মুগ্ধর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবারে শোকের ছায়া

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ১৮ জুলাই ২০২৫, ১৯: ০৩
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৫, ১৯: ০৬

আজ সেই ১৮ জুলাই। ২০২৪ সালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় পানি লাগবে, পানি... বলে সকলের অন্তর দখল করে নেওয়া তরুণ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছিলেন আজকের এদিনেই। জুলাই বিপ্লবের এই অকুতোভয় শহীদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে পরিবারে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।

মুগ্ধর যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং বিচার প্রক্রিয়ার ধীরগতি নিয়ে তীব্র হতাশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এক বছর হয়ে গেল, আমরা নিজেরাই ফুটেজ সংগ্রহ করে দিলাম, কিন্তু পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারল না। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

বিজ্ঞাপন

শহীদ মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শেষবার যখন দেখা হয়, ওর সাথে কথা বলতে চেয়েও পারিনি। সেই আফসোস আজও আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। বিচারের এই ধীরগতি আমাদের হতাশ করেছে। সরকারের এই ব্যর্থতা মেনে নেওয়ার মতো নয়।

মুগ্ধর বাবার নাম মীর মোস্তাফিজুর রহমান, মায়ের নাম শাহানা চৌধুরী। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিন ভাইয়ের মধ্যে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও মুগ্ধ ছিলেন যমজ। মুগ্ধ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে গণিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে এমবিএ করছিলেন।

মুগ্ধর মৃত্যুর সময় তার গলায় বিইউপি আইডি কার্ডটি রক্তমাখা অবস্থায় ছিল। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফাইভারে এক হাজারের বেশি কাজ সম্পন্ন করেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ের পাশাপাশি তিনি একজন ভ্রমণপিপাসু, ফুটবলার, এবং বাংলাদেশ স্কাউটসের সদস্য ছিলেন।

ফাইভার পোস্টে জানায়, মুগ্ধ ছিলেন একজন প্রতিভাবান মার্কেটার। বিশেষ করে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবস্থাপনায় তার ছিল অসাধারণ দক্ষতা।

২০২৪ সালের ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকায় সংঘর্ষ চলাকালে মুগ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর তার যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ফেসবুকে একটি ছোট ভিডিও পোস্ট করলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। মুগ্ধর পরিবার এবং সাধারণ মানুষ আশা করেছিল, এই ঘটনার দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার হবে। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার প্রক্রিয়া থমকে থাকায় তাদের হতাশা আরও বাড়ছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত