এসএসসি পরীক্ষা পেছানোর পরিকল্পনা নেই: ঢাকা শিক্ষাবোর্ড

রকীবুল হক
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৮: ২১
আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৯: ০২

এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার আর মাত্র ছয়দিন বাকি। এ পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১৯ লাখ ২৮ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী। তবে বিভিন্ন অজুহাতে পরীক্ষা অন্তত একমাস পেছানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন পরীক্ষার্থীদের একটি অংশ। দাবি আদায়ে তাদের পক্ষ থেকে আগামীকাল শুক্রবার শহীদ মিনারে সমবেত হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। দাবি না মানলে দেওয়া হয়েছে শনিবার কর্মসূচি পালন হুমকি।

বিজ্ঞাপন

এদিকে পরীক্ষা পেছানোর বিপক্ষেও দাঁড়িয়েছে আরেকটি পক্ষ। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চালানো হচ্ছে প্রচার। তাদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পরীক্ষা পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। কারণ কয়েকদিন পেছালেই প্রস্তুতি ভালো হবে এটা ঠিক না। এতে যারা পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত, তাদের প্রস্তুতি বিঘ্ন হবে।

সময়সূচি অনুযায়ী, আগামী ১০ এপ্রিল থেকে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এতে ১৯ লাখ ২৮ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী অংশ নেবেন। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষার লিখিত বা তত্ত্বীয় অংশ শেষ হবে ১৩ মে। আর মাদরাসা বোর্ডের অধীনে দাখিলের লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১৫ মে। এরপর ২২ মে পর্যন্ত চলবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।

পরীক্ষা পেছানোর দাবি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির আমার দেশকে বলেন, পরীক্ষা পেছানোর জন্য কিছু শিক্ষার্থীর আন্দোলনের কথা শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয়েছে। পরীক্ষা পেছানোর কোন পরিকল্পনা নেই। রুটিনে গ্যাপ দেয়া এবং গরমের মতো ঠুনকো কারণে পরীক্ষা পেছানো অযৌক্তিক। একসময় দিনে দুটি পরীক্ষাও নেয়া হতো।

অভিভাবক ঐক্য ফোরামের আহবায়ক জিয়াউল কবির দুলু আমার দেশকে বলেন, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য একটা গোষ্ঠী পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়েছে। তাদের দাবিতে সাড়া না দিয়ে ঘোষিত রুটিন অনুযায়ী পরীক্ষা নেয়া হোক-এটাই আমরা চাই।

তবে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব জাকির হোসেন আমার দেশকে বলেন, অস্থিতিশীল একটি পরিস্থিতি পার করেছে দেশ। তাই এসএসসি পরীক্ষা অল্প কিছুদিন পেছানো এবং গ্যাপ দিয়ে রুটিন দিলে ভালো হয়। যদিও পরীক্ষা পেছালে মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে পরীক্ষা এক মাস পেছানো এবং প্রতিটি পরীক্ষার মাঝে তিন-চারদিন বিরতি দেয়ার দাবি জানিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানান, পবিত্র রমজান মাসে রোজা রেখে ১৯ লাখ ২৮ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীর ভালোভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। ঈদের পরপরই পরীক্ষা হওয়ায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে ফল বিপর্যয় হতে পারে। তাই এক মাস সময় দিলে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবে তারা।

বিজ্ঞপ্তিতে তারা আরো উল্লেখ করে, এপ্রিল ও মে মাসে প্রচণ্ড গরম পড়ে। গরমে একটানা পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। গরমের মধ্যে টানা পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়বে। এছাড়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পরীক্ষার কেন্দ্রও দূরে। তাই প্রত্যেক পরীক্ষায় তিন-চার দিন বন্ধ দিয়ে নতুন রুটিন করতে হবে।

ইশতিয়াক হাসান নীরব নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে বৃহস্পতিবার স্ট্যাটাসে বলা হয়-যারা চলমান আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক, তাদের সকলের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আগামীকাল (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আপনাদের উপস্থিতি একান্তভাবে কাম্য।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত