
আমার দেশ অনলাইন

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নতুন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। দুই দেশের প্রতিনিধিদের মতে, বাণিজ্য, কূটনীতি ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়াতে এবার গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সরাসরি বিমান সংযোগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘ফিফথ ফ্রিডম ফ্লাইট’ ব্যবস্থার আওতায় তৃতীয় কোনো দেশের এয়ারলাইন্সকে দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আছে।
বাংলাদেশের জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হুসাইন খান এবং থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘের এসক্যাপ প্রতিনিধি ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী এক সাক্ষাৎকারে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তাদের মতে, পারস্পরিক সম্মান, অভিন্ন ইতিহাস ও অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক পরিপূরক অবস্থার ভিত্তিতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন সম্ভব।
সরাসরি বিমান যোগাযোগের পরিকল্পনা
রিজওয়ানা হাসান জানান, বিমান বাংলাদেশের বহর সম্প্রসারণের পরিকল্পনা চলছে, যাতে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় যাত্রীদের যে অসুবিধা হয় তা কমানো যায়।
রাষ্ট্রদূত ফাইয়াজ মুরশিদ কাজীর মতে, বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর সক্ষমতা সীমিত হওয়ায় সংযুক্ত আরব আমিরাত বা চীনের মতো দেশের এয়ারলাইন্সকে ‘ফিফথ ফ্রিডম’ চুক্তির আওতায় যুক্ত করে রুট চালু করা যেতে পারে।
হাইকমিশনার ইকবাল হুসাইন বলেন, “আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলোকে উৎসাহিত করা গেলে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান সংযোগ স্থাপন সহজ হবে।”
ফাইয়াজ কাজী আরও বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলেও লজিস্টিক সীমাবদ্ধতা ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এখনো বড় বাধা। পাকিস্তানের ঋণ সংকট ও বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সংস্কার প্রক্রিয়া এসব উদ্যোগে প্রভাব ফেলছে। তবে তার মতে, আর্থিক স্থিতি ফেরার অপেক্ষা না করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপন ও বিনিয়োগ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনা
রাষ্ট্রদূত ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী জানান, বর্তমানে সীমিত পরিসরে চলা বাংলাদেশ-পাকিস্তান বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওষুধশিল্প পাকিস্তানের জন্য সাশ্রয়ী পণ্যের উৎস হতে পারে, অন্যদিকে পাকিস্তানের ক্রীড়া ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বাংলাদেশের বাজারে প্রতিযোগিতামূলকভাবে জায়গা পেতে পারে।
এছাড়া কৃষিপণ্য, মাছ এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতেও উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রচুর মাছ উৎপাদন পাকিস্তানের বাজারে প্রোটিনের উৎস হতে পারে, আবার পাকিস্তান বাংলাদেশের জন্য ধানসহ কৃষিপণ্যের সরবরাহকারী হতে পারে।
পরিবহন ও আঞ্চলিক সংযোগ
ফাইয়াজ কাজীর মতে, ঢাকা-ইসলামাবাদ ও ঢাকা-করাচি রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন—বিশেষ করে পচনশীল কৃষিপণ্যের বাণিজ্যে—বড় সুবিধা হবে।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্রপথে যোগাযোগ বাড়ানো গেলে চট্টগ্রাম ও মাতারবাড়ি বন্দর এবং পাকিস্তানের আধুনিক বন্দরগুলো একে অপরের পরিপূরক ভূমিকা রাখতে পারে। এতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে।
ইতিহাস পেরিয়ে ভবিষ্যতের পথে
ফাইয়াজ কাজী বলেন, “বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে মতভেদ থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু নেতাদের দায়িত্ব হলো বিভাজনের বদলে ঐক্য সৃষ্টি করা।”
তিনি স্বীকার করেন, ১৯৭১ সালের ইতিহাস এখনও দুই দেশের সম্পর্কে ছায়া ফেলে, তবে নতুন প্রজন্মকে সেই অতীত অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে।
তার মতে, গণমাধ্যম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে যৌথ ভুলগুলো সংশোধন করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ায় ঐক্য ও সহযোগিতার নতুন স্রোত বইবে।”
উৎস: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন (সংক্ষিপ্ত অনুবাদ ও সম্পাদিত সংস্করণ)
এসআর

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় রচনায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নতুন উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। দুই দেশের প্রতিনিধিদের মতে, বাণিজ্য, কূটনীতি ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বাড়াতে এবার গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সরাসরি বিমান সংযোগ ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘ফিফথ ফ্রিডম ফ্লাইট’ ব্যবস্থার আওতায় তৃতীয় কোনো দেশের এয়ারলাইন্সকে দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় আছে।
বাংলাদেশের জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হুসাইন খান এবং থাইল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘের এসক্যাপ প্রতিনিধি ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী এক সাক্ষাৎকারে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তাদের মতে, পারস্পরিক সম্মান, অভিন্ন ইতিহাস ও অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক পরিপূরক অবস্থার ভিত্তিতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন সম্ভব।
সরাসরি বিমান যোগাযোগের পরিকল্পনা
রিজওয়ানা হাসান জানান, বিমান বাংলাদেশের বহর সম্প্রসারণের পরিকল্পনা চলছে, যাতে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় যাত্রীদের যে অসুবিধা হয় তা কমানো যায়।
রাষ্ট্রদূত ফাইয়াজ মুরশিদ কাজীর মতে, বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলোর সক্ষমতা সীমিত হওয়ায় সংযুক্ত আরব আমিরাত বা চীনের মতো দেশের এয়ারলাইন্সকে ‘ফিফথ ফ্রিডম’ চুক্তির আওতায় যুক্ত করে রুট চালু করা যেতে পারে।
হাইকমিশনার ইকবাল হুসাইন বলেন, “আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলোকে উৎসাহিত করা গেলে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান সংযোগ স্থাপন সহজ হবে।”
ফাইয়াজ কাজী আরও বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলেও লজিস্টিক সীমাবদ্ধতা ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এখনো বড় বাধা। পাকিস্তানের ঋণ সংকট ও বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সংস্কার প্রক্রিয়া এসব উদ্যোগে প্রভাব ফেলছে। তবে তার মতে, আর্থিক স্থিতি ফেরার অপেক্ষা না করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপন ও বিনিয়োগ বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নতুন সম্ভাবনা
রাষ্ট্রদূত ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী জানান, বর্তমানে সীমিত পরিসরে চলা বাংলাদেশ-পাকিস্তান বাণিজ্য আরও সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওষুধশিল্প পাকিস্তানের জন্য সাশ্রয়ী পণ্যের উৎস হতে পারে, অন্যদিকে পাকিস্তানের ক্রীড়া ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বাংলাদেশের বাজারে প্রতিযোগিতামূলকভাবে জায়গা পেতে পারে।
এছাড়া কৃষিপণ্য, মাছ এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতেও উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। বাংলাদেশের প্রচুর মাছ উৎপাদন পাকিস্তানের বাজারে প্রোটিনের উৎস হতে পারে, আবার পাকিস্তান বাংলাদেশের জন্য ধানসহ কৃষিপণ্যের সরবরাহকারী হতে পারে।
পরিবহন ও আঞ্চলিক সংযোগ
ফাইয়াজ কাজীর মতে, ঢাকা-ইসলামাবাদ ও ঢাকা-করাচি রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন—বিশেষ করে পচনশীল কৃষিপণ্যের বাণিজ্যে—বড় সুবিধা হবে।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্রপথে যোগাযোগ বাড়ানো গেলে চট্টগ্রাম ও মাতারবাড়ি বন্দর এবং পাকিস্তানের আধুনিক বন্দরগুলো একে অপরের পরিপূরক ভূমিকা রাখতে পারে। এতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার বাণিজ্যে নতুন গতি আসবে।
ইতিহাস পেরিয়ে ভবিষ্যতের পথে
ফাইয়াজ কাজী বলেন, “বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে মতভেদ থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু নেতাদের দায়িত্ব হলো বিভাজনের বদলে ঐক্য সৃষ্টি করা।”
তিনি স্বীকার করেন, ১৯৭১ সালের ইতিহাস এখনও দুই দেশের সম্পর্কে ছায়া ফেলে, তবে নতুন প্রজন্মকে সেই অতীত অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে।
তার মতে, গণমাধ্যম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে যৌথ ভুলগুলো সংশোধন করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ায় ঐক্য ও সহযোগিতার নতুন স্রোত বইবে।”
উৎস: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন (সংক্ষিপ্ত অনুবাদ ও সম্পাদিত সংস্করণ)
এসআর

আইনের সংঘাতে আসা শিশুদের সংশোধন ও উন্নয়নে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় পরিচালিত হওয়া ৩টি শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে দ্বিগুণেরও বেশি নিবাসী রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিশু নিবাসীর অবস্থান গাজীপুরের টঙ্গীর বালক শাখায়।
৩৯ মিনিট আগে
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে আজ সন্ধ্যা ৬টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
কেন্দ্র ও মাঠ পর্যায়ের ১২ কর্মকর্তাকে বদলি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ইসির জনবল ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমান।
২ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা ২০২৩ সালের পর থেকে কমছে। এই ধারা এ বছরও অব্যাহত রয়েছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে কক্সবাজারে শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বিকল্প অর্থের উৎস খুঁজে নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
২ ঘণ্টা আগে