ডেঙ্গুতে মৃত্যুর অর্ধেকই ভর্তির ২৪ ঘণ্টায়: স্বাস্থ্য বিভাগ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৬

চলতি বছর ডেঙ্গুতে যেসব রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তার অর্ধেকই হয়েছে হাসপাতালে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। দেরিতে হাসপাতালে আসায় এমন অকাল মৃত্যুর কারণ বলে জানিয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ।

চলতি বছর এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ১১৪ জনের মৃত্যু পর্যালোচনা করে এমন তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

বিজ্ঞাপন

সোমবার বিকেলে মহাখালীর স্বাস্থ্য ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. হালিমুর রশিদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ২০২৪ সালের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার তুলনামূলক কম। গত বছর যেখানে মৃত্যুহার ছিল শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ, এবার সেই হার শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ। চলতি বছর সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ঢাকা ও বরগুনা জেলায়। ১১৪ জনের মধ্যে ৩৩ জন মারা গেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, আর কুর্মিটোলা হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের।

হালিমুর রশিদ জানান, মৃতদের মধ্যে ৫৭ জন তথা ৫০ শতাংশ মারা গেছেন ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। এছাড়া ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে ভর্তির ৪৮ ঘণ্টায় এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেছেন ৫ শতাংশ। বাকিরা পরবর্তী সময়ে মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ৫০ শতাংশ করে পুরুষ ও নারী।

তিনি জানান, মৃতদের ৪০ শতাংশ অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। যা মৃত্যুর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। মৃত্যুর বড় কারণ শক সিনড্রোম। ৫৬ শতাংশই মারা গেছে এই কারণে। গড়ে মৃত্যুর সময় ছিল আড়াই দিন। অধিকাংশ রোগী জ্বর নিয়ে হাসপাতালে আসেন ৩ থেকে ৬ দিনের মধ্যে।

বয়সভিত্তিক মৃত্যু পর্যালোচনায় দেখা যায়, মৃতদের বেশিরভাগই ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী। মৃতদের মধ্যে ১৯ জনই এ বয়সী। এছাড়াও শূণ্য থেকে ১০ বছর বয়সী রয়েছে ১৬ জন।

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বলেন, 'জুলাই থেকে সংক্রমণ বাড়তে থাকা, কিন্তু চলতি সেপ্টেম্বরে প্রকোপ সবচেয়ে বেশি বেড়ে যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার বন্ধ থাকায় প্রকৃত চিত্র না আসায় বিরূপ প্রভাব পড়ে সমাজে। ব্যবস্থাপনায় কোনো ঘাটতি নেই। কিট কিংবা স্যালাইনের কোনো সংকট নেই।'

তিনি বলেন, 'মৃত্যু পর্যালোচনায় আমরা জোর দিয়েছি। ডেঙ্গুতে আগেরকার মৃত্যুর সঙ্গে বর্তমানের পার্থক্য রয়েছে। বেশিরভাগই হাসপাতালে ভর্তির অল্প সময়ে মারা যাচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, রোগীর বয়সের ওপর অনেককিছু নির্ভর করে। অনেকে একাধিক জটিল রোগ রয়েছে। এমন কোনো অসুখ থাকে, যাতে তার মৃত্যু-ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।'

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত