তদন্ত কমিটিতেই সীমাবদ্ধ জুলাই হামলায় জড়িতদের বিচার

আব্দুল্লাহ আল মামুন, কুবি
প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ০৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ও সংশ্লিষ্টদের এখনো শাস্তি নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জড়িতদের শনাক্তে তদন্ত কমিটি গঠন হলেও মিটিংয়েই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে কাজ। পাশাপাশি তদন্ত বিলম্ব হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে তদন্ত কমিটির দাবি প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তারা কাজ করতে পারছে না। জানা যায়, জুলাই-গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীপন্থি প্রশাসন ও কিছু শিক্ষকের মদতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ হামলার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে ২০২৫ সালের গত ২৮ এপ্রিল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে কমিটি গঠনের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম সিন্ডিকেট সভায় প্রক্টর অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিমকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে অন্য দুই সদস্য হলেনÑআইন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান মু. আলী মুর্শেদ কাজেম এবং প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান।

তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। তবে ইতোমধ্যে তারা তিনটি সভা করেছে । কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, তদন্তের স্বার্থে তথ্য চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও বিভাগে চিঠি পাঠানো হলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে তদন্ত কমিটিকে কোনো বাজেট দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির এক নারী সদস্য। ফলে বাজেটের অভাবে আটকে আছে তদন্তের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকের কাছে কমিটির প্রয়োজনীয় খরচ দিতে বাজেট চেয়ে চিঠি দেওয়া হলেও প্রশাসন থেকে কোনো বাজেট পাস করা হয়নি।

তদন্তে দীর্ঘসূত্রতায় ক্ষোভ জানিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যেই জুলাই অপরাধীদের শাস্তি দিয়েছে, সেখানে কুবি প্রশাসন এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। হামলায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীরা নিয়মিত ক্লাস–পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে, এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীরাও বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারুক নাহিয়ান বলেন, গত বছর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৮ ও ২৯ জুলাই ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা এতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। অথচ প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। তিনি বলেন, হামলাকারীদের শাস্তি না দেওয়া হলে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব আমরা।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত