বাকৃবিতে হল বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহার, শাস্তি পাবেন না আন্দোলনকারীরা

প্রতিনিধি, বাকৃবি
প্রকাশ : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৭

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে চলমান আন্দোলন নিয়ে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রশাসন ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে টানা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিন্ডিকেট সভা ডেকে হল বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহার করা হবে। পাশাপাশি আন্দোলনে অংশ নেয়া কোনো শিক্ষার্থীকে শাস্তির আওতায় আনা হবে না। তবে বহুল আলোচিত একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া অনলাইনে (জুম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে) যুক্ত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. শহীদুল হক, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক সোনিয়া সেহেলী, কৃষি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান সহ তদন্ত কমিটির সদস্যরা। অপরদিকে প্রায় অর্ধশত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আলোচনায় অংশ নেন।

আলোচনা শেষে ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক জানান, বুধবার সিন্ডিকেট সভায় হল বন্ধের নোটিশ প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী সাত দিনের মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।’

কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের আগের তিন ডিগ্রির সিদ্ধান্তই বহাল আছে। তবে এটি নিয়ে সামনে আরো আলোচনা করা হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচারের বিষয়ে তদন্ত কমিটির নোটিশে কোনো উল্লেখ না থাকায় তিনি বলেন, ‘হামলাসহ যা ঘটেছে সবকিছুই তদন্তের আওতায় আসবে।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল বলেন, ‘স্যারদের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেয়ার বিষয়ে একমত হয়েছি। আগামীকাল সিন্ডিকেট মিটিংয়ের মাধ্যমে হল বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করা হবে এবং আগামী সাতদিনের মধ্যে ক্লাস পরীক্ষা শুরু হওয়ার ব্যাপারে স্যাররা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। সেজন্য আমরা আগামীকাল আমাদের আন্দোলনের কোন কর্মসূচি রাখছি না। তবে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে আমরা আবার আন্দোলনে ফিরে যাবো।’

আন্দোলনকারী আরেক শিক্ষার্থী মো. শিবলী সাদী বলেন, একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি, এ বিষয়ে সামনে আরও আলোচনা হবে। পরবর্তী আলোচনার মাধ্যমে কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। উপাচার্য আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন যে, আন্দোলনকারীদেরকে অ্যাকাডেমিক বা হলভিত্তিক কোনো বিষয়ে শাস্তি দিয়ে হয়রানি করা হবে না। এ বিষয়ে আগামীকাল তিনি লিখিত বক্তব্য দেবেন বলেও আশ্বস্ত করেছেন।

প্রসঙ্গত, রোববার (৩১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় শিক্ষার্থীদের একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে সমাধান না আসায় শিক্ষার্থীরা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে উপাচার্যসহ প্রায় ২০০ শিক্ষক-কর্মকর্তাকে তালা মেরে অবরুদ্ধ করেন। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের পাশ থেকে ২৫০-৩০০ জন বহিরাগত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে বহিরাগতরা তালা ভেঙে দিলে অবরুদ্ধ শিক্ষকরা বেরিয়ে আসেন। এ সময় সাংবাদিক, শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।

এমন পরিস্থিতিতে রোববার রাত সাড়ে ৯টায় জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি সব শিক্ষার্থীকে সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যান।

শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার বিচার ও হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবিতে সোমবার থেকে উত্তাল রয়েছে ক্যাম্পাস। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রেললাইন অবরোধের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ কার্যালয় ও পূবালী ব্যাংক শাখায় তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সাড়ে ১১টা থেকে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আব্দুল জব্বার মোড়ে এসে জড়ো হন। পরে দুপুর ১২টা থেকে তারা রেললাইনে অবস্থান নিলে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ছয় ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৬টায় আলোচনায় বসার আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত