বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেবে বিডা ও পুলিশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮: ৪৮

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ পুলিশ শীর্ষস্থানীয় বিদেশী বিনিয়োগকারীদের পূর্ণ নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ পুলিশ সোমবার ঘোষণা করেছে, তারা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের তাদের নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থায় সরাসরি প্রবেশাধিকার দেবে। ফলে কোম্পানিগুলো যেকোনো ঘটনা রিপোর্ট করতে এবং তাৎক্ষণিক সহায়তা পেতে সক্ষম হবে।

গাজা হামলার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বিক্ষোভে যেসব বিদেশী প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের শিকার হয়েছে, তাদের ছয়টি বিদেশী কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইজিপি বাহারুল আলম এবং বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুনের বৈঠকের পর পুলিশ প্রধানের কার্যালয় থেকে এই ঘোষণা আসে।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং পুলিশের মহাপরিদর্শকের যৌথ সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে নেসলে বাংলাদেশ, কোকা-কোলা বাংলাদেশ বেভারেজেস, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, বাটা সু কোং বাংলাদেশ, রেকিট বেনকিজার বাংলাদেশ, পেপসিকো এবং জুবিল্যান্ট ফুড ওয়ার্কস বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রধান কোম্পানির নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।

দেশের বেশ কয়েকটি শহরে গত ৭-৮ এপ্রিল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ১৪০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনার জন্য প্রায় এক ডজন মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

বিডা-র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন,“আইজিপি, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং আমাদের বিডা টিম ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক ছাদের নিচে উপস্থিতি কেবল সময়োপযোগীই নয় বরং অভূতপূর্ব ছিল।”

তিনি বলেন,“এটি কেবল আনুষ্ঠানিকতাই ছিল না- এটি একটি বিবৃতি ছিল। এটি প্রমাণ করে বাংলাদেশ তার বিনিয়োগকারীদের পাশে দাঁড়ানোর বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশেষ করে যখন চ্যালেঞ্জ দেখা দেয়।”

ধ্বংস করার মাধ্যমে প্রতিবাদ করা সমাধান নয় উল্লেখ করে চৌধুরী আশিক বলেন, “আমরা যে কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বসেছিলাম, এসব প্রতিষ্ঠান সরাসরি হাজার হাজার কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে। আমরা প্রতিবাদ করার অধিকারকে সম্মান করি, কিন্তু চাকরি, স্থিতিশীলতা এবং প্রবৃদ্ধি নিয়ে আসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করা সমাধান নয়।”

সোমবারের এ বৈঠকে অংশগ্রহণকারী কোম্পানিগুলো ভাঙচুর, ক্ষতি এবং পরিচালনাগত বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরেছে।

তাদের প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায়, আইজিপির কার্যালয় ঘোষণা করেছে, তারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাগুলোকে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার অ্যাক্সেস দেবে। জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, জরুরি যোগাযোগ লাইন কোম্পানিগুলোকে ‘ঘটনা রিপোর্ট করতে এবং তাৎক্ষণিক সহায়তা পেতে সক্ষম করবে।’

আইজিপি বাহারুল আলম দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির কাছ থেকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, "আমরা এখানে কেবল প্রতিক্রিয়া জানাতে আসিনি। আমরা এখানে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে এবং এসব ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করতে এসেছি।’

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিরোধমূলক কর্মপরিকল্পনার একটি সেট তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নতুন নিরাপত্তা প্রোটোকল, দ্রুত প্রতিক্রিয়া ইউনিট এবং উন্নত সংকট যোগাযোগ চ্যানেল। বিডা, পুলিশ এবং ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর যৌথভাবে তৈরি এই ব্যবস্থাগুলো বাংলাদেশের বিনিয়োগ ইকোসিস্টেমে দীর্ঘমেয়াদি আস্থা এবং স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবে।

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই সংলাপ প্রতিক্রিয়া হিসেবে নয় - এটি প্রতিরোধ সম্পর্কে। এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এটি সরকারের প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অগ্রাধিকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ, টেকসই এবং বিনিয়োগকারী-বান্ধব গন্তব্য হিসেবে নিশ্চিত করার জন্য এই উদ্যোগটি বিডার বৃহত্তর লক্ষ্যের অংশ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত