ডা. মো. এনামুল হক
ফলের প্রধান মাস জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়। এ সময়ে আম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, তরমুজ, পেয়ারা ইত্যাদি বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু এসব দেশীয় সুস্বাদু ফল পরিপক্ব হওয়ার আগেই বাজারে আসছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার আশায় বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে ফল পাকিয়ে বিক্রি করছে। মৌসুমি এ ফলগুলো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এসব ঝুঁকি এড়াতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
প্রথমত, ফল পরিপক্ব হওয়ার আগে না কেনা। এ ক্ষেত্রে সরকারি ও কৃষি বিভাগের নির্দিষ্ট জাতের ফল পাকার সময়সীমা অনুসরণ করে কেনা উচিত। দ্বিতীয়ত, ফল কেনার সময় পাকা ও সতেজ ফল বেছে নিতে হবে। ফরমালিন বা ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। সম্ভব হলে অরগানিক বা স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত ফল কিনুন।
তৃতীয়ত, অসাধু ব্যবসায়ীরা ইথোফেন ও ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে কাঁচা ফল পাকিয়ে থাকে, যা কিডনি, লিভার, পেটের সমস্যাসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতিসাধন করতে পারে।
অনেক সময় ফলের গায়ে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশও থাকতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এসব পদার্থের ক্ষতিকর দিক দূর করতে ফল খাওয়ার আগে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন এবং ভালোভাবে ধুয়ে নিন। চতুর্থত, অতিরিক্ত পরিমাণে ফল খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। যেমন অতিরিক্ত লিচু খেলে শিশুদের হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে ও সুষম খাদ্যের অংশ হিসেবে ফল খাওয়া উচিত।
পঞ্চমত, আমাদের নিজস্ব উঠানে, ছাদে বা খোলা জায়গায় মৌসুমি ফলের গাছ লাগানোও হতে পারে নিরাপদ ফলের বিকল্প একটি সহজ সমাধান। এটি শুধু স্বাস্থ্য সুরক্ষা নয়, বরং আমাদের সন্তানদের জন্য একটি সচেতন প্রজন্ম গড়ার শিক্ষাও বয়ে আনবে।
ষষ্ঠত, অপরিপক্ব ফলের আমদানি বন্ধে ভোক্তা অধিকারের উচিত নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করা। এখন ফলের মৌসুম। বাজারে ফল আসবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন ফলগুলো পরিপক্ব আর কোনগুলো অপরিপক্ব, এ বিষয়টা দেখা প্রয়োজন। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী লাভের আশায় পাকার আগেই অপরিপক্ব ফল বাজারে ছাড়ে। ফলে এসব ফল খেয়ে ভোক্তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। অপরিপক্ব ফল যেন বাজারে না আসতে পারে, সেজন্য সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বাজারে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার ঠেকাতে হলে কঠোর নজরদারি, মোবাইল কোর্ট, নিয়মিত রাসায়নিক পরীক্ষা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে প্রয়োজন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। যদি কৃষক বুঝতে পারে, কোন রাসায়নিক দ্রব্য কতটা ক্ষতিকর এবং কোন প্রাকৃতিক উপায়ে ফল চাষ লাভজনক হতে পারে, তবে তারাও ধীরে ধীরে রাসায়নিক দ্রব্যের ওপর নির্ভরতা থেকে সরে আসবেন। এখানে মিডিয়া, সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় প্রশাসন ভূমিকা রাখতে পারে সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়ে। সবশেষে, ফল সংরক্ষণের সময় পরিষ্কার ও শুষ্ক পরিবেশ বজায় রাখা দরকার, যাতে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের সংক্রমণ না ঘটে। এই সাবধানতাগুলো মেনে চললে মৌসুমি ফল ভোগ করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেও নিরাপদ থাকা সম্ভব।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ
মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন অ্যান্ড হসপিটাল, উত্তরা
ফলের প্রধান মাস জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়। এ সময়ে আম, লিচু, কাঁঠাল, আনারস, তরমুজ, পেয়ারা ইত্যাদি বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু এসব দেশীয় সুস্বাদু ফল পরিপক্ব হওয়ার আগেই বাজারে আসছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার আশায় বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে ফল পাকিয়ে বিক্রি করছে। মৌসুমি এ ফলগুলো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এসব ঝুঁকি এড়াতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
প্রথমত, ফল পরিপক্ব হওয়ার আগে না কেনা। এ ক্ষেত্রে সরকারি ও কৃষি বিভাগের নির্দিষ্ট জাতের ফল পাকার সময়সীমা অনুসরণ করে কেনা উচিত। দ্বিতীয়ত, ফল কেনার সময় পাকা ও সতেজ ফল বেছে নিতে হবে। ফরমালিন বা ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। সম্ভব হলে অরগানিক বা স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত ফল কিনুন।
তৃতীয়ত, অসাধু ব্যবসায়ীরা ইথোফেন ও ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে কাঁচা ফল পাকিয়ে থাকে, যা কিডনি, লিভার, পেটের সমস্যাসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতিসাধন করতে পারে।
অনেক সময় ফলের গায়ে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশও থাকতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এসব পদার্থের ক্ষতিকর দিক দূর করতে ফল খাওয়ার আগে এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন এবং ভালোভাবে ধুয়ে নিন। চতুর্থত, অতিরিক্ত পরিমাণে ফল খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। যেমন অতিরিক্ত লিচু খেলে শিশুদের হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে ও সুষম খাদ্যের অংশ হিসেবে ফল খাওয়া উচিত।
পঞ্চমত, আমাদের নিজস্ব উঠানে, ছাদে বা খোলা জায়গায় মৌসুমি ফলের গাছ লাগানোও হতে পারে নিরাপদ ফলের বিকল্প একটি সহজ সমাধান। এটি শুধু স্বাস্থ্য সুরক্ষা নয়, বরং আমাদের সন্তানদের জন্য একটি সচেতন প্রজন্ম গড়ার শিক্ষাও বয়ে আনবে।
ষষ্ঠত, অপরিপক্ব ফলের আমদানি বন্ধে ভোক্তা অধিকারের উচিত নিয়মিত বাজার পর্যবেক্ষণ করা। এখন ফলের মৌসুম। বাজারে ফল আসবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন ফলগুলো পরিপক্ব আর কোনগুলো অপরিপক্ব, এ বিষয়টা দেখা প্রয়োজন। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী লাভের আশায় পাকার আগেই অপরিপক্ব ফল বাজারে ছাড়ে। ফলে এসব ফল খেয়ে ভোক্তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। অপরিপক্ব ফল যেন বাজারে না আসতে পারে, সেজন্য সরকারিভাবে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বাজারে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার ঠেকাতে হলে কঠোর নজরদারি, মোবাইল কোর্ট, নিয়মিত রাসায়নিক পরীক্ষা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে প্রয়োজন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। যদি কৃষক বুঝতে পারে, কোন রাসায়নিক দ্রব্য কতটা ক্ষতিকর এবং কোন প্রাকৃতিক উপায়ে ফল চাষ লাভজনক হতে পারে, তবে তারাও ধীরে ধীরে রাসায়নিক দ্রব্যের ওপর নির্ভরতা থেকে সরে আসবেন। এখানে মিডিয়া, সামাজিক সংগঠন ও স্থানীয় প্রশাসন ভূমিকা রাখতে পারে সচেতনতামূলক প্রচার চালিয়ে। সবশেষে, ফল সংরক্ষণের সময় পরিষ্কার ও শুষ্ক পরিবেশ বজায় রাখা দরকার, যাতে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের সংক্রমণ না ঘটে। এই সাবধানতাগুলো মেনে চললে মৌসুমি ফল ভোগ করার পাশাপাশি স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেও নিরাপদ থাকা সম্ভব।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ
মেডিকেল কলেজ ফর উইমেন অ্যান্ড হসপিটাল, উত্তরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডের পর স্থগিত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আগামী ২৭ অক্টোবর পালিত হবে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।
৫ ঘণ্টা আগে১৮৪৬ সালের ১৬ অক্টোবর চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী দিন। বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এক রোগীর শরীরে ব্যথাহীন অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। দাঁতের চিকিৎসক ডা. উইলিয়াম মর্টন রোগী গিলবার্ট অ্যাবটের মুখে ইথার গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে প্রয়োগ করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই রোগী
৫ ঘণ্টা আগেকরোনা ভ্যাকসিনের দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে রয়েছে নানা ভুল ধারণা এবং অন্ধবিশ্বাস। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্ক্যাবিসসহ কিছু সংক্রামক চর্মরোগ মহামারির আকার ধারণ করেছে। বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে, করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করার ফলে তাদের বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হচ্ছে। আবার
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগবালাই আবির্ভাব হয়। বাংলাদেশে হেমন্তকালের শেষের দিকে শীতকাল খুব কাছাকাছি চলে আসে। ঋতু পরিবর্তনের এ সময় তাপমাত্রার ওঠানামা ও শুষ্ক বাতাসের কারণে সর্দি-কাশি, জ্বরসহ অন্যান্য রোগব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা
৬ ঘণ্টা আগে