বিলুপ্তপ্রায় কাকাপো

মোখতারুল ইসলাম মিলন
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫, ১৪: ২৩

পৃথিবীতে এমন কিছু প্রাণী রয়েছে, যাদের অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য ও অস্তিত্ব আমাদের অবাক করে। এমনই একটি প্রাণী হলো কাকাপো (Strigops habroptilus), যা উড়তে অক্ষম এক প্রজাতির তোতাপাখি।

কাকাপোর বিবর্তন ও বাসস্থান

বিজ্ঞাপন

কাকাপো নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় পাখি এবং এর বিবর্তন ঘটেছে এমন এক পরিবেশে, যেখানে প্রাণিজ শিকারি খুব কম ছিল। এ কারণেই কাকাপোর উড়তে অক্ষম হওয়া এবং ভূমিতে চলাফেরা করার বৈশিষ্ট্যটি বিকশিত হয়েছে।

কাকাপো দিনের বেলা লুকিয়ে থাকে এবং রাতে খাবার খুঁজতে বের হয়। এর গায়ের সবুজ-হলুদ রঙে মেশানো পালকগুলো প্রাকৃতিক ছদ্মবেশ হিসেবে কাজ করে, যা এটিকে গাছপালা ও লতাপাতার সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করে।

কাকাপো একসময় নিউজিল্যান্ডের বিস্তৃত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিল। কিন্তু মানুষের আগমন এবং বিড়াল, ইঁদুর ও কুকুর জাতীয় প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার কারণে এর সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে কাকাপো শুধু কিছু নির্দিষ্ট দ্বীপে পাওয়া যায়, যেখানে প্রাকৃতিক শিকারি নেই এবং সেগুলোকে সংরক্ষণ কর্মসূচির আওতায় রাখা হয়েছে।

শারীরিক বৈশিষ্ট্য

কাকাপো বিশ্বের সবচেয়ে ভারী তোতাপাখি। এদের ওজন ২ থেকে ৪ কিলোগ্রামের মধ্যে হয়। এই বিশাল ওজনের কারণেই এরা উড়তে পারে না। কাকাপোর ডানা থাকলেও সেগুলো শুধু ভারসাম্য বজায় রাখা এবং অল্প দূরত্বে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। এদের পা শক্তিশালী এবং এরা ভূমিতে বেশ দ্রুতগতিতে চলাফেরা করতে পারে। কাকাপোর আরেকটি অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য হলো এদের শরীর থেকে একটি মিষ্টি ও মৃদু গন্ধ বের হয়, যা কুকুর ও অন্যান্য শিকারি প্রাণী সহজেই শনাক্ত করতে পারে। গন্ধের কারণে কাকাপো শিকারিদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়।

প্রজনন প্রক্রিয়া

কাকাপোদের প্রজনন প্রক্রিয়া বেশ অদ্ভুত এবং ধীর। এরা ‘লেকিং’ প্রজনন কৌশল ব্যবহার করে, যেখানে পুরুষ কাকাপোরা মাটিতে গর্ত তৈরি করে এবং বিশেষ ধরনের গভীর ডাক (বুমিং) দিয়ে মেয়েদের আকৃষ্ট করে। পুরুষ কাকাপোদের এই ডাক কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা যায়। মেয়েরা পুরুষদের ডাকে সাড়া দিয়ে তাদের গর্তের দিকে এগিয়ে আসে, কিন্তু পুরুষরা মেয়েদের সঙ্গে মিলনের পর আর তাদের কোনো দায়িত্ব নেয় না। মেয়েরা নিজেরাই ডিম পাড়ে ও বাচ্চাদের দেখাশোনা করে। এদের প্রজননের হার খুবই ধীর। কাকাপোরা বছরে একবার মাত্র প্রজনন করে, তাও যদি তাদের খাবারের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকে। এ কারণে এদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ানো কঠিন।

বিলুপ্তির মুখোমুখি ও সংরক্ষণ প্রচেষ্টা

১৯৭০-এর দশকে কাকাপোর সংখ্যা মাত্র ৫০-এর নিচে নেমে আসে। তবে নিউজিল্যান্ড সরকার এবং পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থাগুলো তাদের টিকে থাকার জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কাকাপোর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য এদের নির্দিষ্ট দ্বীপে রাখা হয়েছে। বর্তমানে কাকাপোর সংখ্যা ২০০-এর কিছু বেশি। সংরক্ষণ প্রচেষ্টা চললেও কাকাপোর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।

জৈন্তাপুরে ‘বিজিবির’ গুলিতে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ

নির্বাচনের আগে উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যেও শুদ্ধি অভিযান জরুরি

দুদিনব্যাপী মেহেদী উৎসব ইবি ‘ছাত্রী সংস্থা’র প্রকাশ্য কার্যক্রম শুরু

বার্ষিক পরীক্ষার আগেই স্কুল-কলেজ ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের দাবি

‘মুসলমানদের মতো হইয়ো না’ বলা জাভেদকে ধুয়ে দিলেন লাকি আলী

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত