ছয় ঘণ্টা পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) এলাকার আশপাশে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের দেখা গেছে। এরআগে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট সংলগ্ন জোবরা এলাকায় রোববার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়। এ সময় সেনা ও পুলিশ সদস্য কাউকেই দেখা যায়নি। এরপর সাড়ে ৩টার দিকে প্রথমে সেনারা আসেন। পরে পুলিশকে দেখা যায়।
আমার দেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দুইজন উপ-উপাচার্য, প্রক্টর আহত হয়েছেন। উপাচার্যকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকটি গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারের মধ্যেও দেখা যায়, সেনা-পুলিশের উপস্থিতি ছিলো না। তবে, পাঁচটার দিকে ক্যাম্পাস ও আশেপাশের এলাকায় সেনাবাহিনীকে দেখা গেছে।
এই বিষয়ে জানতে জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ও জেলা পুলিশের মুখপাত্র রাসেলকে কয়েক দফা ফোন করা হলেও প্রথমে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে রাসেল কল রিসিভ করলেও ব্যস্ত আছেন বলে কেটে দেন।
এ দিকে গতকাল মধ্যরাত থেকে রোববার পর্যন্ত স্থানীয় হামলার বিভিন্ন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিওতে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নম্বর গেট সংলগ্ন জোবরা গ্রামে ভাড়াটিয়া শিক্ষার্থীদের ধরে স্থানীয়রা ছাদ থেকে ফেলে দিচ্ছে। ধানক্ষেতে চার-পাঁচজন মিলে এক শিক্ষার্থীকে ধারালো রামদা দিয়ে কোপাচ্ছে।
তবে আহত শিক্ষার্থীদের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। কারণ, ইতিমধ্যেই একশর বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় অন্তত ৫০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
চবি মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক ডা. মুহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। কারও মাথায় গভীর ক্ষত, কারও হাত-পা কেটে গেছে। তাদের মধ্যে গুরুতরদের আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, এভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা করা হয়েছে। দা দিয়ে কোপানো হয়েছে, ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে আমরা এখন চরমভাবে উদ্বিগ্ন।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন আমার দেশকে বলেন, চবির ৫০ শিক্ষার্থী চমেকে ভর্তি আছেন। তাদের বেশিরভাগই মাথায় আঘাত। সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
চমেকে থাকা দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী চন্দনা রানি বলেন, শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। মাথা থেকে সবার প্রচুর রক্ত ঝরছে।
ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী শবনম বলেন, আমাদের দিকে একসাথে ইট ছুড়তে থাকে স্থানীয়রা। মাথায় আঘাত পেয়ে চোখে অন্ধকার দেখি। পরে বন্ধুরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।

