পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে একুশে বইমেলা শুরুর দাবি

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৪: ৫৯

আগামী বছরের পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে একুশে বইমেলা আয়োজন এবং স্টল ভাড়া কমানোর দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রা করেছে একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদ।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শাহবাগে লেখক, পাঠক, প্রকাশক, শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের সমাবেশ শেষে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান উদ্দেশ্যে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু হয়।

সমাবেশে ভাসানি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি- সবকিছুর সঙ্গে বইমেলা গভীরভাবে যুক্ত। তাই নানা অজুহাতে বইমেলা বন্ধ রাখার কোনো যুক্তি নেই। সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ, এক ফেব্রুয়ারি থেকেই যথাসময়ে বইমেলা শুরু করতে হবে।’

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, এ বছর বইমেলা আয়োজন নিয়ে ‘ভালো পরিবেশ’ তৈরি করা হয়নি।

চিন্তাবিদ কামাল হোসেন বাদল বলেন, ‘আমরা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে রাজপথে ছিলাম, রক্ত দিয়েছি। ২৬ জুলাই কারফিউ ভেঙে সংস্কৃতিকর্মীরা রাস্তায় নেমেছিল। ৩০ জুলাই গানের মিছিল করে আওয়ামী লীগের অফিস স্তব্ধ করে দিয়েছিলাম। এমন বাংলাদেশ আমরা চাইনি, যেখানে গান, সংস্কৃতি ও বইমেলা আয়োজন ব্যাহত হবে। বইমেলা ব্যহত হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘যেই শক্তি আমাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তারাই বইমেলা বন্ধ করার নানা চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি- সরকার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করুক। প্রয়োজনে সংস্কৃতিকর্মী ও প্রকাশকরাই বইমেলার আয়োজন করবে।’

বাংলা একাডেমির ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলা একাডেমির ডিজিকে অনুরোধ করেছিলাম, আয়োজক হিসেবে আপনারাই ঘোষণা দিন। অথচ তারা নানা দোলাচলে আছেন। কিন্তু একুশের চেতনা থেকে আমরা সরে যাইনি, একুশের বইমেলা অবশ্যই পহেলা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে।’

জামশেদ আনোয়ার তপন বলেন, ‘যদি সত্যি এমন কোনো পরিবেশ তৈরি হয় যেখানে বইমেলা আয়োজনে সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সরকারের উচিত সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে বসে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া। অথচ মনে হচ্ছে, বইমেলা না হলে বরং সরকার বেঁচে যায়।’

তিনি বলেন, ‘স্কুলে গান শেখানো বন্ধ হচ্ছে, শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ হচ্ছে- এগুলো কোনো ভাবনার প্রতিফলন? যেদিকে দানবের শক্তি, সেদিকেই সরকার আছে- এটাই হাসিনার নীতি ছিল। সেই নীতিকে গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে আমরা পরাজিত করেছি। এখন আবার বইমেলা বাতিলের মধ্যদিয়ে সরকার অশুভ শক্তির পাশে দাঁড়াচ্ছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে বইমেলা বন্ধ করা কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ হতে পারে না। প্রয়োজনে প্রকাশক, সংস্কৃতিকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈঠক করে সমাধান বের করতে হবে।’

চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বলেন, ‘দেশে বাণিজ্যমেলা হবে, ইসলামী বইমেলা হবে- সেখানে নিরাপত্তা দিতে পারবেন, আর একুশের বইমেলায় পারবেন না—এটা কীভাবে সম্ভব? আমরা স্পষ্টভাবে জানতে চাই, কাদের প্ররোচণায় বইমেলা বন্ধ রাখতে চাইছেন?’

তিনি বলেন, ‘যদি সরকার ব্যর্থ হয়, তাহলে লেখক-পাঠক-সাংস্কৃতিককর্মীদের সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা নিজেরাই পহেলা ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধন করবো।’

সমাবেশ শেষে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ একুশে বইমেলা যথাসময়ে আয়োজন এবং স্টল ভাড়া কমানোর দাবি পুনর্ব্যক্ত করে স্মারকলিপি জমা দিতে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা করেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

২০ আসনের জন্য ১৫ দিনে ৩ বার সালাহউদ্দিনের বাসায় এনসিপি নেতা

ঢাকা-সন্দ্বীপে হঠাৎ বন্ধ বিআরটিসির এসি বাস সার্ভিস, বিপাকে পর্যটকরা

আমাজন বনে জলবায়ু সম্মেলন: বৈশ্বিক ঐক্যের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ

সীমানা নিয়ে মামলা, তফসিল ঘোষণায় প্রভাব পড়তে পারে

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায়, কমছে কুয়াশা বাড়ছে শীতের দাপট

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত