২০২৬ এ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করবে বাংলাদেশ, প্রস্তুতির আহ্বান ড. ইউনূসের

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৫, ১৯: ১১
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৩: ০৫

নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী বছরই স্বল্পোন্নত (এলডিসি) থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ জন্য যেসব চ্যালেঞ্জ সামনে আসবে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত হয়েছে ২০২৬ সালেই বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ করা হবে। এ জন্য যে চ্যালেঞ্জগুলো আসবে তা মোকাবিলা করার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এটি বাংলাদেশের মর্যাদাও আরও বৃদ্ধি পাবে।

বিজ্ঞাপন

এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার দিন ঠিক আছে ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর। বিষয়টি আরও পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করছিল অন্তর্বর্তী সরকার। গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টার নতুন বিশেষ সহকারী (অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে) আনিসুজ্জামান চৌধুরী এক ব্রিফিংয়ে এই চিন্তা-ভাবনার কথা বলেছিলেন।

ছয়টি সংস্কার কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক সংলাপের দরকার নেই বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব। এটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই বাস্তবায়ন করতে পারে। এ বিষয়ে ৩০ পৃষ্ঠার একটি কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়গুলো তাদের মতো করে এগুলো বাস্তবায়ন করবে।

শফিকুল আলম বলেন ছয়টি সংস্কার কমিশন (সংবিধান, বিচার বিভাগ, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন) অনেকগুলো সুপারিশ জমা দিয়েছে। এর মধ্যে কিছু সুপারিশ আছে যেগুলো বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক সংলাপের দরকার নেই। এটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই বাস্তবায়ন করতে পারে। এসব প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের জন্য টাকার তেমন সংশ্লেষ নেই। সেই সিদ্ধান্ত যাতে দ্রুত নেওয়া যায় সে জন্য প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন। এ বিষয়ে ৩০ পৃষ্ঠার একটি কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে। এসব সিদ্ধান্তের প্রতিটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হবে এবং তারা তাদের মতো করে এগুলো বাস্তবায়ন করবে। এসিদ্ধান্ত সব মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে বলেও জানান প্রেস সচিব।

প্রেস সচিব বলেন, বৈরাচারের সময় ৫৬০টি মডেল মসজিদ করেছিল। এতে প্রায় এক বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছিল। এতে অনেক অনিয়মের কথা উঠেছে। দুর্নীতি না হলে অর্ধেক খরচেই এ মসজিদ করা যেত। এসব অভিযোগ তদন্ত করতে ধর্ম মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে।

শূন্য পদে নিয়োগে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান প্রেস সচিব। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা আজ মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে সরকারি দপ্তরে দ্রুত জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আগামী উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জানাবেন কী পরিমাণ নিয়োগ করা যেতে পারে সে বিষয়ে জানাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব বলেন,প্রধান উপদেষ্টা ২৬ মার্চ চার দিনের সফরে চীনে যাচ্ছেন। তাঁরা আশা করছেন সেখানে সম্মেলনে যোগদান এবং অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।

গ্রামীণ কৃষকদের বীমার আওতায় আনার জন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) সরকারকে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে দেশের কৃষি উন্নতির জন্য ৪ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়া হবে।

নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব। এ বিষয়ে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভারতের মধ্যে ইউএনে স্বাক্ষর করতে হবে, এডিবি সহায়তা করবে। শীতকালে বাংলাদেশ নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির চিন্তাভাবনা করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শাহবাগ এলাকায় সভা, সমাবেশ, গণজমায়েত নিষিদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ইউএন মহাসচিব আসছেন, এটা আমাদের জন্য সম্মানের বিষয়। এটা গুরুত্বপূর্ণ সফর।তার সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলাপ হবে, রোহিঙ্গাদের সহমর্মিতা প্রকাশ করবেন, রোহিঙ্গা সহায়তা কমানো হয়েছে, এ নিয়ে কথা হবে। এ কারণে জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীর, প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত