জুলাই সনদ সই হবে আগামী বুধবার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১১: ২৩

জুলাই জাতীয় সনদ সই হবে আগামী বুধবার। ওই দিন বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এ ঐতিহাসিক স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এতে নেতৃত্ব দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস, অংশ নেবেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা।

বিজ্ঞাপন

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে ঐকমত্য কমিশন কার্যালয়ের সভাকক্ষে কমিশনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয় বলে কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের পাঁচটি বৈঠকে প্রাপ্ত মতামত বিশ্লেষণ করা হয়। বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয় যে, বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলো থেকে পাওয়া অভিমত বিশ্লেষণ করে খুব শিগগির বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত সুপারিশ এবং চূড়ান্ত করা জুলাই সনদ সরকারের কাছে জমা দেওয়া যাবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া। এছাড়া ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও সভায় অংশ নেন।

রাষ্ট্রীয় সংস্কারে গঠিত ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে তিন ধাপে সংলাপ করে। দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ তৈরি করে। তবে, সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলোর মতানৈক্য এখনো দূর হয়নি। যা নিয়ে তৃতীয় ধাপের পাঁচ দিনের সংলাপেও সমাধান হয়নি। গত বুধবার দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের শেষ দিনে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হলেও ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি।

এদিকে নির্বাচন কমিশনও সংসদ নির্বাচনের দিনে গণভোট অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছে। গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেন, অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় না করে একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট করা উচিত। একই দিনে দুই ভোট করতে সক্ষম নির্বাচন কমিশন। জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে গণভোট আয়োজনে ঘোষিত ফেব্রুয়ারির সময়ে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরো বলেন, গণভোট সংসদ নির্বাচনের দিনে হলে বড় ব্যয় সাশ্রয় হবে। তবে ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ কিছু বাড়ানো লাগতে পারে। এতে আইনগত কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গতকাল সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে সেখানে প্যাকেজ সুপারিশের চেয়েও জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের বিষয়ে বেশি আলোচনা হয়। প্রথমে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানটি করার চিন্তা হলেও প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শে সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় করার সিদ্ধান্ত হয়। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দলের সঙ্গে কমিশনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়, যাতে দলগুলো ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বলে কমিশন সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে কমিশন থেকে স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সংলাপে অংশ নেওয়া ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে দুজন করে প্রতিনিধির নাম পাঠাতে বলা হয়। এরই মধ্যে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নাম পাঠিয়েছে।

ঐকমত্য কমিশন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি ঐতিহাসিক উল্লেখ করে আড়ম্বর আয়োজনে করতে চায়। এ ক্ষেত্রে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপির কমপক্ষে ৩০ জন করে নেতাকে আমন্ত্রণ জানাবে। এ ছাড়া অন্য দলগুলোর ১০ জন করে প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানাতে পারে কমিশন। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের বিষয়ে আগামী শনিবার আবার বৈঠকে বসবে কমিশন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনির হায়দার আমার দেশকে বলেন, সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। তারা ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে। সব দলের দুজন প্রতিনিধি ছাড়াও যথেষ্ট সংখ্যক নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত