ইন্টারনেটের দাম জনগণের ব্যবহার উপযোগী করতে হবে: আসিফ মাহমুদ

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৫, ১৭: ২২

ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে জনগণের ব্যবহার উপযোগী করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

শনিবার সকালে রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন‘ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষ সমতায়ন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৭ মে দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস।

বিজ্ঞাপন

দিবসটি উপলক্ষে সভা সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বিটিআরসি প্রাঙ্গণে মেলা ও ডাক টিকেট অবমুক্তকরণের আয়োজন করা হয়েছে। বিটিআরসি ভবন নানা ব্যানার ও ফেস্টুনে সেজেছে৷ দিনব্যাপী আয়োজনে রয়েছে মেলার আয়োজনও। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিটিআরসি এরই মধ্যে ই-লাইসেন্সিং সেবা চালু করেছে। অনুষ্ঠানে একটি ন্যাশন ওয়াইড আইএসপি ও অপর এক ডিভিশনাল আইএসপির হাতে ই-লাইসেন্স তুলে দেওয়া হয়। বেশ কিছু ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী (আইএসপি) স্তরে ২০ শতাংশ দাম কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে যারা স্টেকহোল্ডার আছেন, তাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

ইন্টারনেট দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আইআইজি ও এনটিটিএন পর্যায়ে দাম কমানো হয়েছে। আগামী দুই এক মাসের মধ্যে গ্রাহক তার সুফল পাবে। তবে ইন্টারনেটের দাম কীভাবে আরও কমানো যায়, জনগণের ব্যবহার উপযোগী করা যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষায় ইন্টারনেট ব্যবহারে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি, তবে কৃষি ও স্বাস্থ্যে অনেক পিছিয়ে রয়েছি। এই দুই খাতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে বন্যা ও ঝড়ের সময় মোবাইল ইন্টারনেট ব্যাহত হয়। বন্যা ও ঝড় আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে সেই সময়ে ইন্টারনেট সেবা কীভাবে নিশ্চিত করা যায় তা ভাবতে হবে। দুর্যোগের সময় কীভাবে টেলিযোগাযোগ যেন নির্বিঘ্ন থাকে, সেই উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘ইন্টারনেট থেকে কাউকে বিচ্ছিন্ন করা মানে কারও জীবন ঝুঁকিতে ফেলা। আপনারা দেখেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলন যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল, তখন মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে, ব্ল্যাক আউট করে দিয়ে আমাদের ওপর যে নিপীড়ন চালানো হয়েছে, এ দেশের মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেটি পৃথিবী থেকে এবং আমাদের থেকেও গোপন করা হয়েছে। যখন আবার ইন্টারনেট এসেছে, তখন সে চিত্রগুলো আমরা দেখার সুযোগ পেয়েছি।’

আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট করে দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানো হয়েছিলো। আমরা তখন জানতে পারিনি তখন কি হয়েছিলো। পরে ইন্টারনেট আসার পরে আমরা জেনেছি। ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া করা হয়েছে। এটি এই সরকারের একটি বড় অর্জন।

তিনি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অনেক দেশি উদ্ভাবক সুযোগ-সুবিধার অভাবে দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই এই খাতের নতুন নতুন ইনোভেশনের খবর শুনি। সেখানে আমরা কতটুকু কন্ট্রিবিউট করছি সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। থ্রি জি, ফোরজি ও ফাইভজির ক্ষেত্রেও একই। প্রযুক্তি ইনোভেশনের ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সাইবার স্পেসে নারীদের নিরাপত্তা দিতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি, সেটি স্বীকার করতে আমাদের দ্বিধা নেই। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনটি পাস হলে সাইবার স্পেস নারীদের জন্য আরও বেশি সুরক্ষিত হবে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের আইসিটি খাতে নারীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে সরকার কাজ করছে। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাস হবে। তখন সাইবার স্পেসে নারীদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবো। তিনি আরও বলেন, ন্যাশনাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জে নারী উদ্যোক্তা ও কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হবো। সবুজ পাতা নামের যে উদ্যোগ সেখানেও নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে এসময় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব জহিরুল ইসলাম ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান (অব.) মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে দুপুরের পর উমুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইন্টারনেট ভিত্তিকবাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচান হয়।

এমএস

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত