টিয়ারশেলের স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন রাফি

শহিদ আহমেদ চৌধুরী, ফেঞ্চুগঞ্জ (সিলেট)
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৫, ১৪: ১০

কোটা সংস্কার আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত বছরের ৪ আগস্ট পুরো দেশজুড়ে শাটডাউন কর্মসূচি দেন শিক্ষার্থীরা। ওই কর্মসূচি সফল করতে সিলেটের বন্দর এলাকায় ওসমানী শিশু পার্কের সামনে টিলাগড়, চৌহাট্টা ও কোর্ট পয়েন্টে আন্দোলন করেন বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

সেখানে ওসমানী শিশু পার্কের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী গুন্ডাবাহিনী হামলা চালায়। পুলিশের গুলিতে আহত হন সৈয়দ মোস্তফা জামান রাফি। পায়ে গুলিবিদ্ধ হওয়া রাফি যখন মাটিতে পড়ে যান তখন তাকে লক্ষ্য করে কয়েক মিটার দূর থেকে পুলিশ গুলি করতে থাকে । একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। মৃত ভেবে তাকে ফেলে রেখে যায় পুলিশ। তখন তার সহযোদ্ধারা তাকে ইবনে সিনা হাসপাতালে নিলে কয়েকঘণ্টা পর ফিরে জ্ঞান। সেসব বুলেট শরীরে বহন করে বেঁচে আছেন রাফি । এ সময় পুলিশের টিয়ারশেলের স্প্রিন্টারগুলোতে তার সারা শরীর ফোসকার মতো হয়ে যায়। ভাগ্যবশত চশমা ভেদ করতে না পারায় তার চোখ রক্ষা পায়। এখানে শুধু রাফি নয়, তার আরো কয়েকজন বন্ধুও এ সময় আহত হন।

সৈয়দ মোস্তফা জামান রাফি ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ফেঞ্চুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রাজনপুর গ্রামের সৈয়দ বদরুজ্জামান খিজিরের ছেলে। দুই ভাইয়ের মাঝে রাফি বড়। ডানপিটে স্বভাবের এই তরুণ স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসিন হব। কিন্তু গায়ে এখনো শত বারুদের গুলি। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে তাকে দিন কাটাতে হচ্ছে। ডা. বলেছেন সময় করে এগুলো বের করতে। নিয়মিত ডাক্তার দেখানো এখন তার একটি রুটিন ওয়ার্ক।

তিনি বলেন, জীবন বাজি রেখে আমরা আন্দোলন করে স্বৈরাচারী হাসিনাকে হটিয়েছি। আমার চিকিৎসা আমার পরিবার করাচ্ছে। কয়েকশ স্প্রিন্টার শরীর থেকে বের করতে হলে প্রয়োজন উন্নত চিকিৎসা। সরকারি বরাদ্দ ছাড়া যা আমার পক্ষে অসম্ভব প্রায়। বর্তমানে নিজেদের জীবন পেইন কিলার খেয়ে চালাচ্ছি। তাই কোনো অবস্থাতে যেন আমার মতো যোদ্ধাদের ত্যাগ যেন বৃথা হয়ে না যায়, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তবেই জুলাই শহীদের আত্মা শান্তি পাবে। তার বাবা সৈয়দ বদরুজ্জামান খিজির বলেন, আমার ছেলে আন্দোলনে গিয়ে তার সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। ভাগ্য ভালো তার হায়াত আল্লাহ রেখেছেন। তাই আমরা তাকে ফিরে পেয়েছি। যারা আমার সন্তানসহ ওই আন্দোলনে ছাত্র, শিশু, বৃদ্ধসহ সাধারণ জনতাকে হত্যা করিয়েছে এবং যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের বিচার দ্রুত বাস্তবায়ন করা হউক। নয়তো এসব শহীদের আত্মা শান্তি পাবে না।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত