বসুন্ধরা গ্রুপের দুই মালিকের সম্পদ জব্দে যুক্তরাজ্যে দুদকের চিঠি

ঢাবি সংবাদদাতা
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৫, ০১: ১৮

বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফিয়াত সোবহান (সানভীর) ও কো-চেয়ারম্যান সাদাত সোবহানের সম্পদ জব্দে যুক্তরাজ্যে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সিকে এ চিঠি দেওয়া হয়। দুদক জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদের এক হাজার ৬০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবে আমরা চেষ্টা করছি। আমাদের আদালতের পাশাপাশি সে দেশের আদালতে যদি আমরা প্রমাণ করতে পারি, তাহলে এসব সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এ ছাড়া সাইফুজ্জামানের ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমামের সম্পদ জব্দেও যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সিকে চিঠি দিয়েছে দুদক।

তিনি আরো জানান, বসুন্ধরা গ্রুপের দুই ছেলের সম্পদ জব্দে চিঠি দিয়েছে দুদক। যুক্তরাজ্যের আদালতের অনুমতি মিললে পাচার হওয়া সম্পদ দেশে ফেরানো সম্ভব হবে। পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আসামি প্রত্যর্পণ আইন, ১৯৭৪ এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় ফেরানোর বিষয়ে সরকার চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে ইউএনসিএসি ও ইউএনটিওসির আওতায় আনার প্রচেষ্টা রয়েছে।

আব্দুল মোমেন জানান, বিশ্বব্যাপী পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধার একটি জটিল কার্যক্রম। বাংলাদেশের এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা কম। এনসিএ এ ব্যাপারে আমাদের সাহায্য করেছে। বলা যায়, আমাদের প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছে। আমরা ভাগ্যবান হলে সঠিকভাবে মামলা করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সক্ষম হব।

তিনি আরো জানান, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ পাচারের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে গড়া মোট এক হাজার ৬০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। সঠিকভাবে মামলা মোকাদ্দমা করে সে টাকা বাংলাদেশে আনা যাবে।

দুদক চেয়ারম্যান জানান, সাবেক ভূমিমন্ত্রীর পাচার করা অর্থের মাধ্যমে বিদেশে ৫৮০টি বাড়ি করেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি ও যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি বাড়ির তালিকা করেছে (এনসিএ)। যুক্তরাজ্যে তার ৩৪৩টি ফ্ল্যাট/প্লট এবং ১০টি স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালতের এক আদেশে ক্রোক করা হয়।

তিনি জানান, উক্ত ক্রোকাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের সেন্ট্রাল অথরিটি বরাবর এমএলএআর প্রেরণ করা হয়। জেডটিএস প্রোপারটিজের ৩৪৩টি বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য ৭৩ দশমিক ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড যা বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার ২৫ কোটি টাকা। ব্যাংক আমানতের পরিমাণ ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন পাউন্ড, যা আনুমানিক ৩৫ কোটি টাকার সমপরিমাণ বা আরো বেশি। এ টাকা সেখানে জব্দ করা হয়েছে। বাংলাদেশের সম্পদ জব্দের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদ জব্দ করায় এনসিএকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত