ঢাবির তিন শিক্ষার্থীর কোরআন অবমাননা, প্রশাসন নিরব!

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ২২: ০৫

ইসলাম, কোরআন, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এবং মা আয়েশাকে অবমাননা করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তিন জন হলেন মেহতাজুর রহমান (আইবিএ-২১), তাসনিয়া ইসলাম (আইবিএ-২১) এবং আবরার ফাইয়াজ (সিএসই-২১)। তিন জনই ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী।

সম্প্রতি দেশজুড়ে আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী ধর্ষক শ্রীশান্ত রায় এবং তার বন্ধুদের গ্রুপচ্যাটের স্ক্রিনশট থেকে দেখা যায়, যেখানে ইসলাম, মহানবী (সা.) এবং মুসলমান নারী, বিশেষত হিজাবি নারীদের নিয়ে বিকৃত ও নোংরা কৌতুক, ছবি ও মন্তব্যে ভরপুর ছিল। জানা যায়, গ্রুপটি বানানোর উদ্দেশ্য ছিল ইসলামকে ব্যঙ্গ করা এবং মুসলমানদের অপমান করা।

বিজ্ঞাপন

সেই একই গ্রুপের তিন সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ'র শিক্ষার্থী মেহতাজুর রহমান, তাসনিয়া ইসলাম (বিবিএ ৩০) এবং সিএসই'র আবরার ফাইয়াজ। গ্রুপচ্যাট বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তারা শুধু ঐ গ্রুপেই ছিল না, বরং সক্রিয়ভাবে অংশ নেয় ইসলামের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াতে।

আইবিএ'র একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঘটনার পর তারা প্রশাসনের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। কিন্তু আইবিএ প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাদেরকে ‘সেফ এক্সিট’ দেয়ার চেষ্টাসহ বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, যেখানে বুয়েট এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ইসলাম অবমাননাকারী শিক্ষার্থীদের বরখাস্ত করেছে, সেখানে সব প্রমাণ থাকার পরও ঢাবির আইবিএ প্রশাসন কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সেটি বোধগম্য নয়।

আইবিএ'র এমন আচরণ শুধু ন্যায়বিচারকে অপমান করে না, বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধ ও নৈতিক অবস্থানেরও সরাসরি বিরোধিতা করে বলেও মন্তব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের। একজন শিক্ষার্থী ক্ষোভের সাথে বলেন, ‘আমরা শুনতে পাচ্ছি সিএসসি ডিপার্টমেন্ট এবং আইবিএ অথোরিটির কেউ কেউ তাদের সেইফ এক্সিট দিতে চায়। এরা করা যারা ধর্ম অবমাননা এবং হিজাবি নারীদের নিয়ে এই ধরণের ব্যাঙ্গচিত্র এবং কৌতুককারীকে শেল্টার দিতে চায়। এদের কাছে সাধারণ শিক্ষারহীরা কি নিরাপদ?’

এ বিষয়ে জানতে আইবিএ'র ডিরেক্টর প্রফেসর শাকিল হুদার কাছে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) জানতে জানগে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ইতোমধ্যেই ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে আইবিএ থেকে। দুয়েকদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবে। এরপর সেই প্রতিবেদন প্রক্টর অফিসে দিবো। প্রক্টর অফিস প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।

ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ধর্ম তথা ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকে। ডাকসুর পক্ষ থেকেও আমরা এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

অভিযুক্ত তাসনিয়া ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১২টার আগে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই তিনি ফোন কেটে দেন। এবং পরবর্তীতে আবার কল করা হলে তিনি কোনো সাড়া দেননি। অন্যদিকে অভিযুক্ত মেহতাজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখন কথা বলতে চাইছি না।

আজকে এই বিষয় বিশবিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সাইন্স ভবন থেকে একটা মিছিল বের করে প্রক্টর অফিসার সামনে জড়ো হয়। প্রায় ২ ঘণ্টা তারা প্রক্টর অফিস এর সামনে অবস্থান গ্রহণ করে। প্রক্টর কে লিখিত অভিযোগ দায়ের এবং দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এই বিষয় একজন সাধারণ শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা বিষয়বিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এই ধরণের ইসলাম এবং মুসলিম নারীদের নিয়ে জঘন্য রকম কথা বার্তা বলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বুয়েট প্রশাসন, NSU প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও ঢাবি প্রশাসন এখনো নিশ্চুপ। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই বিষয় ঢাবি প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ আশা করছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত