। সরকারের নির্ধারিত ৬৩ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা এখন অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মুখে।

তবু চামড়া, প্রকৌশল ও হোমটেক্সটাইল খাতে আশার আলো রয়েছে। নীতিনির্ধারকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ কমানো, রপ্তানির বৈচিত্র্য বাড়ানো ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ালে আগামী বছরের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধার সম্ভব হতে পারে।

সম্পাদক ও প্রকাশক : মাহমুদুর রহমান কর্তৃক প্রকাশিত এবং আল-ফালাহ প্রিন্টিং প্রেস, ৪২৩, এলিফেন্ট রোড, বড় মগবাজার, ঢাকা-১২১৭ থেকে এবং অস্থায়ীভাবে মিডিয়া প্রিন্টার্স লি. ৪৪৬/এইচ, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত। বার্তা, সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগ : ঢাকা ট্রেড সেন্টার, ৯৯, কাজী নজরুল ইসলাম এভিণিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। পিএবিএক্স : ০২-৫৫০১২২৫০। ই-মেইল : info@dailyamardesh.com
ছবি: সংগৃহীত

দেশে সামগ্রিক অর্থনীতির ধীরগতির মধ্যে কিছুটা আশাব্যঞ্জক ছিল রপ্তানি প্রবৃদ্ধি। কিন্তু ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এসে ভাটা পড়েছে রপ্তানি আয়ে। চলতি অর্থবছরের আগস্ট থেকে টানা তিন মাস রপ্তানি আয় কমেছে। সর্বশেষ অক্টোবর মাসে রপ্তানি আয় কমেছে ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানায়, সামগ্রিক আয় কমার অন্যতম কারণ দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের দুরবস্থা। এই খাতে রপ্তানি আয় কমার হার আরো বেশি। এই সময়ে আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি ক্রেতাদের অর্ডারও কমছে।

ইপিবির সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের অক্টোবরে ৩৮২ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ কম। সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কমেছিল ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ এবং আগস্টে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থবছরের প্রথম মাসে ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও চার মাস শেষে (জুলাই–অক্টোবর) মোট প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে মাত্র ২ দশমিক ২২ শতাংশে।

বিজ্ঞাপন

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, সামগ্রিক আয় কমার অন্যতম কারণ দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকের দুরবস্থা। অক্টোবরে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩০২ কোটি ডলার, আগের বছরের একই মাসে ছিল ৩৩০ কোটি ডলার। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম। একই সময়ে রপ্তানি আদেশ কমেছে আগের মাসের চেয়ে ২০ শতাংশ। রপ্তানি আদেশ কম এসেছে চার হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা।

ইপিবির পরিসংখ্যানে আরো উল্লেখ করা হয়, আগস্টে রপ্তানি কম হয় আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ১১ কোটি ডলার। রপ্তানির পরিমাণ নেমে আসে ৩৯২ কোটি ডলারে, যা আগের বছরের আগস্টে ছিল ৪০৩ কোটি ডলারেরও বেশি। পোশাকের রপ্তানি কমে দাঁড়ায় ৩১৭ কোটি ডলারে, যা গত বছরের আগস্টে ছিল ৩৩৩ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে রপ্তানির পরিমাণ নেমে আসে ৩৬৩ কোটি ডলারে, যা গত সেপ্টেম্বরে ছিল ৩৮০ কোটি ডলারেরও বেশি। পোশাকের রপ্তানি ১৭ কোটি ডলার কমে পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮৪ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই মাসে ছিল ৩০১ কোটি ডলার।

দেড় বছরেও জানা যায়নি সেই ১১৪ লাশের পরিচয়দেড় বছরেও জানা যায়নি সেই ১১৪ লাশের পরিচয়

চামড়া ও প্রকৌশল খাতে ইতিবাচক ধারা

তৈরি পোশাক খাতের তুলনায় অন্যান্য খাতে প্রবৃদ্ধির হার তুলনামূলক বেশি। ইপিবির তথ্যমতে, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে জুলাই-অক্টোবরে আয় হয়েছে ৪১৪ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের ৩৭২ মিলিয়নের তুলনায় ১১ দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি।

প্রকৌশলজাত পণ্যেও বৃদ্ধি দেখা গেছে। চার মাসে এই খাতে আয় হয়েছে ২২০ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের ১৬৩ মিলিয়নের চেয়ে ৩৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। ইলেকট্রিক্যাল উপকরণ, স্টিল পণ্য ও মোটরযান পার্টসের রপ্তানিই মূলত এই প্রবৃদ্ধির চালক।

জুট, হোমটেক্সটাইল ও কৃষিপণ্যে মিশ্র ফল

প্রচলিত পাট ও পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। চার মাসে আয় হয়েছে ২৭৭ মিলিয়ন ডলার, আগের বছর যা ছিল ২৬৫ মিলিয়ন। গৃহস্থালি বস্ত্র খাতে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। হোমটেক্সটাইল রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭৯ মিলিয়ন ডলারে, প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অন্যদিকে কৃষিপণ্য খাতে আয় কমেছে ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে ৩৭৯ মিলিয়ন ডলার, আগের বছর ছিল ৩৮৫ মিলিয়ন। রপ্তানিকারকদের মতে, ভারত ও ভিয়েতনামের প্রতিযোগিতা এবং পরিবহন খরচ বৃদ্ধিই এই পতনের জন্য মূল দায়ী।

বিশ্ববাজারে চাপ এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যাও বড় কারণ

বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ বলছে, বৈশ্বিক বাণিজ্য ২০২৫ সালে আগের বছরের তুলনায় মাত্র ১ দশমিক ৯ শতাংশ হারে বাড়বে—যা ২০২০-এর পর সর্বনিম্ন। ইউরোপ ও আমেরিকার বড় বাজারে খুচরা বিক্রি কমে যাওয়া বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের চাহিদায় সরাসরি প্রভাব ফেলছে।

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান গত সোমবার সফররত জাতিসংঘ মিশনের সঙ্গে বৈঠকে বলেন, তৈরি পোশাকশিল্প একের পর এক প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছে। ২০১৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে গ্যাসের দাম বেড়েছে ২৮৬ শতাংশ। চলতি বছরের এপ্রিলে শিল্প ও ক্যাপটিভ খাতে আবারও ৪০ ও ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ হারে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে, যা উৎপাদন সক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। তিনি জানান, খেলাপি ঋণের হার ২৭ শতাংশে পৌঁছেছে এবং ব্যাংক সুদের হার ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন বিনিয়োগে অনীহা বাড়ছে।

এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আমার দেশকে বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে পোশাকের রপ্তানি কমে যাওয়ার প্রধান কারণ চীন ও ভারতের আগ্রাসী রপ্তানি। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অনেক বেশি শুল্কের কারণে তারা কম দামে ইইউতে রপ্তানি করছে। এ কারণে সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি কমছে।

ইএবি সভাপতি জানান, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ট্যারিফের বর্ধিত অংশ আমাদের ব্যবসায়ীদের উপর চাপিয়ে দিতে চাইছে। এতে সম্মত হতে না পারায় বাল্ক অর্ডারগুলো আমেরিকার বাজার থেকে আসছে না।

তিনি বলেন, সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এখনো স্থিতিশীলতা আসেনি। বাড়তি শুল্ক আদায়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের দর বেড়েছে। তাদের চাহিদা কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশের মতো।

তিনি আরো বলেন, ব্যাংক লুটপাট, উচ্চ সুদহারসহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে বাংলাদেশের শিল্পখাত বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। এর মধ্যে কিছু কাস্টমস কর্মকর্তা আইনের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে রপ্তানিকারকদের ভোগান্তিতে ফেলার চেষ্টা করেন।

ভারতকে খুশি করতে বারবার অস্ত্র উদ্ধার নাটক হাসিনারভারতকে খুশি করতে বারবার অস্ত্র উদ্ধার নাটক হাসিনার

অক্টোবরের ধাক্কা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা

রপ্তানি বাংলাদেশের বৈদেশিক আয়ের প্রধান উৎস। ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম চার মাসের চিত্রে সামান্য ইতিবাচক প্রবণতা থাকলেও অক্টোবরের পতন ভবিষ্যতের ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়। কৃষিপণ্যে সংকোচন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে পোশাক খাতের অর্ডার কমে যাওয়ায় এই ধাক্কা আসে।

বিশ্লেষকদের মতে, চলতি অর্থবছরের বাকি আট মাসে বিশ্ববাজারে যদি পুনরুদ্ধার না ঘটে, তাহলে বার্ষিক রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে। সরকারের নির্ধারিত ৬৩ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা এখন অনেকটাই চ্যালেঞ্জের মুখে।

তবু চামড়া, প্রকৌশল ও হোমটেক্সটাইল খাতে আশার আলো রয়েছে। নীতিনির্ধারকরা বলছেন, উৎপাদন খরচ কমানো, রপ্তানির বৈচিত্র্য বাড়ানো ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ালে আগামী বছরের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধার সম্ভব হতে পারে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

পোশাক খাতঅর্থনীতিআমার দেশ
সর্বশেষ
১

খেলোয়াড়রা সহযোগিতা না করলে নিরপেক্ষতা হারাবে কমিশন

২

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গভীর রাতে রেললাইনে আগুন

৩

পাকিস্তানে সংবিধানের সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে আদালতে পিটিশন

৪

মিন্টু ও মানিকের জমজমাট লড়াইয়ের আভাস

৫

বড় জয়ে সিরিজ নিউজিল্যান্ডের

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত

কৃষকের ঘরে উঠছে নতুন পেঁয়াজ, আমদানি হলে আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাজদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ইমরান হোসেন এবার আগাম জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ করেছিলেন ২০ কাঠা জমিতে। বৃষ্টির কারণে নষ্ট হয়ে গেছে অর্ধেক ফসল। বাকি ১০ কাঠায় ফলন হয়েছে ২০ মণের মতো। নিজের ও স্বজনদের জন্য দুই মণ রেখে বাকি পেঁয়াজ সপ্তাহ দেড়েক আগেই ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে

১ ঘণ্টা আগে

রমজানে বাকিতে আমদানি করা যাবে যেসব পণ্য

সার্কুলারে বলা হয়েছে, আসন্ন রমজানে পণ্যমূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা এবং সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাকিতে এসব পণ্য আমদানির সুযোগ দেওয়া হলো। এর ফলে বিদেশি সরবরাহকারীর কাছে ওই সময় পর্যন্ত বাকিতে পণ্য আমদানি করা যাবে। এ বিষয়ে পূর্বের অন্যান্য নির্দেশনা বহাল থাকবে।

১৩ ঘণ্টা আগে

মার্কিন শাটডাউন অবসানের ইঙ্গিতে চাঙ্গা এশিয়ার বাজার

ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি জানায়, জাপান বাদে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের শেয়ারগুলোর সূচক এমএসসিআই ০ দশমিক চার শতাংশ বেড়েছে। এমন সময়ে বাড়ছে যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ সরকারি সংস্থাগুলোর অর্থায়ন পুনর্বহাল করার বিষয়ে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অক্টোবরে শুরু হওয়া এই শাটডাউন দেশটির ইতিহাসে দীর্ঘতম।

১৬ ঘণ্টা আগে

ব্র্যাক ব্যাংকের দ্বিতীয় ‘এমপাওয়ারঅ্যাবিলিটি ২০২৫’, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার

ডিসঅ্যাবিলিটি-ইনক্লুসিভ (প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তিমূলক) বাংলাদেশ রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যান্ড ডিসঅ্যাবিলিটি নেটওয়ার্ক (বিবিডিএন)-এর সহযোগিতায় ‘এমপাওয়ারঅ্যাবিলিটি ২০২৫: পাওয়ারিং এভরি অ্যাবিলিটি’ সম্মেলন আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।

১৬ ঘণ্টা আগে
কৃষকের ঘরে উঠছে নতুন পেঁয়াজ, আমদানি হলে আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা

কৃষকের ঘরে উঠছে নতুন পেঁয়াজ, আমদানি হলে আর্থিক ক্ষতির শঙ্কা

পোশাক খাতে দুরবস্থা, রপ্তানি আয়ে ভাটা

পোশাক খাতে দুরবস্থা, রপ্তানি আয়ে ভাটা

রমজানে বাকিতে আমদানি করা যাবে যেসব পণ্য

রমজানে বাকিতে আমদানি করা যাবে যেসব পণ্য

মার্কিন শাটডাউন অবসানের ইঙ্গিতে চাঙ্গা এশিয়ার বাজার

মার্কিন শাটডাউন অবসানের ইঙ্গিতে চাঙ্গা এশিয়ার বাজার