ট্রাইব্যুনালে শহীদ ইয়াকুবের চাচা

চানখাঁরপুলে পুলিশ সদস্যদের হিন্দিতে কথাবার্তা বলতে শুনেছি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৬: ৪৩
আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮: ৪৭
চানখারপুলে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচার গুলি চালায় পুলিশ

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখারপুলে গুলি করে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তৃতীয় দিনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। বুধবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেন চানখাঁরপুলে পুলিশের গুলিতে শহীদ মো. ইয়াকুবের মা, চাচা ও তার বড় ভাই মো. মহিবুল হক।

বিজ্ঞাপন

এই তিন সাক্ষী শেখ হাসিনাসহ এই মামলার অপর আসামিদের বিচার চেয়েছেন। এই মামলায় ট্র্যাইব্যুনাল পরবর্তী সাক্ষ্যের জন্য আগামী বুধবার দিন ধার্য করেছেন।

এদিন ট্রাইব্যুনালে দেয়া জবানবন্দিতে শহীদ ইয়াকুবের চাচা বলেন, ‘৫ আগস্ট সকালে চানখারপুল এলাকায় শত শত আন্দোলনকারী জড়ো হয়। তখন পোশাকধারী কিছু পুলিশ সদস্যকে হিন্দি ভাষায় নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলতে শুনি। এসব পুলিশের গুলিতে আমার ভাতিজা ইয়াকুব মারা যায়। আমি শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের সবার ফাঁসি চাই।’

শহীদ ইয়াকুবের মা তার সাক্ষ্যে বলেন, আমার ছেলে নিরপরাধ, আমার ছেলে আন্দোলনে যাওয়ায় হাসিনার পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করেছে।

জবানবন্দিতে সন্তানহারা রহিমা আক্তার আরো বলেন, আমার ৩৫ বছরের ছেলে মো. ইয়াকুব নিউ মার্কেটে ডেলিভারিম্যানের কাজ করতো। সে প্রায়ই ছাত্র আন্দোলনে যেত। গত বছর ৫ আগস্টও চানখারপুল এলাকায় আন্দোলনে গিয়েছিল। ওইদিন সে সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়। পেটের এক পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে অপর পাশ দিয়ে ভুঁড়িসহ বের হয়ে যায়। প্রথমে আমাকে বলছিল না। সবাই সান্ত্বনা দিচ্ছিল। আমি সবাইকে বললাম, তোমরা কাঁদতেছ কেন? আমারে কাঁদতে দাও না কেন? একপর্যায়ে আমার ছেলের লাশ যখন খাটিয়ায় করে আনা হয়, তখন খাটিয়া বেয়ে অনেক রক্ত পড়ছিল। এ সময় সবার ফাঁসি দাবি করেন তিনি।

এছাড়া বুধবার সাক্ষী দেন শহীদ ইয়াকুবের বড় ভাই মো. মহিবুল হক।

এর আগে গতকাল এই মামলায় সাক্ষী দেন রাজধানীর বোরহান উদ্দিন কলেজের শিক্ষিকা আঞ্জু আরা ইয়াসমিন ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শহীদ শেখ মেহেদী হাসান জুনায়েদের বাবা শেখ জামাল হাসান। গত সোমবার প্রথম সাক্ষী দিন শহীদ আনাসের বাবা শাহরিয়ার খান পলাশ। গতকাল এই মামলায় চিফ প্রসিকিউটর সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের পর শহীদ আনাসের বাবা তার সাক্ষ্য দেন। পরবর্তীতে তার জেরা করা হয়।

গত বছরের ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জনকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ১৪ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন। সেই সঙ্গে এই মামলার সূচনা বক্তব্যের ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়।

এই মামলায় যে আট আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তারা হলো: সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল, শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

এই আসামির মধ্যে প্রথম চারজন পলাতক। অন্য চারজন গ্রেফতার। গ্রেফতারকৃত চারজনকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। জাজ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দু’টি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

গভীর রাতে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ওএমএসের চাল বিক্রির অভিযোগ

শপথ নিলেন পিএসসির নতুন সদস্য আফতাব হোসেন

মোটরবাইক নিষেধাজ্ঞায় বিলিয়ন ডলারের বাজার হারানোর শঙ্কায় ভিয়েতনাম

বিএনপি নেতার চাপে জুলাই হত্যা মামলার দুই আসামিকে ছেড়ে দিলেন ওসি

সাবেক আইজিপি মামুন অন্যের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বাঁচার চেষ্টা করছেন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত