ডা. ফাতেমা বেগম
ডিম্বাশয় বা ওভারি (Ovary) হচ্ছে নারীর প্রজননতন্ত্রের একটি অংশ। স্বাভাবিক নারীর শরীরে দুটি ডিম্বাশয় থাকে। পিসিওএস ডিম্বাশয়ের একটি রোগ। ‘পলি’ অর্থ অনেক এবং ‘সিস্ট’ অর্থ আবরণবেষ্টিত একটি অংশ, যার মধ্যে তরলজাতীয় পদার্থ থাকে। ডিম্বাশয়ে যখন এমন অসংখ্য সিস্ট থাকে, তখন ওই ডিম্বাশয়কে পলিসিস্টিক ওভারি বলে। এই সমস্যাটির নাম পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম। চার থেকে ছয় শতাংশ নারী এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাদের ৭৫ শতাংশ রোগীর নিয়মিত ডিম্ব নিঃসরণ হয় না।
দীর্ঘমেয়াদিভাবে তারা নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হয়ে থাকে। ‘পিসিওএস’ নির্দিষ্ট কোনো একটি কারণে হয় না। শরীরের হরমোন গ্রন্থির বিপাকীয় প্রক্রিয়ার অসামঞ্জস্য, বংশগত প্রসব, শরীরে অতিরিক্ত চর্বিসহ আরও বিভিন্ন কারণের সমন্বয়ে এই রোগটি হয়ে থাকে। ফলে পুরুষ হরমোনের আধিক্য দেখা দেয়। এতে নারী হরমোনের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া ডিম্ব নিঃসরণ বাধাগ্রস্ত হয়।
লক্ষণ: অনিয়মিত মাসিক, দীর্ঘদিন মাসিক বন্ধ থাকা এবং একবার শুরু হলে অনেক দিন ধরে চলতে থাকা। ওজনাধিক্য। মুখমণ্ডল, বুক ও তলপেটে পুরুষের মতো লোম গজানো। চামড়ার রং কালচে হয়ে যাওয়া। বন্ধ্যাত্ব। মুখে ব্রণ ওঠা। চুল পড়া।
বিপাকীয় সমস্যা: ডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকি। উচ্চ রক্তচাপ। কোলেস্টেরলের উচ্চমাত্রা। হৃদরোগের ঝুঁকি।
যেভাবে রোগ নির্ণয় করা হয়: দীর্ঘায়িত মাসিক চক্র ও ডিম্ব নিঃসরণ না হওয়া। পুরুষ হরমোনের আধিক্যের লক্ষণ বা মুখে ও চিবুকে লোম ওঠা। আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে পলিসিস্টিক ওভারির (পিসিওএস) উপস্থিতি। এই লক্ষণগুলোর যেকোনো দুটি উপস্থিত থাকলে ‘পিসিওএস’ বলা হয়।
উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা: মাসিকের অনিয়ম, জীবনধারায় পরিবর্তন, নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং ওজন স্বাভাবিক রাখা এ রোগের প্রথম চিকিৎসা ধাপ। পাঁচ শতাংশ ওজন কমলে মাসিকের চক্র স্বাভাবিক হয়ে যায়। পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ ওজন কমলে নিয়মিত ডিম্ব নিঃসরণ ও অন্যান্য বিপাকীয় সমস্যার সমাধান সম্ভব। ইনসুলিন-সংবেদী ওষুধ মেটফরমিন গ্রহণে ইনসুলিন ও পুরুষের হরমোনের আধিক্য কমে। জন্মবিরতিকরণ ওষুধ।
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা: ওজন হ্রাস। ক্লোমিফেন লেট্রোজল সেবন। হরমোন ইনজেকশন (ডিম্ব নিঃসরণের জন্য)। আইভিএফ বা টেস্ট টিউবের মাধ্যমে সন্তান গ্রহণ।
অপারেশন করালে ভালো হয়: ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে সিস্টিগুলোকে পাংকচার করা। এর প্রভাব কিছুদিন থাকে, কিন্তু পুরোপুরি ভালো হয় না।
দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণ: যেহেতু এই রোগীদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরলের দরুন হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে, তাই নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকা প্রয়োজন। স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের সঙ্গে এ রোগের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
প্রতিরোধ কি করা যাবে: যেহেতু জিনগত কারণে এ রোগের উৎপত্তি, তাই প্রতিরোধ করা যাবে না। কিন্তু সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবকে ব্যাহত করা যেতে পারে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, প্রসূতিবিদ্যা ও স্ত্রীরোগ বিভাগ
সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ
ডিম্বাশয় বা ওভারি (Ovary) হচ্ছে নারীর প্রজননতন্ত্রের একটি অংশ। স্বাভাবিক নারীর শরীরে দুটি ডিম্বাশয় থাকে। পিসিওএস ডিম্বাশয়ের একটি রোগ। ‘পলি’ অর্থ অনেক এবং ‘সিস্ট’ অর্থ আবরণবেষ্টিত একটি অংশ, যার মধ্যে তরলজাতীয় পদার্থ থাকে। ডিম্বাশয়ে যখন এমন অসংখ্য সিস্ট থাকে, তখন ওই ডিম্বাশয়কে পলিসিস্টিক ওভারি বলে। এই সমস্যাটির নাম পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম। চার থেকে ছয় শতাংশ নারী এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাদের ৭৫ শতাংশ রোগীর নিয়মিত ডিম্ব নিঃসরণ হয় না।
দীর্ঘমেয়াদিভাবে তারা নানা স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্মুখীন হয়ে থাকে। ‘পিসিওএস’ নির্দিষ্ট কোনো একটি কারণে হয় না। শরীরের হরমোন গ্রন্থির বিপাকীয় প্রক্রিয়ার অসামঞ্জস্য, বংশগত প্রসব, শরীরে অতিরিক্ত চর্বিসহ আরও বিভিন্ন কারণের সমন্বয়ে এই রোগটি হয়ে থাকে। ফলে পুরুষ হরমোনের আধিক্য দেখা দেয়। এতে নারী হরমোনের স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া ডিম্ব নিঃসরণ বাধাগ্রস্ত হয়।
লক্ষণ: অনিয়মিত মাসিক, দীর্ঘদিন মাসিক বন্ধ থাকা এবং একবার শুরু হলে অনেক দিন ধরে চলতে থাকা। ওজনাধিক্য। মুখমণ্ডল, বুক ও তলপেটে পুরুষের মতো লোম গজানো। চামড়ার রং কালচে হয়ে যাওয়া। বন্ধ্যাত্ব। মুখে ব্রণ ওঠা। চুল পড়া।
বিপাকীয় সমস্যা: ডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকি। উচ্চ রক্তচাপ। কোলেস্টেরলের উচ্চমাত্রা। হৃদরোগের ঝুঁকি।
যেভাবে রোগ নির্ণয় করা হয়: দীর্ঘায়িত মাসিক চক্র ও ডিম্ব নিঃসরণ না হওয়া। পুরুষ হরমোনের আধিক্যের লক্ষণ বা মুখে ও চিবুকে লোম ওঠা। আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে পলিসিস্টিক ওভারির (পিসিওএস) উপস্থিতি। এই লক্ষণগুলোর যেকোনো দুটি উপস্থিত থাকলে ‘পিসিওএস’ বলা হয়।
উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা: মাসিকের অনিয়ম, জীবনধারায় পরিবর্তন, নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং ওজন স্বাভাবিক রাখা এ রোগের প্রথম চিকিৎসা ধাপ। পাঁচ শতাংশ ওজন কমলে মাসিকের চক্র স্বাভাবিক হয়ে যায়। পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ ওজন কমলে নিয়মিত ডিম্ব নিঃসরণ ও অন্যান্য বিপাকীয় সমস্যার সমাধান সম্ভব। ইনসুলিন-সংবেদী ওষুধ মেটফরমিন গ্রহণে ইনসুলিন ও পুরুষের হরমোনের আধিক্য কমে। জন্মবিরতিকরণ ওষুধ।
বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা: ওজন হ্রাস। ক্লোমিফেন লেট্রোজল সেবন। হরমোন ইনজেকশন (ডিম্ব নিঃসরণের জন্য)। আইভিএফ বা টেস্ট টিউবের মাধ্যমে সন্তান গ্রহণ।
অপারেশন করালে ভালো হয়: ল্যাপারোস্কোপির মাধ্যমে সিস্টিগুলোকে পাংকচার করা। এর প্রভাব কিছুদিন থাকে, কিন্তু পুরোপুরি ভালো হয় না।
দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণ: যেহেতু এই রোগীদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরলের দরুন হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে, তাই নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকা প্রয়োজন। স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের সঙ্গে এ রোগের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
প্রতিরোধ কি করা যাবে: যেহেতু জিনগত কারণে এ রোগের উৎপত্তি, তাই প্রতিরোধ করা যাবে না। কিন্তু সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও ওষুধ সেবনের মাধ্যমে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবকে ব্যাহত করা যেতে পারে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, প্রসূতিবিদ্যা ও স্ত্রীরোগ বিভাগ
সাহাবউদ্দিন মেডিকেল কলেজ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডের পর স্থগিত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আগামী ২৭ অক্টোবর পালিত হবে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।
৫ ঘণ্টা আগে১৮৪৬ সালের ১৬ অক্টোবর চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী দিন। বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এক রোগীর শরীরে ব্যথাহীন অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। দাঁতের চিকিৎসক ডা. উইলিয়াম মর্টন রোগী গিলবার্ট অ্যাবটের মুখে ইথার গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে প্রয়োগ করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই রোগী
৫ ঘণ্টা আগেকরোনা ভ্যাকসিনের দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে রয়েছে নানা ভুল ধারণা এবং অন্ধবিশ্বাস। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্ক্যাবিসসহ কিছু সংক্রামক চর্মরোগ মহামারির আকার ধারণ করেছে। বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে, করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করার ফলে তাদের বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হচ্ছে। আবার
৫ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগবালাই আবির্ভাব হয়। বাংলাদেশে হেমন্তকালের শেষের দিকে শীতকাল খুব কাছাকাছি চলে আসে। ঋতু পরিবর্তনের এ সময় তাপমাত্রার ওঠানামা ও শুষ্ক বাতাসের কারণে সর্দি-কাশি, জ্বরসহ অন্যান্য রোগব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা
৬ ঘণ্টা আগে