টানা বৃষ্টিতে ২০ জেলায় দুই লাখ ৫০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯: ১৫
আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২৫, ২০: ৪৫

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সারা দেশে দুই লাখ ৫০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার বিকালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (মনিটরিং ও বাস্তবায়ন) ড. মো. জামাল উদ্দীন আমার দেশকে বলেন, সারাদেশের মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অ্যাসেস করে দেখেছি ২০ জেলার দুই লাখ ৫০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

তিনি বলেন, টানা বৃষ্টিতে কৃষকের আউস ধান, আমনের বীজতলা ও গ্রীষ্মকালীন শাকসবজির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উল্লেখিত ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হলেও এই বৃষ্টি পাটের জন্য ভালো হয়েছে। পাটচাষিরা বৃষ্টিপানিতে পাট জাগ দিতে সুযোগ পাচ্ছেন, এতে পাটের মানও ভাল হবে বলে জানান তিনি।

ড. মো. জামাল উদ্দীন বলেন, আমরা দুই লাখ ৫০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা কৃষি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনার আলোকে কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সারা দেশের ২০ জেলায় প্রথমদিকে এক লাখ ৩৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বৃষ্টিপাত কমে আসায় ফসল পানিতে ডুবে থাকার হার কমে আক্রান্তের পরিমাণ নেমে আসে ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টরে। গত রোববার আরো কমে দাঁড়ায় ৪০ হাজার হেক্টর জমি। সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে আক্রান্ত হয় ফেনি ও বরিশাল অঞ্চলের কৃষি জমি। তবে পানি দ্রুত নেমে গিয়ে বরিশাল অঞ্চল অনেকটাই রিকভারি করেছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালি, বরগুনা, ভোলা এবং শরীয়তপুর জেলাসহ দেশের ২১ জেলার অন্তত ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।

এর মধ্যে ৪৪ হাজার ৬৬২ হেক্টর জমির আউশ, ১৪ হাজার ৩৯৩ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, ১৩৫ হেক্টর জমির পাট, ৯ হাজার ৬৭৩ হেক্টর জমির শাকসবজি, ১১৪ হেক্টর জমির কলা, ২৯৩ হেক্টর জমির পেঁপে, ৩৮৭ হেক্টর জমির পান, ২৯৭ হেক্টর জমির বোনা আমন আবাদ, ১০৪ হেক্টর জমির মরিচ, ২৯৩ হেক্টর জমির পেঁপে, ২৮১ হেক্টর জমির গ্রীষ্মকালীন তরমুজসহ বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এর মধ্যে শুধু কুমিল্লা জেলাতেই ১১ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল (আউশ, আমন, শাকসবজি, মরিচ, আখ) তলিয়েছে পানিতে।

নোয়াখালী জেলার ৭ হাজার ৮০৬ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল (আউশ, আমন, শাকসবজি, মরিচ, তরমুজ) পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ফেনী জেলার ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল (আউশ, আমন, শাকসবজি, মরিচ) পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। তবে, বৃষ্টিপাত কমে আসায় ফসল পানিতে ডুবে থাকার হার দ্রুত কমে আসে বলে কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত