ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত ফ্ল্যাট নিজেদের জন্য বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক ১৩ সচিবের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক জানায়, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য প্রকল্পের ফ্ল্যাট সচিবরা সস্তায় নিয়েছেন বলে গত জুনে দেশের একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর দুদকের এনফোর্সমেন্টের অভিযানে এর সত্যতা মেলে।
সোমবার বেলা ৩ টার দিকে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন।
দুদক জানায়, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান ওবায়দুল কাদের ছাড়াও মামলার আসামিরা হচ্ছেন- সেতু বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সাবেক সচিব মো. নজরুল ইসলাম, জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন, বিদ্যুৎ বিভাগের সাবেক সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. আবদুল জলিল এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ড. জাফর আহমেদ খান। অন্য আসামিরা হচ্ছেন- সাবেক অর্থ সচিব ও সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, আইন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, প্রাক্তন সিনিয়র সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য জুয়েনা আজিজ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সাবেক সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আজম, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আখতার হোসেন ভূঁইয়া এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সাবেক সচিব ড. আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য আবাসন নির্মাণের লক্ষ্যে ৪০ একর জমি অধিগ্রহণ করে। অধিগ্রহণের উদ্দেশ্য হিসেবে এ সংক্রান্ত গেজেটে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এই উদ্দেশ্যের বাইরে গিয়ে ওই জমি সরকারি কর্মচারীদের জন্য স্থায়ী ৯৯ বছরের লিজে আবাসন করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
দুদক আরও জানায়, সেতু কর্তৃপক্ষের আইনেও এ ধরনের প্রকল্প নেওয়ার কোনো ক্ষমতা কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়নি। এটি সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত একটি প্রকল্প, যা একান্ত ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের লাভবান হওয়ার জন্য ক্ষমতাবহির্ভূতভাবে নেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা অসৎ উদ্দেশ্যে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রতারণামূলকভাবে বিশ্বাস ভঙ্গ করে নিয়মবহির্ভুতভাবে এই সম্পদ অর্জন করেছেন।

