ডাকসু নির্বাচন নিয়ে নানা অভিযোগ, জবাবদিহি চায় ছাত্রদল

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ৫৯
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪: ০১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে নানা অনিয়ম ও অসঙ্গতির অভিযোগ তুলেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল। এসব অভিযোগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে না পারলে নির্বাচন পুনর্বিবেচনা ও প্রয়োজনে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে এসব অভিযোগ করেন।

আবিদুল বলেন, যে অন্যায় আমাদের সঙ্গে হয়েছে, তার বিচার আমরা চাই। প্রয়োজনে ডাকসু নির্বাচন পুনর্বিবেচনার সুযোগ আমরা আদায় করব।

এসময় আবিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পদ্ধতিগত নানা গাফিলতি ও অসঙ্গতির কারণে শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তার দাবি, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপেই ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীরা বাধার মুখে পড়েছেন।

ছাত্রদলের প্রধান অভিযোগগুলো হলো—

১. ভোটার তালিকা ও ব্যালট কারচুপি: অনেক ভোটারের নামে আগেই স্বাক্ষর দিয়ে রাখা হয়, আবার নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ক্রসচিহ্ন দেয়া ব্যালট পেপার ভোটারদের সরবরাহ করা হয়। ভোটার উপস্থিতি ও ভোট প্রদানের হারে বড় ধরনের অসামঞ্জস্য দেখা গেছে। এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে ভোটার তালিকা ও সিসিটিভি ফুটেজ চাইলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

২. ২০১৯ সালের মতো এবারও ব্যালট পেপারে ক্রমিক নম্বর ছিল না। কত ব্যালট ছাপানো হয়েছে, কত ব্যবহার বা বাতিল হয়েছে—এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এমনকি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টরাও তথ্য পাননি।

৩. নির্বাচনের একদিন আগে নীলক্ষেতের গাউসুল আজম মার্কেটের একটি ছাপাখানায় বিপুল সংখ্যক ব্যালট পেপার অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এতে নকল ব্যালট দিয়ে কারচুপির অভিযোগ ওঠে।

৪. ভোট গণনা সফটওয়্যারের নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা হলেও প্রার্থী ও ভোটারদের অবহিত করা হয়নি। গণনায় পোলিং এজেন্টদের কার্যত নিষ্ক্রিয় রাখা হয়েছে।

৫. নির্ধারিত সময়ে আইডি কার্ড না দেওয়ায় অনেক পোলিং এজেন্ট কেন্দ্রে ঢুকতে পারেননি। আবার ভোটের আগের রাতে এজেন্ট তালিকা প্রকাশ করে প্রার্থীদের প্রস্তাবিত অনেক এজেন্টকে বাদ দেওয়া হয়।

৬. ভোটকেন্দ্র সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি: প্রার্থীদের জানানো হয়েছিল ৮টি কেন্দ্রে ভোট হবে। কিন্তু ভোটের দিন দেখা যায় ১৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। ফলে অধিকাংশ প্রার্থী যথাযথভাবে এজেন্ট নিয়োগ করতে পারেননি।

৭. নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোলিং অফিসার নিয়োগ দিয়েছে বলে অভিযোগ। এদের অনেকেই আচরণবিধি সম্পর্কে ধারণা না থাকায় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগ তুলেছেন।

৮. বিএনসিসি, রোভার স্কাউট ও গার্লস গাইড সদস্যদের সহায়তায় বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করানো হয়েছে। কিছু শিবিরকর্মীকে শিক্ষার্থীরা আটক করে প্রক্টর অফিসে দেয়।

৯. ভোটে স্বচ্ছ বাক্স ব্যবহার না করায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সকাল ১১টার পর থেকে অনেক কেন্দ্রে মার্কার পেন না থাকায় ভোটারদেরকে বলপেন দিয়ে ক্রসচিহ্ন দিতে হয়েছে। ফলে অনেক ভোট ওএমআর মেশিনে সঠিকভাবে গণনা হয়নি। এতে পরিকল্পিতভাবে ভোট নষ্টের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা।

১০. ভোটার চিহ্নিত করার কালি অস্থায়ী হওয়ায় একজন ব্যক্তি একাধিকবার ভোট দিয়েছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

আবিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের ওপর অন্যায় করা হয়েছে। এর দায়ভার কে নেবে? প্রতিটি ধাপে আমাদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকি ব্যালট পেপার দেয়ার সময়ও আমাদের প্রার্থীরা পোলিং অফিসারদের হয়রানির শিকার হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন যদি অনিয়মের অভিযোগগুলোর যথাযথ জবাব দিতে ব্যর্থ হয়, তবে ২০২৫ সালের ডাকসু নির্বাচন পুনর্বিবেচনার সুযোগ অবশ্যই থাকবে এবং সেটি আদায় করা হবে।

ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের দাবি, আইন অনুযায়ী বারবার অভিযোগ জানানোর পরও প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে কালক্ষেপণ করেছে। তাদের মতে, এভাবে নির্বাচন হলে তা ইতিহাসে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ নির্বাচন হিসেবেই বিবেচিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের নেতারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার রক্ষায় তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেবেন।

ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আইআরআই প্রতিনিধি দলের বৈঠক

শুক্র-শনিবারও চলবে বিমানবন্দরের শুল্কায়ন কার্যক্রম

প্রধান উপদেষ্টার আদেশে জুলাই সনদের আইনি রূপ দিতে হবে

নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা শুরুর দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি

আইআরআই’র সঙ্গে নির্বাচনের প্রক্রিয়া ও ইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে আলোচনা এনসিপির

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত