আমন ধান-চাল সরবরাহে ব্যর্থতা
সবুর শাহ্ লোটাস, বগুড়া
আমন মৌসুমেও ধান-চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য বিভাগ। মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের কাছে এবারও ধরাশায়ী হয়েছে সরকার। অন্যান্য বছর তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলেও চলতি বছর কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার মিলারদের কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে সহস্রাধিক মিলারের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে।
আর ১০-১৫ দিন পরই শুরু হবে ইরি-বোরো মৌসুমে কাটা-মাড়াই। এর আগে মিলার বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় সরকারি গুদামগুলোতে ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া বাজারমূল্যের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত দরের পার্থক্য থাকায় নতুন মৌসুমেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সন্দিহান খাদ্য বিভাগ।
শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় গত আমন মৌসুমে নির্ধারিত পরিমাণে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এক হাজার ৭০০ চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগে ৯১৩টি ও রংপুর বিভাগে ৭৮৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
খাদ্য বিভাগ জানায়, কৃষক ও মিলারদের অনীহা এবং অন্যান্য কারণে এ বছর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চুক্তি বাতিল, নিবন্ধন স্থগিত এবং জামানত বাজেয়াপ্তের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দিনাজপুরে ৩১৬টি ও বগুড়ায় ১৯৮টি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিল করা করেছে। অন্যান্য জেলায়ও অনুরুপ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সিদ্ধ ও আতপ চালকলের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৩০০। তবে চাল সরবরাহের চুক্তি করেনি ৪৫টি অটোসহ ৭৫১টি চালকল। আবার চুক্তি করেও গুদামে চাল সরবরাহ করেনিÑ এমন মিলের সংখ্যা ১৬২টি। লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে ৩০ মিল এবং ৫০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে ৭১টি মিল। এ পরিস্থিতির কারণে খাদ্য মন্ত্রণালয় রাজশাহী বিভাগের ৯১৩ চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
খাদ্য বিভাগ আরো জানায়, রাজশাহী বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য কয়েক দফা সময়সীমা বাড়ানোর পরও আমনের ধান-চাল সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন হয়নি। যেখানে প্রায় ৫৬ হাজার ৫০০ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেখানে মাত্র ৮২৮ টন ধান সংগ্রহ করা গেছে। একইভাবে এক লাখ ১১ হাজার ২৬৩ টন সিদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৯৪ হাজার ৭০৭ টন সংগ্রহ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে দুই হাজার ৩৬২ টন কম।
রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, ৬০ শতাংশ চাল সরবরাহ করা মিলগুলোকে বিশেষ বিবেচনায় জামানত ফেরত দেওয়া হবে। তবে যারা এর কম চাল সরবরাহ করেছে, তারা তাদের সরবরাহকৃত চালের পরিমাণ অনুযায়ী জামানত ফেরত পাবে।
অপরদিকে, রংপুর বিভাগের ৮ জেলা গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুরে চাল সরবরাহ করতে চুক্তি না করায় ৭৮৭ মিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। আমন মৌসুমে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৫ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন। সেখানে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। ধান সংগ্রহ সন্তোষজনক হয়নি। আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ১৬৪ টন ও সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৭৫৪ টন। চাল সংগ্রহ হয়েছে প্রায় শতভাগ। এই চাল তিন হাজার ২৩৬ মিলারের দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে ৭৮৭ জন মিলার চাল সরবরাহে খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেনি। যার ফলে ওইসব মিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে।
রংপুর খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রংপুর জেলায় সিদ্ধ চাল সরবরাহের চুক্তি করেনি ১০৪ মিলার। এর মধ্যে একটি অটো এবং ১০৩টি হাস্কিং মিল; লালমনিরহাটে ২৬টি, নীলফামারীতে ২৪টি, কুড়িগ্রামে ৩৪টি, দিনাজপুরে ২৯৬টি, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৩৯টি এবং পঞ্চগড়ে ৩৩টি আটো ও হাস্কিং মিল খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেনি। ফলে ওইসব মিলারের লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, রাজশাহী বিভাগের আওতায় বগুড়া জেলায় আমন চাল সংগ্রহ মৌসুমে চুক্তিযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চুক্তি না করায় ১৯৮ চালকলের লাইসেন্স বাতিল, চাল সরবরাহের চুক্তি করেও কোনো চাল সরবরাহ না করায় ৩৪ মিলের জামানত সম্পূর্ণ বাজেয়াপ্ত করা হয়। আর যারা চুক্তির ৬০ ভাগের কম চাল সরবরাহ করেছেÑ এমন ৬২ মিলের জামানত আনুপাতিক হারে বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২টি উপজেলায় ২০২৪-২৫ আপদকালীন আমন চাল সংগ্রহে চুক্তিযোগ্য অটোমেটিক ও হাস্কিং মিলে মোট ৯১১টি চালকল ছিল। আমন মৌসুমে আপদকালীন চালের মজুতের লক্ষ্যে ৪৭ টাকা কেজি দরে ৩১ হাজার ২৮৪ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ৪৬ টাকা কেজি দরে তিন হজার ৬১৮ টন আতপ ও ৩৪ হাজার ৯০২ টন চাল সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়। চুক্তিতে মোট ৭০৮টি মিল ৩৩ হাজার ৮২ টন চাল সরবরাহে চুক্তি সম্পাদন করেছিল।
রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলায় চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় ৩১৬ মিলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। নিবন্ধন বাতিল করা চালকলের মধ্যে ২৯৬টি সিদ্ধ ও ২০টি আতপ চালকল রয়েছে। দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আমন মৌসুমে সরকারের খাদ্য সংগ্রহ অভিযানে জেলায় সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫২ হাজার ৮৭২ টন। আর আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৮০৬ টন। এছাড়া ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৭৯১ টন। অভিযানে ধান-চাল সরবরাহের জন্য ৯১১টি সিদ্ধ চালকল এবং ৮৩টি আতপ চালকল মালিক চুক্তিবদ্ধ হন। ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বরে শুরু হওয়া সংগ্রহ অভিযান চলে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে এ সময়ের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ মিল থেকে ৪৮ হাজার ৭২৪ দশমিক ৪০ টন সিদ্ধ চাল, ১১ হাজার ৩০৬ দশমিক ৪৬ টন আতপ চাল ও দুই হাজার ২৫৮ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।
মিল মালিকরা জানিয়েছেন, সরকার ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ না করেই চালের দাম নির্ধারণ করে চাল ক্রয় করে। আমন মৌসুমে ধানের দাম বেশি থাকা সত্ত্বেও মিল মালিকরা লোকসান দিয়ে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেছিলেন। তারপরও লাইসেন্স বাতিল করা অমানবিক। বগুড়ার শান্তাহার বৈশাখী অটো রাইসমিলের মালিক ইসমাইল হোসেন, বেলকম অটো রাইসমিলের মালিক বেলাল হোসেন, চাল ব্যবসায়ী হাফেজ বেলাল, বগুড়ার শেরপুরের শিনু রাইসমিলের মালিক শিরু এ তথ্য জানান।
কৃষকরা বলেন, সরকার নির্ধারিত দরে ধান দিতে হলে অতিরিক্ত পরিবহন ও শ্রমিক খরচ দিয়ে খাদ্য বিভাগের গুদামে পৌঁছে দিতে হয়। আবার সে কাজটাও এতোটা সহজ নয়, সেখানে গিয়ে কর্মকর্তাদের পেছনে ধর্ণা দিতে হয়। এ ছাড়া তাদের হয়রানির শিকার হননি এমন কৃষক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অপরদিকে মিলার কিংবা পাইকাররা সরকারি দরের চেয়ে অধিক দামে বাড়ি থেকে ধান কিনে নিয়ে গুদামে মজুত করে। এরপর সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করে বিক্রি করে। এভাবেই প্রতি বছর চালের দাম বাড়ে।
আমন মৌসুমেও ধান-চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে খাদ্য বিভাগ। মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের কাছে এবারও ধরাশায়ী হয়েছে সরকার। অন্যান্য বছর তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলেও চলতি বছর কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার মিলারদের কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে সহস্রাধিক মিলারের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে।
আর ১০-১৫ দিন পরই শুরু হবে ইরি-বোরো মৌসুমে কাটা-মাড়াই। এর আগে মিলার বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় সরকারি গুদামগুলোতে ধান-চাল সংগ্রহ নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া বাজারমূল্যের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত দরের পার্থক্য থাকায় নতুন মৌসুমেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সন্দিহান খাদ্য বিভাগ।
শস্যভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত উত্তরবঙ্গের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় গত আমন মৌসুমে নির্ধারিত পরিমাণে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এক হাজার ৭০০ চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রাজশাহী বিভাগে ৯১৩টি ও রংপুর বিভাগে ৭৮৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
খাদ্য বিভাগ জানায়, কৃষক ও মিলারদের অনীহা এবং অন্যান্য কারণে এ বছর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চুক্তি বাতিল, নিবন্ধন স্থগিত এবং জামানত বাজেয়াপ্তের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দিনাজপুরে ৩১৬টি ও বগুড়ায় ১৯৮টি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাতিল করা করেছে। অন্যান্য জেলায়ও অনুরুপ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় খাদ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ সিদ্ধ ও আতপ চালকলের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৩০০। তবে চাল সরবরাহের চুক্তি করেনি ৪৫টি অটোসহ ৭৫১টি চালকল। আবার চুক্তি করেও গুদামে চাল সরবরাহ করেনিÑ এমন মিলের সংখ্যা ১৬২টি। লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে ৩০ মিল এবং ৫০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে ৭১টি মিল। এ পরিস্থিতির কারণে খাদ্য মন্ত্রণালয় রাজশাহী বিভাগের ৯১৩ চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
খাদ্য বিভাগ আরো জানায়, রাজশাহী বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য কয়েক দফা সময়সীমা বাড়ানোর পরও আমনের ধান-চাল সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন হয়নি। যেখানে প্রায় ৫৬ হাজার ৫০০ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেখানে মাত্র ৮২৮ টন ধান সংগ্রহ করা গেছে। একইভাবে এক লাখ ১১ হাজার ২৬৩ টন সিদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৯৪ হাজার ৭০৭ টন সংগ্রহ হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে দুই হাজার ৩৬২ টন কম।
রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, ৬০ শতাংশ চাল সরবরাহ করা মিলগুলোকে বিশেষ বিবেচনায় জামানত ফেরত দেওয়া হবে। তবে যারা এর কম চাল সরবরাহ করেছে, তারা তাদের সরবরাহকৃত চালের পরিমাণ অনুযায়ী জামানত ফেরত পাবে।
অপরদিকে, রংপুর বিভাগের ৮ জেলা গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুরে চাল সরবরাহ করতে চুক্তি না করায় ৭৮৭ মিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। আমন মৌসুমে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৫ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন। সেখানে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। ধান সংগ্রহ সন্তোষজনক হয়নি। আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ১৬৪ টন ও সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৭৫৪ টন। চাল সংগ্রহ হয়েছে প্রায় শতভাগ। এই চাল তিন হাজার ২৩৬ মিলারের দেওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে ৭৮৭ জন মিলার চাল সরবরাহে খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেনি। যার ফলে ওইসব মিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে বলে জানা গেছে রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর সূত্রে।
রংপুর খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রংপুর জেলায় সিদ্ধ চাল সরবরাহের চুক্তি করেনি ১০৪ মিলার। এর মধ্যে একটি অটো এবং ১০৩টি হাস্কিং মিল; লালমনিরহাটে ২৬টি, নীলফামারীতে ২৪টি, কুড়িগ্রামে ৩৪টি, দিনাজপুরে ২৯৬টি, ঠাকুরগাঁওয়ে ১৩৯টি এবং পঞ্চগড়ে ৩৩টি আটো ও হাস্কিং মিল খাদ্য বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেনি। ফলে ওইসব মিলারের লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, রাজশাহী বিভাগের আওতায় বগুড়া জেলায় আমন চাল সংগ্রহ মৌসুমে চুক্তিযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও চুক্তি না করায় ১৯৮ চালকলের লাইসেন্স বাতিল, চাল সরবরাহের চুক্তি করেও কোনো চাল সরবরাহ না করায় ৩৪ মিলের জামানত সম্পূর্ণ বাজেয়াপ্ত করা হয়। আর যারা চুক্তির ৬০ ভাগের কম চাল সরবরাহ করেছেÑ এমন ৬২ মিলের জামানত আনুপাতিক হারে বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২টি উপজেলায় ২০২৪-২৫ আপদকালীন আমন চাল সংগ্রহে চুক্তিযোগ্য অটোমেটিক ও হাস্কিং মিলে মোট ৯১১টি চালকল ছিল। আমন মৌসুমে আপদকালীন চালের মজুতের লক্ষ্যে ৪৭ টাকা কেজি দরে ৩১ হাজার ২৮৪ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ৪৬ টাকা কেজি দরে তিন হজার ৬১৮ টন আতপ ও ৩৪ হাজার ৯০২ টন চাল সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়। চুক্তিতে মোট ৭০৮টি মিল ৩৩ হাজার ৮২ টন চাল সরবরাহে চুক্তি সম্পাদন করেছিল।
রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলায় চাল সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ না হওয়ায় ৩১৬ মিলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে। নিবন্ধন বাতিল করা চালকলের মধ্যে ২৯৬টি সিদ্ধ ও ২০টি আতপ চালকল রয়েছে। দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আমন মৌসুমে সরকারের খাদ্য সংগ্রহ অভিযানে জেলায় সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫২ হাজার ৮৭২ টন। আর আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৮০৬ টন। এছাড়া ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ৭৯১ টন। অভিযানে ধান-চাল সরবরাহের জন্য ৯১১টি সিদ্ধ চালকল এবং ৮৩টি আতপ চালকল মালিক চুক্তিবদ্ধ হন। ২০২৪ সালের ১৭ নভেম্বরে শুরু হওয়া সংগ্রহ অভিযান চলে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে এ সময়ের মধ্যে চুক্তিবদ্ধ মিল থেকে ৪৮ হাজার ৭২৪ দশমিক ৪০ টন সিদ্ধ চাল, ১১ হাজার ৩০৬ দশমিক ৪৬ টন আতপ চাল ও দুই হাজার ২৫৮ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।
মিল মালিকরা জানিয়েছেন, সরকার ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ না করেই চালের দাম নির্ধারণ করে চাল ক্রয় করে। আমন মৌসুমে ধানের দাম বেশি থাকা সত্ত্বেও মিল মালিকরা লোকসান দিয়ে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেছিলেন। তারপরও লাইসেন্স বাতিল করা অমানবিক। বগুড়ার শান্তাহার বৈশাখী অটো রাইসমিলের মালিক ইসমাইল হোসেন, বেলকম অটো রাইসমিলের মালিক বেলাল হোসেন, চাল ব্যবসায়ী হাফেজ বেলাল, বগুড়ার শেরপুরের শিনু রাইসমিলের মালিক শিরু এ তথ্য জানান।
কৃষকরা বলেন, সরকার নির্ধারিত দরে ধান দিতে হলে অতিরিক্ত পরিবহন ও শ্রমিক খরচ দিয়ে খাদ্য বিভাগের গুদামে পৌঁছে দিতে হয়। আবার সে কাজটাও এতোটা সহজ নয়, সেখানে গিয়ে কর্মকর্তাদের পেছনে ধর্ণা দিতে হয়। এ ছাড়া তাদের হয়রানির শিকার হননি এমন কৃষক খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অপরদিকে মিলার কিংবা পাইকাররা সরকারি দরের চেয়ে অধিক দামে বাড়ি থেকে ধান কিনে নিয়ে গুদামে মজুত করে। এরপর সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করে বিক্রি করে। এভাবেই প্রতি বছর চালের দাম বাড়ে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বুধবার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তিনটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এ তিনটি কনভেনশন অনুসমর্থন
১ ঘণ্টা আগেভারতের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষায় ভূরুঙ্গামারী, থানচি ও মেহেরপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নতুন তিনটি ব্যাটালিয়ন গঠন করা হচ্ছে। এই তিন ব্যাটালিয়নসহ বিজিবির জন্য মোট ২ হাজার ২৫৮টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সীমান্ত-১ শাখা থেকে মঙ্গলবার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগেপরে অন্য সিনিয়র রিপোর্টারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এ্যানি। এ সময় আমার দেশ-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, বার্তা সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন, ভারপ্রাপ্ত চিফ রিপোর্টার বাছির জামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
৪ ঘণ্টা আগেসেন্টমার্টিন দ্বীপে নৌযান চলাচলের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে। বুধবার মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৫ ঘণ্টা আগে