সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ১৫

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বিজ্ঞাপন

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় দুই ঘণ্টার অধিক সময় ধরে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ নিয়ে ব্রিফিং করেন প্রেস সচিব।

তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার ডিসইনফরমেশন, নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ পদায়ন, নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক হয়।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচন বানচালে দেশের ভেতর ও বাহিরে থেকে অনেক শক্তি কাজ করবে। ছোটখাট নয়; বড় শক্তির কাছ থেকে আক্রমণ চলে আসতে পারে। এই নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে। যত ঝড় আসুক না কেন, আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে।

আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনসংক্রান্ত সব প্রস্তুতি শেষ করতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

আগামী নির্বাচনকে ঘিরে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হবে বলে প্রধান উপদেষ্টার বরাত দিয়ে বলেছেন প্রেস সচিব।

সামাজিক মাধ্যমের অপতথ্যের নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতি বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- সোশ্যাল মিডিয়ার অপপ্রচার আসবে, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশের ভেতর ও বাহিরে থেকে খুবই পরিকল্পিতভাবে নানা রকম অপপ্রচার চালানো হবে। এআই ছবি-ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেওয়া হবে। এটাকে সামাল দিতেই হবে। একটা অপপ্রচারের রচনা হওয়া মাত্র সেটা ঠেকাতে হবে, যেন ছড়াতে না পারে।”

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “আগামী নির্বাচন সুন্দর ও উৎসবমুখর করতে হলে মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে। নির্বাচনী নীতিমালা, ভোট কেন্দ্রের নিয়ম, কিভাবে ভোট প্রদান করতে হবে, কোথাও বিশৃঙ্খলা হলে কি করতে হবে, এসব বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। এই আলোকে ইলেকশন কমিশন এবং কালচারাল মিনিস্ট্রিকে টিভিসি বা ডকুমেন্টারি তৈরি করতে হবে।”

প্রেস সচিব বলেন, “বৈঠকে নির্বাচনকারী নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে- নির্বাচনে আর্মি ও নেভির ৯২ হাজার ৫০০ এর মত সদস্য মোতায়েন থাকবে। এর মধ্যে ৯০ হাজার থাকবে সেনা সদস্য বাকিটা নৌবাহিনী সদস্য। এছাড়া নির্বাচন দিনের ৭২ ঘণ্টা আগে এবং নির্বাচনের ৭২ ঘণ্টা পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মোকাবিলা বিশেষ প্রস্তুতি থাকবে।”

মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নিজ এলাকা কিংবা শ্বশুরবাড়ি থাকে সেখানেও তার পোস্টিং সেখানে হবে না। কোন এলাকায় আত্মীয়-স্বজন নির্বাচনে দাঁড়ালেও সেখানে পদায়ন হবে না।”

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বৈঠকে জানান, ৬৪ জেলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন,“সবচেয়ে যোগ্য লোকগুলোকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিয়োগ করতে হবে।”

বিগত তিনটি নির্বাচনে ডিসি, এডিসি ও নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদেরকে এবারে নির্বাচনে যুক্ত না রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব।

বৈঠকে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বিশেষ সহকারী আব্দুল হাফিজ, বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, মুখ্য সচিব সিরাজউদ্দিন মিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল কামরুল হাসান, পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, র্যাব মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান, ডিজি কোস্টগার্ড রিয়ার এডমিরাল জিয়াউল হকসহ এনএসআই, ডিজিএফআই প্রতিনিধিরা ছিলেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত