ঘাড় ব্যথার উপসর্গ

ড. মো. সফিউল্যাহ্ প্রধান
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ১২: ১৪

ঘাড়ব্যথা একটি সাধারণ অভিযোগ। বয়স বাড়লে অনেকেই ঘাড়ব্যথায় ভুগে থাকেন। ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ করেই ঘাড়ের একপাশে প্রচণ্ড ব্যথা, কিংবা কাজ করতে করতে হঠাৎ ঘাড়ের একদিকে প্রবল টান, কিছুতেই ঘাড় ঘোরানো যায় না। এ রকম সমস্যায় অনেকেই পড়েছেন। এর কারণ হিসেবে হতে পারে অনেক কিছু। দুর্বল দেহভঙ্গির কারণে ঘাড়ের মাংসপেশিগুলো শক্ত হয়ে যায়। যারা ঘাড় বাঁকিয়ে কম্পিউটারে কাজ করেন, কিংবা লেখার টেবিলে কুঁজো হয়ে বসেন, তাদের এ সমস্যা বেশি হয়।

বিজ্ঞাপন

ঘাড়ে ব্যথার নানা ধরনের কারণ রয়েছে, যেমন যেকোনো ধরনের আঘাত লাগা, পজিশনাল অর্থাৎ ঘাড়ের নড়াচড়ার কারণে ব্যথা বা খারাপ পজিশনে ঘুমিয়ে পড়া, হাড়ের ইনফেকশন, অস্টিওপরোসিস, টিউমার, সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস প্রভৃতি। তবে সাধারণত বয়স বাড়লে ঘাড়ে ব্যথা সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিসের জন্য বেশি হয়। যাদের বয়স ৪৫ বছরের বেশি, তাদের তাদের মধ্যেই এ রোগ খুব বেশি দেখা যায়। সার্ভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস ঘাড়ের দুই হাড়ের মধ্যবর্তী তরুণাস্থির বার্ধক্যজনিত পরিবর্তনের ফলে হয়। এ ছাড়া অস্টিও আর্থ্রাইটিস ঘাড়ব্যথার একটি সাধারণ কারণ।

যদি ঘাড়ব্যথার সঙ্গে বাহু কিংবা হাতে অবশ ভাব দেখা দেয়, কিংবা হাতের শক্তি কমে যায়, অথবা কাঁধ ব্যথা করে কিংবা ব্যথা হাতের দিকে নামে, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষার্থী কিংবা কর্মজীবী, প্রায় সবারই ঝুঁকি আছে ঘাড়ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার, বা ঘাড়ের পেশি শক্ত হয়ে যাওয়ার। শোয়া-বসার অবস্থানের সমস্যা বা ‘ব্যাড পশ্চার’, দীর্ঘ সময় বসে থাকা, একটানা ঘাড় বাঁকা করে স্মার্টফোন চালানো প্রভৃতি অসংখ্য কারণ আছে এই ঘাড়ব্যথা হওয়ার পেছনে।

এ ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা, পেশিতে টান পড়া প্রভৃতিও ঘাড়ব্যথা হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ। ঘাড়ব্যথা সাধারণত দুই ধরনের। ‘অ্যাকিউট’ বা স্বল্প সময়ের জন্য এবং ‘ক্রনিক’ বা দীর্ঘমেয়াদি।

ঘাড় ব্যথার উপসর্গ

* ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা হওয়া।

* ব্যথা অনেক সময় হাতের দিকে ছড়িয়ে পড়া।

* ঘাড়ের ব্যথাসহ হাতের আঙুল ঝিনঝিন করা।

* ঘাড়ে ব্যথাসহ হাত বা হাতের আঙুলে অবশ-অবশ ভাব হওয়া।

* ঘাড় নড়াতে না পারা এবং ঘোড়ালে বা পেছনে বাঁকা করলে ব্যথা বৃদ্ধি পাওয়া।

* ঘাড়ের মাংসপেশি কামড়ানো।

* ঘাড়ের পেছনের ব্যথা মাঝে মাঝে শরীরের অন্য স্থানে ছড়িয়ে যায়, যেমন কাঁধে অথবা মাথার পেছনের দিকে।

* সারভাইকোজেনিক মাথাব্যথা, মাথার পেছনে ও দুপাশে হতে পারে।

* মাথা ঘোরানো।

* মেজাজ খিটখিটে হওয়া বা অস্থিরতা বোধ করা।

লেখক : বাত, ব্যথা ও প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞ

ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত