রুশিতা রূপন্তী
‘আন্দোলন শুরু হয়েছিল কোটা সংস্কারের জন্য এবং পরে দেখা গেল সেই ছাত্রদেরই পেটানো হচ্ছে। ধৈর্যের সীমা অতিক্রম হয় ১৬ তারিখ। একজন এসে বুক চিতিয়ে দিল আর আপনি গুলি করে দিলেন? এটা দেখার পর সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ অন্তত ঘরে বসে থাকবে না।’ আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রাস্তায় থাকা সাহসী নারী শায়লা ইসলাম বীথি এভাবেই শোনাচ্ছিলেন তার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার গল্প।
আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার অনুপ্রেরণার কথা বলতে গিয়ে শায়লা ফিরে যান তার কলেজজীবনের স্মৃতিতে। তিনি বলেন, ‘২০১২ বা ১৩ সালে, কলেজের সামনে হওয়া একটা দুর্ঘটনার কারণে দাবি তুলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুটো স্পিড ব্রেকার তৈরি করিয়েছিলাম। আর যেখানে নিরপরাধ মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে, তখন তো চুপ করে বসে থাকা যায় না। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতে ভ্যাট আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও সক্রিয়তা ছিল আমার। আমি অন্যায় সহ্য করতে পারি না, তাই থাকি। পরেও থাকব।’
আন্দোলনের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শায়লা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সবচেয়ে ইতিবাচক ব্যাপার ছিল, একদম অপরিচিত মানুষটাকেও খুব পরিচিত লাগে। পাশের মানুষটাকে চিনি না, কিন্তু সে প্রয়োজনে আমার হাতটা শক্ত করে ধরছে। আমার সঙ্গে স্লোগান দিচ্ছে, আমার জন্য পানির বোতল এগিয়ে দিচ্ছে। আন্দোলনের একদম শেষের দিকে দেশের ভয়াবহ অবস্থা। চার আগস্ট, শহীদ মিনার থেকে চারজন শহীদকে সঙ্গে নিয়ে আমরা শাহবাগের দিকে এগিয়ে আসছিলাম। স্পষ্ট মনে আছে, আমার ডান হাতটা যে আপুটা ধরেছিল, তাকে আমি চিনি না। কিন্তু সেই হাত ধরার যে শক্তি, সেটা ভাষায় লিখে প্রকাশ করা যাবে না। আমাদের ওপর গুলি করা হয়। পুরো আন্দোলনে আমার পাশে থাকা বন্ধু তুষারকে তখন হারিয়ে ফেলি কয়েক ঘণ্টার জন্য। আমাকে সেই টালমাটাল সময় যে বা যারা পাশে রেখেছিল, তাদেরও আমি চিনি না। এই ভরসার হাতগুলোই তো এনে দিয়েছে আমাদের নতুন বাংলাদেশ।’
তীব্র মনোবেদনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের মোটিভটাই হঠাৎ কেমন বদলে গেল। একটা অধিকার আদায়ের দাবি থেকে হয়ে গেল নিজের দেশে আপন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। নিজের দেশে দাঁড়িয়ে নিজের দেশের মানুষের সঙ্গেই লড়তে হচ্ছে। আমাদের সরকার আমাদেরই গুলি করে মেরে ফেলছে। এটা খুব দুঃখজনক ব্যাপার ছিল।’
অন্য অনেকের মতো শায়লারও সম্পূর্ণ পারিবারিক সমর্থন ছিল না। যেহেতু তার বাবা-মা পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকেই জানতেন, তাদের মেয়ে ঘরে বসে থাকবে না, আন্দোলনের মাঠে সে যাবেই, তখন তাদের একটাই কথা ছিল ‘সম্ভব হলে সাবধানে থেকো, ঘরে ফিরে এসে আমাদের জানিও’।
শায়লা আরো বলেন, ‘৫ তারিখের ঘটনায় মন এখনো কেঁদে ওঠে। এত দিনের রোদে পোড়া, ঘাম-রক্ত এক করা শরীর নিয়ে বাসায় ফেরাটা কিন্তু আমাদের জন্য সুখকর ছিল না। গণভবন ভাঙচুর, মানুষের লুটপাট এই জিনিসগুলো খুব হতাশ করেছে। কিছু মানুষ বুঝে করেছে, কিছু মানুষ না বুঝে করেছে। তবে দেশের এই নবজন্মের পর অনেক মানুষ রাজনীতিসচেতন হচ্ছেন কিংবা হয়েছেন। অন্যদিকে কিছু মানুষ ধৈর্যহারা। ভারসাম্য আসতে একটু সময় লাগবে। আমরা যে ধৈর্যহারা হয়ে যাই, সরকার পতন হয়েছে, নতুন সরকার এসে দুদিনের ভেতর সবকিছু পরিবর্তন করে ফেলবে, সব গুছিয়ে ফেলবে, এই ধারণাটা ঠিক নয়। কোনো কিছু গোছানোর জন্য সময়ের প্রয়োজন। যাদের হাতে সাজানো গোছানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তাদের সময়টাও দেওয়া উচিত।’
যেকোনো আন্দোলনে পুরুষের মতো অনেক নারীরও অংশগ্রহণ বা অবদান থাকে, নারীরাও নেতৃত্ব দেন। নারীর এই নেতৃত্বকে সমাজ কীভাবে দেখে বলে মনে করেন? এই প্রশ্নের উত্তরে শায়লা বলেন, ‘আমি নারী-পুরুষকে আলাদাভাবে দেখি না। আমি সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখি এবং মনে করি, প্রতিটি মানুষের খুব শক্তিশালী মনোভাব থাকা উচিত, যেকোনো পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার জন্য। আমার মনে হয়, যৌথ আলোচনা এবং সমঝোতার মধ্যে পরিচালিত পরিবারে বেড়ে উঠলে নারী নেতৃত্ব গ্রহণ করাটা আমাদের কাছে সহজ ও স্বাভাবিক হবে।’
নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে শায়লা বলেন, ‘সুজলা সুফলা শস্য-শ্যামলা সেই বাংলাদেশকে ফিরে পেতে চাই। এ দেশে মানুষের একসঙ্গে কাজ করার মনোভাব চাই। দাঙ্গা-হাঙ্গামার পরিবর্তে সমঝোতা, আলোচনা, ঐক্যবোধ এবং একসঙ্গে দেশ গড়ার প্রচেষ্টা এটুকুই প্রত্যাশা।’
‘আন্দোলন শুরু হয়েছিল কোটা সংস্কারের জন্য এবং পরে দেখা গেল সেই ছাত্রদেরই পেটানো হচ্ছে। ধৈর্যের সীমা অতিক্রম হয় ১৬ তারিখ। একজন এসে বুক চিতিয়ে দিল আর আপনি গুলি করে দিলেন? এটা দেখার পর সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ অন্তত ঘরে বসে থাকবে না।’ আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত রাস্তায় থাকা সাহসী নারী শায়লা ইসলাম বীথি এভাবেই শোনাচ্ছিলেন তার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার গল্প।
আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার অনুপ্রেরণার কথা বলতে গিয়ে শায়লা ফিরে যান তার কলেজজীবনের স্মৃতিতে। তিনি বলেন, ‘২০১২ বা ১৩ সালে, কলেজের সামনে হওয়া একটা দুর্ঘটনার কারণে দাবি তুলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুটো স্পিড ব্রেকার তৈরি করিয়েছিলাম। আর যেখানে নিরপরাধ মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা হচ্ছে, তখন তো চুপ করে বসে থাকা যায় না। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতে ভ্যাট আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও সক্রিয়তা ছিল আমার। আমি অন্যায় সহ্য করতে পারি না, তাই থাকি। পরেও থাকব।’
আন্দোলনের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শায়লা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের সবচেয়ে ইতিবাচক ব্যাপার ছিল, একদম অপরিচিত মানুষটাকেও খুব পরিচিত লাগে। পাশের মানুষটাকে চিনি না, কিন্তু সে প্রয়োজনে আমার হাতটা শক্ত করে ধরছে। আমার সঙ্গে স্লোগান দিচ্ছে, আমার জন্য পানির বোতল এগিয়ে দিচ্ছে। আন্দোলনের একদম শেষের দিকে দেশের ভয়াবহ অবস্থা। চার আগস্ট, শহীদ মিনার থেকে চারজন শহীদকে সঙ্গে নিয়ে আমরা শাহবাগের দিকে এগিয়ে আসছিলাম। স্পষ্ট মনে আছে, আমার ডান হাতটা যে আপুটা ধরেছিল, তাকে আমি চিনি না। কিন্তু সেই হাত ধরার যে শক্তি, সেটা ভাষায় লিখে প্রকাশ করা যাবে না। আমাদের ওপর গুলি করা হয়। পুরো আন্দোলনে আমার পাশে থাকা বন্ধু তুষারকে তখন হারিয়ে ফেলি কয়েক ঘণ্টার জন্য। আমাকে সেই টালমাটাল সময় যে বা যারা পাশে রেখেছিল, তাদেরও আমি চিনি না। এই ভরসার হাতগুলোই তো এনে দিয়েছে আমাদের নতুন বাংলাদেশ।’
তীব্র মনোবেদনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের মোটিভটাই হঠাৎ কেমন বদলে গেল। একটা অধিকার আদায়ের দাবি থেকে হয়ে গেল নিজের দেশে আপন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। নিজের দেশে দাঁড়িয়ে নিজের দেশের মানুষের সঙ্গেই লড়তে হচ্ছে। আমাদের সরকার আমাদেরই গুলি করে মেরে ফেলছে। এটা খুব দুঃখজনক ব্যাপার ছিল।’
অন্য অনেকের মতো শায়লারও সম্পূর্ণ পারিবারিক সমর্থন ছিল না। যেহেতু তার বাবা-মা পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকেই জানতেন, তাদের মেয়ে ঘরে বসে থাকবে না, আন্দোলনের মাঠে সে যাবেই, তখন তাদের একটাই কথা ছিল ‘সম্ভব হলে সাবধানে থেকো, ঘরে ফিরে এসে আমাদের জানিও’।
শায়লা আরো বলেন, ‘৫ তারিখের ঘটনায় মন এখনো কেঁদে ওঠে। এত দিনের রোদে পোড়া, ঘাম-রক্ত এক করা শরীর নিয়ে বাসায় ফেরাটা কিন্তু আমাদের জন্য সুখকর ছিল না। গণভবন ভাঙচুর, মানুষের লুটপাট এই জিনিসগুলো খুব হতাশ করেছে। কিছু মানুষ বুঝে করেছে, কিছু মানুষ না বুঝে করেছে। তবে দেশের এই নবজন্মের পর অনেক মানুষ রাজনীতিসচেতন হচ্ছেন কিংবা হয়েছেন। অন্যদিকে কিছু মানুষ ধৈর্যহারা। ভারসাম্য আসতে একটু সময় লাগবে। আমরা যে ধৈর্যহারা হয়ে যাই, সরকার পতন হয়েছে, নতুন সরকার এসে দুদিনের ভেতর সবকিছু পরিবর্তন করে ফেলবে, সব গুছিয়ে ফেলবে, এই ধারণাটা ঠিক নয়। কোনো কিছু গোছানোর জন্য সময়ের প্রয়োজন। যাদের হাতে সাজানো গোছানোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তাদের সময়টাও দেওয়া উচিত।’
যেকোনো আন্দোলনে পুরুষের মতো অনেক নারীরও অংশগ্রহণ বা অবদান থাকে, নারীরাও নেতৃত্ব দেন। নারীর এই নেতৃত্বকে সমাজ কীভাবে দেখে বলে মনে করেন? এই প্রশ্নের উত্তরে শায়লা বলেন, ‘আমি নারী-পুরুষকে আলাদাভাবে দেখি না। আমি সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখি এবং মনে করি, প্রতিটি মানুষের খুব শক্তিশালী মনোভাব থাকা উচিত, যেকোনো পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার জন্য। আমার মনে হয়, যৌথ আলোচনা এবং সমঝোতার মধ্যে পরিচালিত পরিবারে বেড়ে উঠলে নারী নেতৃত্ব গ্রহণ করাটা আমাদের কাছে সহজ ও স্বাভাবিক হবে।’
নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে শায়লা বলেন, ‘সুজলা সুফলা শস্য-শ্যামলা সেই বাংলাদেশকে ফিরে পেতে চাই। এ দেশে মানুষের একসঙ্গে কাজ করার মনোভাব চাই। দাঙ্গা-হাঙ্গামার পরিবর্তে সমঝোতা, আলোচনা, ঐক্যবোধ এবং একসঙ্গে দেশ গড়ার প্রচেষ্টা এটুকুই প্রত্যাশা।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
১ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
১ ঘণ্টা আগেসমাবেশে জোবায়েদের সহপাঠী সজল খান বলেন, “পুলিশ এখনো বর্ষার পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। শুধু বর্ষা ও মাহির নয়, এই ঘটনায় বর্ষার পরিবারও জড়িত। গতকাল আদালতে আমাদের সঙ্গে পুলিশের আচরণ ছিল অমানবিক। আমাদের এক বান্ধবী ভিডিও করতে গেলে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। আমরা পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।”
২ ঘণ্টা আগেসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনের মামলায় বুয়েটের ২১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জামিনের বিষয়ে অধিকতর শুনানির জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন বিচার
২ ঘণ্টা আগে