রাজধানীতে সাবেক কাউন্সিলর টিপুর বিরুদ্ধে ডিএমপিতে অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫, ২০: ৫৩

মাদক ব্যবসা ও চাদাঁবাজির অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল ইসলাম টিপুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার কাছে অনুরোধ জানিয়ে ভুক্তভোগীরা। অভিযোগে বলা হয়, গেন্ডারিয়াতে অপরাধ কর্মকান্ডের গড ফাদার হিসাবে পরিচিতি ৪০নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মকবুল ইসলাম টিপু।

গত মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪০ নং ওয়ার্ডের করাতিটোলা, দয়াগঞ্জ বাজার এবং সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের নির্যাতিত ও ভূক্তভোগীরা।

বিজ্ঞাপন

এলাকায় মাদকের ব্যবসা ও চাদাঁবাজির অঙ্গরাজ্য হিসাবে পরিনত করেছে তিনি। স্থানীয় লোকজন ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয় অথবা মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে।

অভিযোগে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং আস্থাবাজন নাইমুল ইসলাম খান দীপুর আপন ছোট ভাই এই মকবুল ইসলাম খান টিপু। দিপুর দুর্নীতি করে কামানোর অবৈধ শত শত কোটি টাকা টিপুর হেফাজতে।

নাইমুল ইসলাম খান দিপু বর্তমানে আত্মগোপন করে টিপুর হেফাজতে রয়েছে। টিপুর আরেক আপন ছোট ভাই অপু শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের কথিত সাবেক ভিপি ছিলেন। পুরান ঢাকায় মাদক ও অস্ত্রের বিস্তার ঘটে এই টিপু ও অপুর মাধ্যমে।

অভিযোগে বলা হয়, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা জন্য বিশেষ বাহিনী গড়ে তুলেছেন টিপু। টিপুর নেতৃত্বে করাতিটোলায় মাদক কারবারী করে ‘অটো সজল’। তার নেতৃত্বে রয়েছে বিশাল কিশোর গ্যাং। মাদক বিক্রির একটা অংশ মসোয়ারা হিসাবে চলে যায় টিপুর কাছে। সজলের থেকে মসোয়ারা কালেকশন করে টিপুর বিশ্বস্ত লোক ছোটো মুসা। তিনি ৪০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক।

মকবুল ইসলাম টিপুর নেতৃত্বে স্থানীয় দয়াগঞ্জ বাজার থেকে প্রতিদিন চাঁদা তোলে আলী হোসেন ও মোহাম্মদ উল্লাহ। নারিন্দা, শাহ শাহেব লেন, দয়াগঞ্জ সমস্ত এলাকার ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিমাসে চাঁদা আদায় করছেন টিপুর লোকজন। দয়াগঞ্জ মোড়ের ফুটপাতের টং দোকান থেকে মাসিক হিসাবে চাঁদা আদায়েন দায়িত্বে আছে ৪০ নং ওয়ার্ড বিএনপি র সভাপতি মো. মাহবুব।

৪০ নং ওয়ার্ডের মধ্যে কনষ্ট্রাকশনের কাজ করলেই দিতে হচ্ছে বড় অংকের চাঁদা। না দিলে কাজ বন্ধসহ লোকজনদের মারধরসহ চলে সাইনবোর্ড ভাংচুর। এই মকবুল ইসলাম টিপুর কালো থাবা থেকে সনাতন ধর্মাবলীদের মন্দির রেহাই পায়নি।

দয়াগঞ্জ মোড়ের শিব মন্দির, শক্তি ঔষাধালয়ের লোকনাথ আশ্রম, ঋষি পারা, নারিন্দার মন্দিরসহ হিন্দু ধর্মাবলীদের সমস্ত মন্দির কমিটিতে তাকে টোকেন মানি দিয়ে পদ নিতে হয়েছে। এসব মন্দিরের দোকানও নিয়ন্ত্রন করে টিপু।

সায়েদাবাদ বাস মালিকদের বিভিন্ন লাইন অস্ত্রধারী সজল, মুসা, ইস্রাফিলদের, মাধ্যমে দখল করে নেয় টিপু। ঢাকা লাকসাম তিশা ট্রান্সপোর্পের লাইনটি নিজের দখলে নিয়ে প্রতি গাড়ি থেকে ৮০০ টাকা করে নেয় টিপুর লোকজন। এছাড়াও কয়েকটি বাস কাউন্টার থেকে প্রতিদিন চাঁদা আদায় করে তার লোকজন। দয়াগঞ্জ ট্রাক টার্মিনাল থেকেও মাসিক হিসাবে তার চাঁদা নির্ধারিত করে টিপু।

গত বছরের ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর গণহত্যা অথবা আওয়ামী লীগের নাম জড়িয়ে বিভিন্ন মামলা মোকদ্দমার ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে মকবুল ইসলাম টিপু আমার দেশকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে কে বা কারা অভিযোগ করেছে তা আমি জানিনা। ২০১৫ সালে জেলে থেকেও নির্বাচন করেও জয়লাভ করেছি। আমার জনপ্রিয়তাকে ইর্ষান্বিত হয়ে অনেকে অপ্রচার চালাচ্ছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত