বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীর পর এবার প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদেও নিয়োগের ক্ষমতা যাচ্ছে সরকারের হাতে। পরিচালনা পর্ষদ বা ‘গভর্নিং বডি’ ও ‘ম্যানেজিং কমিটি’এই নিয়োগের ক্ষমতা হারাচ্ছে।
কোন প্রক্রিয়ায় বা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে তা নির্ধারণে কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার দুপুরে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ-এনটিআরসিএ আয়োজিত এক কর্মশালায় এ তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম।
এর আগে সোমবার প্রকাশিত এক পরিপত্রে বেসরকারি স্কুল ও কলেজের কর্মচারী পদে নিয়োগ সুপারিশ কমিটির সভাপতি পদ থেকে ‘গভর্নিং বডি’ ও ‘ম্যানেজিং কমিটি’ সরিয়ে ডিসিদের এ দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগের জন্য সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহবায়ক এবং সদস্য হিসেবে তিন অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড এবং এনটিআরসিএর প্রতিনিধি রয়েছে। এ কমিটি শিগগিরই সভা করে প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ নীতিমালা তৈরি করবে।
এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশের মধ্য দিয়ে নীরব বিপ্লব হয়েছে দাবি করে-আমিনুল ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত এক লাখ ৭৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এখন আর শিক্ষক নিয়োগে কোন অনিয়ম হয় না। এনটিআরসিএতে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে তার শিকড় উপড়ে ফেলা হবে।
তিনি বলেন, আমরা আইনের ভিতরে থেকে সবকিছু সমাধানে শতভাগ তৎপর। তবে আইরে বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই। বেআইনি দাবি নিয়ে এনটিআরসিএ ঘেরাও বা পুড়িয়ে দিলেও কোন লাভ হবে না।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ নিয়ে কিছু জটিলতা প্রসঙ্গে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করি। তবে অনেক প্রধান শিক্ষক ভুল তথ্য দেন। এতে করে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থী নানা বিড়ম্বনার শিকার হন।
এজন্য এখন থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে না। এখন থেকে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কাছে শূন্য পদের তথ্য চাওয়া হবে। বিষয়ভিত্তিকও শূন্যপদ উল্লেখ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, নিবন্ধন পরীক্ষা নিয়ে আমরা একটি প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। সেখানে মাদ্রাসার ক্ষেত্রে ১৪০ নম্বর সাবজেক্টিভ এবং ৬০ নম্বর জেনারেল (বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান) বিষয়ে পরীক্ষা হবে। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে প্রার্থীকে ৮০ নম্বর পেতে হবে। দুটো মিলিয়ে ৮০ নম্বর পেলেই হবে।
এনটিআরসিএর কার্যক্রম সম্পর্কে জানাতে এ কর্মশালা আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান অনুবিভাগের সদস্য (যুগ্ম সচিব), এরাদুল হক।
আলোচনায় অংশ নেন, পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন অনুবিভাগের সদস্য (যুগ্ম সচিব) মুহম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী, পরিচালক (উপসচিব) তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ এবং সংস্থাটির সচিব (উপসচিব) এ এম এম রিজওয়ানুল হক।
এতে বিভিন্ন সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।

