পিএসসি সংস্কারের দাবিতে শাহবাগে ‘ব্লকেড’, পুলিশের বাধা-হাতাহাতি

প্রতিনিধি, ঢাবি
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৩৪

সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কাঠামোগত সংস্কার এবং ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে শাহবাগ মোড়ে ‘ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী ও একদল শিক্ষার্থী।

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তারা।

বিক্ষোভের কারণে শাহবাগ মোড়ের যান চলাচল একপর্যায়ে সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে পড়ে। এসময় আন্দোলনকারীরা ‘পিএসসির কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জুলাই এসেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘নিশিরাতের ফলাফল মানি না, মানবো না’সহ নানা স্লোগান দেন।

শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচির একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত কয়েকজন আন্দোলনকারী আহত হন বলে জানা গেছে। পরে আন্দোলনকারীরা টিএসসি এলাকায় ফিরে গিয়ে সেখানে সমাবেশ করেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, “৪৪তম বিসিএসে যে অনিয়ম ও পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে, তা তদন্ত ও সংশোধন না করা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আমাদের দাবিগুলো এখন আর শুধু এক পরীক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়- এটা পুরো পিএসসি কাঠামোর ব্যাপারে।"

এসময় আন্দোলনকারীরা পিএসসির বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ উত্থাপন করেন। তারা জানান, ৪৪তম বিসিএসের ফলে একই ব্যক্তি দ্বিতীয়বার একই ক্যাডারে সুপারিশ পেয়েছেন, যা নতুন প্রার্থীদের জন্য বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। একইসঙ্গে তারা দাবি করেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ৪৩০টি নতুন পদ বরাদ্দের পরও উপদেষ্টার কার্যালয় সেসব বাদ দিয়েছে, যা তারা অদৃশ্য প্রভাব বলেই মনে করছেন।

এছাড়া আন্দোলনকারীরা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ নম্বর প্রকাশ, ক্যাডার পছন্দ সংশোধনের সুযোগ এবং নন-ক্যাডার নিয়োগে স্বচ্ছতা চেয়ে ৭-দফা দাবিও উত্থাপন করেছেন।

এসময় এক আন্দোলনকারী বলেন, “এই বিসিএস প্রক্রিয়ায় আমাদের সাড়ে চার বছর নষ্ট হয়েছে। দুইবার ভাইভা নেওয়া হলেও ফলাফলে দেখা যাচ্ছে নানা অনিয়ম। আমরা এর পূর্ণ পর্যালোচনা চাই।”

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “পিএসসির সংস্কার মানে প্রশ্নফাঁস, স্বজনপ্রীতি ও অদৃশ্য হস্তক্ষেপের অবসান। ৫ আগস্টের মধ্যে আমরা দৃশ্যমান পদক্ষেপ চাই, নইলে রাজপথে লাগাতার কর্মসূচি চলবে।”

তাদের ৪ দফা দাবি হলো 

১) ৪৪তম বিসিএসের জন্য অধিযাচিত সব পদসহ পুনঃসুপারিশ এবং চয়েস লিস্টের নিচের ক্যাডারে সুপারিশ বাদ দিয়ে ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল পুনরায় প্রকাশ করতে হবে। সেই সঙ্গে পরবর্তী বিসিএসগুলোতে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে।

২) নন-ক্যাডার বিধি ২৩ বাতিল বা সংশোধন করতে হবে। পাশাপাশি ভাইভায় পাস করাদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে ৯ম ও ১০ম শ্রেণি গ্রেডে চাকরি দিতে হবে।

৩) অধিকতর স্বচ্ছতার জন্য প্রিলি, রিটেন ও ভাইভার নম্বর প্রকাশ করতে হবে এবং পরবর্তী বিসিএস থেকে লিখিত পরীক্ষার খাতা পিএসসিতে বসে মূল্যায়ন করতে হবে। পাশাপাশি চলমানসহ পরবর্তী বিসিএসে ভাইভার মার্ক সর্বোচ্চ ১০০ করতে হবে।

৪) প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির জন্য স্পেশাল বিসিএসসহ সব পরীক্ষার আগে একটি যৌক্তিক সময় দিতে হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত