শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ রেহানার নামে রাজউকের পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর প্লট বরাদ্দ বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে রাজউককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্লট দুর্নীতির মামলায় রায়ে প্রদান করে এ নির্দেশ দেন ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলমের আদালত। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর তরিকুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা ৬ মামলার মধ্যে তিন মামলায় রায় হয়েছে। ২৭ নভেম্বর ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন রায়ে তিন মামলায় শেখ হাসিনাকে সাত বছর করে ২১ বছর, তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে দেয়া হয় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।
গত ২৫ নভেম্বর এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ১ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়। রায় ঘোষণার আগে ১৭ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা খুরশীদ আলমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। সকাল ১০ টা ৫৯ মিনিটেরর টার দিকে তাকে এজলাসে তোলা হয়। রায় পড়তে বিচারক রবিউল আলম এজলাসে ওঠেন ১১ টা ২৯ মিনিটে। উঠেই এ মামলার রায় পড়া শুরু করেন। তিনি বলেন, রায় আমি বাংলায় দিবো, যেহেতু আমি বাঙালি।
এরপর মামলার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন বিচারক। রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণ দেয়ার আগে কোরআনের একটি আয়াত তুলে ধরে বিচারক বলেন, ‘মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করেছেন, পাপ ও জুলুমের ক্ষেত্রে একে অপরকে সহায়তা করো না। দুর্নীতি বর্তমানে রোগে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতি সমগ্র সমাজকে গ্রাস করে ফেলেছে। আমাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে।’
এরপর আদালত সাজার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে শেখ রেহানাকে দেয়া হয়েছে সাত বছরের কারাদণ্ড। তার বোন শেখ হাসিনার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং মেয়ে টিউলিপের দুই বছরের কারাদণ্ড হয়েছে।
মামলার অপর ১৪ আসামিকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এরা হলেন- সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) (এনডিসি) মো. অলিউল্লাহ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য (উন্নয়ন) অবসরপ্রাপ্ত মেজর প্রকৌশলী সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সহকারী পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-৩) মাজহারুল ইসলাম, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম ও সাবেক উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ। দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

