বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ স্মরণে সেমিনার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৫২
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১৮: ১০

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ স্মরণে বুধবার বিকেলে বাংলা একাডেমির আয়োজনে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কবি ও গবেষক ফজলুল হক। আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক ও কবি আবদুল হাই শিকদার, প্রাবন্ধিক ও শিশুসাহিত্যিক জাকির আবু জাফর এবং কবি হিজল জোবায়ের। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম।

ড. ফজলুল হক তুহিন বলেন, পাশ্চাত্য প্রভাবিত তিরিশোত্তর কাব্যাদর্শের মাঝে কবি আল মাহমুদের কাব্যসৃষ্টি নতুন ব্যঞ্জনা নিয়ে আসে। কাব্যযাত্রার সূচনা প্রভাবিত কাঠামোর ভেতর হলেও অচিরেই কবি ঔপনিবেশিক চিন্তা ও কাব্যচর্চার বিপরীতে স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করেন। ফলে তার নতুন ভাব ও ভাষার সূত্রে বাংলাদেশের সাহিত্যে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য ও বৈচিত্র্য সৃজনে সাহসী ভূমিকা রাখে। আঙ্গিকের বড় ধরনের বদল না ঘটলেও বিষয়বৈচিত্র্যে, ভাষাশৈলী বা শব্দব্যবহারে স্বতন্ত্র স্বাক্ষর দৃশ্যমান। তার কবিতায় বাংলাদেশের আর্থসামাজিক রূপান্তর, নদীকেন্দ্রিক জনপদ, চরাঞ্চলের মানুষ ও প্রকৃতি, আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, লৌকিক দর্শন ও সংস্কার, স্বাদেশিকতা ও রাজনৈতিক চৈতন্য নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়। বিশেষভাবে আধুনিক কবিতার ইমারতে লৌকিক উপাদানের শৈল্পিক কারুকাজ কবিকে আত্মআবিষ্কার, ঐতিহ্য—অন্বেষা ও বি—উপনিবেশায়নের পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করে। সেইসাথে দীর্ঘ কাব্যযাত্রায় কবি বাংলাদেশের একজন শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন অনন্য উচ্চতায়।

বিজ্ঞাপন

কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, প্রচলিত আধুনিকতার ধারণা আল মাহমুদ তার কবিতায় সবলভাবে ভেঙে দিয়েছেন। তিনি ছাঁচে ঢালা তোতা পাখির মতো বিদ্যমান ঔপনিবেশিক আধুনিকতার দাসত্ব করেননি। তিনি কালকে ধারণ করে এক কালোত্তীর্ণ কবি। তিনি বলেন, আল মাহমুদ বৈরী সময়ে বিপুল অবহেলার শিকার হয়েছেন কিন্তু ক্রমেই এটা স্পষ্ট যে আল মাহমুদ ব্যতীত বাংলা কবিতার মানচিত্র অপূর্ণাঙ্গ।

কবি জাকির আবু জাফর বলেন, একজন মহৎ কবির ভাষা তাঁর নিজের ভাষা ছাপিয়ে সমগ্র মানবজাতির কাব্যভাষায় রূপ নেয়। আল মাহমুদ তেমনই এক কবি যাঁর কবিতার সুগন্ধিতে আমরা এখনও বিমোহিত। তিনি আমাদের আত্মার কাছাকাছি কথা বলে যাওয়া এক অনিবার্য কবি।

কবি হিজল জোবায়ের বলেন, আল মাহমুদ পাঠকের কানে এক অনন্য কোরাস পৌঁছে দেন তাঁর কবিতার মারফত। নাগরিক মানুষের ভেতরে বসত করা গ্রামবাংলা তাঁর কবিতার অক্ষরে অক্ষরে অনন্য ব্যঞ্জনায় উদ্ভাসিত হয়েছে।

অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, আল মাহমুদের কবিতায় একমাত্রিকভাবে শুধু পল্লীপ্রকৃতিই আসেনি বরং নাগরিক নানা অনুষঙ্গ তাঁর কবিতায় প্রবলভাবেই উপস্থিত। জসীমউদ্দীনের গ্রাম আর আল মাহমুদের গ্রামে তফাত আছে। আল মাহমুদ তাঁর স্বতন্ত্র প্রভায় আধুনিকতার নতুন কাব্য—পরিসর তৈরি করেছেন। সুতরাং তাঁকে কোনো সংকীর্ণ ব্যাখ্যায় আবদ্ধ না রেখে বিশ্বকবিতা ও বাংলা কবিতার প্রেক্ষাপটে আবিষ্কার করা জরুরি।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক কাজী রোমানা আহমেদ সোমা।

জৈন্তাপুরে ‘বিজিবির’ গুলিতে যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ

নির্বাচনের আগে উপদেষ্টা পরিষদের মধ্যেও শুদ্ধি অভিযান জরুরি

দুদিনব্যাপী মেহেদী উৎসব ইবি ‘ছাত্রী সংস্থা’র প্রকাশ্য কার্যক্রম শুরু

বার্ষিক পরীক্ষার আগেই স্কুল-কলেজ ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের দাবি

‘মুসলমানদের মতো হইয়ো না’ বলা জাভেদকে ধুয়ে দিলেন লাকি আলী

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত