বাকৃবিতে ৬ হাজার শিক্ষার্থী পরিবহনে বরাদ্দ পাঁচ বাস

আমান উল্লাহ, বাকৃবি
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ০৯: ৫৩

শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বাড়েনি পরিবহন সুবিধা। প্রায় ছয় হাজার শিক্ষার্থীর যাতায়াতের জন্য আছে মাত্র পাঁচটি বাস। এ কারণে প্রতিদিন ক্লাসে যাওয়া-আসায় শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

তাদের অভিযোগ, বাসে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বহিরাগত যাত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের স্বজনরা ওঠায় সিট পাওয়া আরো কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে অনেক শিক্ষার্থীকে দাঁড়িয়ে কিংবা বিকল্প পরিবহনে বাড়তি খরচে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া প্রত্যেক সেমিস্টারে পরিবহন কার্ডের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কাউকে কার্ড দেওয়া হয়নি। ফলে বহিরাগতরা বাসে যাতায়াতের সুযোগ পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখা সূত্রে জানা গেছে, পাঁচটি বাসের মধ্যে চারটি ময়মনসিংহ শহর-ক্যাম্পাস রুটে এবং একটি ফার্ম এলাকায় চলাচল করে। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন শহর রুটে ১১টি ট্রিপ চালু রয়েছে। অন্যদিকে শনিবার রয়েছে মাত্র একটি ট্রিপ এবং অন্যান্য ছুটির দিন চলে সাতটি ট্রিপ। ফার্ম রুটে ক্লাস চলাকালীন মাত্র একটি ট্রিপ পরিচালিত হয়। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য রয়েছে চারটি মিনিবাস, পাঁচটি অচল বাস ও চারটি অ্যাম্বুলেন্স। তবে শুক্রবার কোনো বাস নেই।

এ বিষয়ে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মঈন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর তুলনায় বাসের সংখ্যা খুবই কম। অথচ অনেক সিট দখল করে রাখে কর্মচারী ও বহিরাগতরা। বিশেষ করে ক্লাস ছুটি হওয়ার পর বিকালে বাসে ওঠা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে বাধ্য হয়ে রিকশা বা অটোরিকশা ব্যবহার করতে হয়। এতে সময়, অর্থ এবং নিরাপত্তাÑতিন দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

তিনি আরো বলেন, এ সমস্যা সমাধানে প্রশাসনকে দ্রুত নতুন বাস সংযোজন, শিক্ষার্থীদের বাসে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার এবং পিক আওয়ারে অতিরিক্ত বাস সার্ভিস চালু করতে হবে। এছাড়া অভিযোগ জানানোর জন্য হেল্প ডেস্ক বা অনলাইন ফিডব্যাক ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানান তিনি।

প্রতিষ্ঠানটির অন্য এক শিক্ষার্থী জায়েদ হাসান ওয়ালিদ বলেন, বাস ট্রিপ বাড়ানোর দাবিতে দীর্ঘদিন থেকে আমরা আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু প্রশাসন তা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। তিনি বলেন, করোনার আগেও ২২টি ট্রিপ ছিল, তা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১২টিতে। বিশেষ করে শুক্রবার কোনো বাস নেই এবং শনিবার মাত্র একটি ট্রিপ থাকে, যা শিক্ষার্থীদের জন্য অপ্রতুল। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বাস ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গুলজারুল আজিজ জানান, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের বিষয়টি আমরা জানি। নতুন একটি বাস কেনার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং শিগগির তা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে চালকের সংকটের কারণে বিকল্প জনবল দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। এ সংকট সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, দ্রুত নতুন বাস সংযোজন, পিক আওয়ারে অতিরিক্ত ট্রিপ চালু, বাসে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার এবং অভিযোগ জানানোর জন্য হেল্প ডেস্ক বা অনলাইন ফিডব্যাক ব্যবস্থা চালু করা জরুরি।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত