র‍্যাবের পোশাকে আমার দেশ সাংবাদিককে অপহরণচেষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৩ মে ২০২৫, ০৪: ১৫

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফেরার পথে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সদস্য পরিচয়ে একদল ব্যক্তি আমার দেশ-এর সাংবাদিক ইমদাদ হোসাইনকে অপহরণের চেষ্টা করে। পরে সাংবাদিক পরিচয় জানার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গত বুধবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুক লাইভে এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন ইমদাদ হোসাইন। তিনি জানান, তার প্রবাসী মামাকে রিসিভ করতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। ফেরার সময় তিনি একটি রাইড শেয়ারিং সার্ভিস (পাঠাও) বুক করেন। কাওলা এলাকায় পাঠাও বাইকে উঠার পর চলন্ত অবস্থায় একটি সাদা মাইক্রোবাস তাদের সামনে এসে বাধা দেয়।

ইমদাদ হোসাইন বলেন, মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন ব্যক্তি নেমে আমাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয়। তারা আমার বাইকারের চাবিও ছিনিয়ে নেয়। গাড়ির ভেতরে তারা আমার হেলমেট খুলে মারধর শুরু করে। পরে চোখ বেঁধে ফেলে এবং আমার মানিব্যাগসহ অন্যান্য জিনিসপত্র খোঁজা শুরু করে। তারা বারবার জিজ্ঞাসা করছিল, ‘গোল্ড কোথায়?’ এক পর্যায়ে একজন আমার মাথায় পিস্তল ধরে হুমকি দেয়।

তিনি আরো বলেন, আমি যখন বললাম আমি সাংবাদিক, আমার দেশ-এ কাজ করি, তখন তারা কিছুটা শান্ত হয়। ফিসফিস করে আলোচনার পর তারা আমাকে উত্তরার আজমপুরে নামিয়ে দেয় এবং সব জিনিসপত্র ফেরত দেয়। তারা বলেছিল, ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আমাকে তুলে নেওয়া হয়েছে।

ইমদাদ হোসাইন জানান, তাকে ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি ঘটনাস্থলে ফিরে গেলে সেখানে বাইকারকে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে দেখেন। বাইকার তাকে জানান, তিনি ভয় পেয়ে ৯৯৯-এ ফোন করেছিলেন।

ইমদাদ হোসাইন বলেন, এ ঘটনার পর আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, ভুক্তভোগী সাংবাদিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কথা বলেছেন। র‌্যাবের কেউ এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কথা নয়। র‌্যাবের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে বিভিন্নভাবে অপরাধীরা চেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। সংগঠনের সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এক বিবৃতিতে বলেন, সাংবাদিক এমদাদ হোসাইনকে র‌্যাবের কোটি পরা কয়েকজন মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে মারধর করেছে এটা খুবই ন্যক্কারজনক এবং নিন্দনীয় ঘটনা। আইনশৃঙ্খলা রাক্ষাকারী বাহিনীর পোশাক পরে কোনো কারণ ছাড়া যে কোনো ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলে নিয়ে মারধর করা এবং অপহরণের চেষ্টা করা আইনের পরিপন্থি। এমনিতে র‌্যাব ইমেজ সংকটে ভুগছে। এ সময় গুটি কয়েক সদস্য র‌্যাবের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছে। ওই লোকজন আসলেই র‌্যাবের সদস্য কি না, তা র‌্যাবকেই নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বিষয়:

অপহরণ
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত