ডিপ্লোমাধারীদের সহিংস আন্দোলনের বিপক্ষে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিবৃতি

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ০৫

ডিপ্লোমাধারীদের সাম্প্রতিক রেল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচিকে ‘অযৌক্তিক ও ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট)শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর)দুপুরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আলোচনার টেবিলে সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা সহিংস আন্দোলনের পথে হেঁটেছেন, যা দেশের সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ানো ছাড়া কোনো সুফল বয়ে আনবে না।

তাদের লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, গত ছয় মাস ধরে দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা ‘প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন’ এর ব্যানারে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

এরমধ্যে রয়েছে—

১. ৯ম গ্রেড (সহকারী প্রকৌশলী) পদে প্রবেশের ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি ডিগ্রি নির্ধারণ ও নিয়োগ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা, যাতে কোনো ধরনের কোটা বা বিকল্প পদোন্নতির সুযোগ না থাকে।

২. ১০ম গ্রেডে (উপসহকারী প্রকৌশলী) ডিপ্লোমাধারীদের জন্য বরাদ্দ ১০০% কোটা বাতিল করে পদে অংশগ্রহণের সুযোগ বিএসসি ও উচ্চতর ডিগ্রিধারীদের জন্য উন্মুক্ত করা।

৩. বিএসসি ডিগ্রি ব্যতীত কেউ ‘ইঞ্জিনিয়ার’পদবি ব্যবহার করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সরকারের বিভিন্ন দফতরে দীর্ঘদিন ধরে কোটা ও পদোন্নতির মাধ্যমে ডিপ্লোমাধারীরা ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাডার পদে প্রবেশ করছেন,অথচ একই পদে বিএসসি প্রকৌশলীদের কঠোর প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হচ্ছে।

লিখিত বক্তব্যে আরো দাবি করা হয়, ডাক্তার ও নার্সদের ক্ষেত্রে যেভাবে পদোন্নতির পৃথক ধারা রয়েছে, প্রকৌশলীদের ক্ষেত্রেও সেই একই নিয়ম অনুসরণ করা উচিত। “একজন ডিপ্লোমা মেডিকেল অফিসার বা নার্স কোনোদিনই এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে ৯ম গ্রেডে প্রবেশ করতে পারে না,কিন্তু প্রকৌশলীদের পদে ঠিক উল্টো চর্চা চলছে”।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আলোচনার কমিশনে ডিপ্লোমা প্রতিনিধিদের উপস্থিতি সত্ত্বেও তাদের মধ্যে কয়েকজন সড়ক অবরোধের উসকানি দিচ্ছেন। বিশেষভাবে আইডিইবি সদস্য মো. নাজিম সরকার ও মো. ইউনুস-এর নাম উল্লেখ করে তারা বলেন, নাজিম আলোচনার টেবিলে বসার পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের গ্রুপে সহিংস কর্মসূচি ঘোষণার আহ্বান জানাচ্ছেন। অপরদিকে, ইউনুসকে “আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ও বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশলী পরিষদের সদস্য” বলে দাবি করা হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তোলেন—

‘যদি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব না হয়, তবে আলোচনার টেবিলে তারা এলেন কেন? গায়ের জোরে দাবি আদায়ের চেষ্টা করলে আলোচনার প্রক্রিয়াকে কেন ব্যবহার করা হলো?’ ডিপ্লোমাধারীদের সাম্প্রতিক রেলপথ অবরোধ কর্মসূচিকে শিক্ষার্থীরা ‘জন-দুর্ভোগ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দিয়ে প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত