জুলাই বিপ্লব
জসিম উদ্দিন, খানসামা (দিনাজপুর)
বিবেকের তাড়নায় রাস্তায় নেমেছিলেন গাজীপুরে কর্মরত গার্মেন্টশ্রমিক আনারুল ইসলাম। প্রতিবাদের মিছিলে গিয়েছিলেন একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বুকে নিয়ে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজ গুলিবিদ্ধ। আক্ষরিক অর্থেই তার শরীরে এখনো রয়ে গেছে অন্তত ১০টি রাবার বুলেট। এক বছর ধরে সেসব গুলি বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি দুঃসহ এক মানবেতর জীবনের ভার কাঁধে নিয়ে। কিন্তু তার পাশে দাঁড়ায়নি কেউ—না রাষ্ট্র, না রাজনৈতিক কোনো নেতা, না মানবতা।
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ি ইউনিয়নের চণ্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা আনারুল ইসলাম পেশায় ছিলেন গাজীপুরের চান্দুরা এলাকার একটি গার্মেন্টের শ্রমিক। সংসারে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানই ছিল তার জীবনের সবটুকু। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গাজীপুরের চান্দুরা চৌরাস্তা মোড়ে অনুষ্ঠিত একটি স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে অংশ নেন তিনি। হঠাৎ মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণ। এতে গুলিবিদ্ধ হন আনারুল।
প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখান থেকে কোনো চিকিৎসা নথি বা প্রতিবেদন তাকে দেওয়া হয়নি। পরে ফিরে আসেন নিজ এলাকায়। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ একাধিক জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছেন; কিন্তু অপারেশনের মতো উন্নত চিকিৎসা অর্থের অভাবে হয়ে ওঠেনি। আজও তার মাথা ও পিঠে রয়ে গেছে সেই বুলেটের অস্তিত্ব। জীবন-জীবিকা সব থেমে গেছে। স্বাভাবিক চলাফেরাও আর সম্ভব নয়। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এই শ্রমিক। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি এখন নিজের সংসারেই বোঝা।
আনারুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, ‘এতজনের মৃত্যুর মিছিল দেখে আমিও আর বসে থাকতে পারিনি। বিবেকের তাগিদে মিছিলে অংশ নিয়েছি। সেই মিছিলে অংশ নিয়ে আমার শরীরে এখনো ১০টি গুলি। হাত-পা ঠিকমতো কাজ করে না। কোনো কাজ করতে পারি না। দুঃখের বিষয়, কেউ খোঁজ নেয় না, কেউ পাশে দাঁড়ায় না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি, ভাগ্যে কী আছে জানি না।’
আনারুলের ভাই এরশাদ আলী আমার দেশকে জানান, ‘শুধু চিকিৎসাই নয়, সংসার চালাতেও হিমশিম খাচ্ছেন আনারুল। পাটখড়ি আর জরাজীর্ণ টিনের ঘরে শুয়ে-বসে দিন কাটছে তার। সরকার বা কোনো সংস্থা তাকে সহায়তা করলে হয়তো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারত।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি রহিদুল ইসলাম রাফি বলেন, এই আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। তাই রাষ্ট্র হোক বৈষম্যহীন। জুলাই-আগস্টে আহত যোদ্ধাদের উন্নত চিকিৎসা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে আনয়ন করার দায় রাষ্ট্রের। তাই আনারুলকে সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট সবার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও শামসুদ্দোহা মুকুল আমার দেশকে বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আহত আনারুল চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলে প্রাপ্ত এক্স-রেতে তার মাথা ও পিঠে ১০টি রাবার বুলেটের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে; কারণ বুলেট অপসারণসহ তার আরো বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রয়োজন। কেননা, তিনি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার আমার দেশকে বলেন, ‘আনারুলের বিষয়ে জানার পর আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে তিনি এখনো শরীরে গুলি বহন করছেন, যা উদ্বেগজনক। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এ বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আবাও অবগত করব।’
বিবেকের তাড়নায় রাস্তায় নেমেছিলেন গাজীপুরে কর্মরত গার্মেন্টশ্রমিক আনারুল ইসলাম। প্রতিবাদের মিছিলে গিয়েছিলেন একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বুকে নিয়ে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আজ গুলিবিদ্ধ। আক্ষরিক অর্থেই তার শরীরে এখনো রয়ে গেছে অন্তত ১০টি রাবার বুলেট। এক বছর ধরে সেসব গুলি বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি দুঃসহ এক মানবেতর জীবনের ভার কাঁধে নিয়ে। কিন্তু তার পাশে দাঁড়ায়নি কেউ—না রাষ্ট্র, না রাজনৈতিক কোনো নেতা, না মানবতা।
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ি ইউনিয়নের চণ্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা আনারুল ইসলাম পেশায় ছিলেন গাজীপুরের চান্দুরা এলাকার একটি গার্মেন্টের শ্রমিক। সংসারে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানই ছিল তার জীবনের সবটুকু। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গাজীপুরের চান্দুরা চৌরাস্তা মোড়ে অনুষ্ঠিত একটি স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে অংশ নেন তিনি। হঠাৎ মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণ। এতে গুলিবিদ্ধ হন আনারুল।
প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখান থেকে কোনো চিকিৎসা নথি বা প্রতিবেদন তাকে দেওয়া হয়নি। পরে ফিরে আসেন নিজ এলাকায়। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ একাধিক জায়গায় চিকিৎসা করিয়েছেন; কিন্তু অপারেশনের মতো উন্নত চিকিৎসা অর্থের অভাবে হয়ে ওঠেনি। আজও তার মাথা ও পিঠে রয়ে গেছে সেই বুলেটের অস্তিত্ব। জীবন-জীবিকা সব থেমে গেছে। স্বাভাবিক চলাফেরাও আর সম্ভব নয়। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এই শ্রমিক। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি এখন নিজের সংসারেই বোঝা।
আনারুল ইসলাম আমার দেশকে বলেন, ‘এতজনের মৃত্যুর মিছিল দেখে আমিও আর বসে থাকতে পারিনি। বিবেকের তাগিদে মিছিলে অংশ নিয়েছি। সেই মিছিলে অংশ নিয়ে আমার শরীরে এখনো ১০টি গুলি। হাত-পা ঠিকমতো কাজ করে না। কোনো কাজ করতে পারি না। দুঃখের বিষয়, কেউ খোঁজ নেয় না, কেউ পাশে দাঁড়ায় না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি, ভাগ্যে কী আছে জানি না।’
আনারুলের ভাই এরশাদ আলী আমার দেশকে জানান, ‘শুধু চিকিৎসাই নয়, সংসার চালাতেও হিমশিম খাচ্ছেন আনারুল। পাটখড়ি আর জরাজীর্ণ টিনের ঘরে শুয়ে-বসে দিন কাটছে তার। সরকার বা কোনো সংস্থা তাকে সহায়তা করলে হয়তো স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারত।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি রহিদুল ইসলাম রাফি বলেন, এই আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। তাই রাষ্ট্র হোক বৈষম্যহীন। জুলাই-আগস্টে আহত যোদ্ধাদের উন্নত চিকিৎসা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে আনয়ন করার দায় রাষ্ট্রের। তাই আনারুলকে সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে নিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট সবার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও শামসুদ্দোহা মুকুল আমার দেশকে বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আহত আনারুল চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলে প্রাপ্ত এক্স-রেতে তার মাথা ও পিঠে ১০টি রাবার বুলেটের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে; কারণ বুলেট অপসারণসহ তার আরো বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রয়োজন। কেননা, তিনি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুজ্জামান সরকার আমার দেশকে বলেন, ‘আনারুলের বিষয়ে জানার পর আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে তিনি এখনো শরীরে গুলি বহন করছেন, যা উদ্বেগজনক। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এ বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আবাও অবগত করব।’
জুলাই আন্দোলনে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো এক যোদ্ধাকে বাদী দেখিয়ে অভিনব কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মৌলভীবাজার শহরে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন জসিমও। চৌমুহনায় মিছিলকারী ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবুও পিছু হটেনি সাহস নিয়ে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লক্ষ্য
৩১ আগস্ট ২০২৫চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম একজন যোদ্ধা তরুণ আলেম মাওলানা শফিকুর রহমান। আন্দোলন ঘিরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় পতিত আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে তার বাগবিতন্ডার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। রামপুরা এলাকায় আন্দোলনকারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় তাকে।
২৯ আগস্ট ২০২৫তাইমুরের বাবা পুলিশের এসআই মো. ময়নাল হোসেন ভুঁইয়া তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার’। আমার ছেলের কি দোষ ছিল, কেন তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হলো? কেন তার শরীরে দুইশ গুলি মারা হলো।
১৯ আগস্ট ২০২৫